মহাভারত:স্বর্গারোহণপর্ব-০০১-০০৫

০১. পাণ্ডবগণের মেঘনাদ পর্ব্বতে আরোহণ
বলিলেন জন্মেজয় পিতামহগণ।
কোন্ পথে স্বর্গেতে করেন আরোহণ।।
কোন্ কোন্ পর্ব্বতে পড়িল কোন্ বীর।
স্বশরীরে কেমনে গেলেন যুধিষ্ঠির।।
বলেন বৈশম্পায়ন শুন জন্মেজয়।
ধৌম্যেরে বিদায় দিয়া পাণ্ডুর তনয়।।
লোভ মোহ কাম ক্রোধ ক্ষান্ত করি মন।
হইলেন একান্তে গোবিন্দ-পরায়ণ।।
পুণ্য ভাগীরথী জলে করি স্নান দান।
সূর্য্যে অর্ঘ্য দিলেন হইয়া সাবধান।।
গঙ্গা মৃত্তিকায় অঙ্গ করিয়া ভূষিত।
শুক্লবস্ত্র পরিধান উত্তরী সহিত।।
হরি স্মরি করিলেন গঙ্গাজল পান।
শুচি হৈয়া স্বর্গপথে করেন প্রয়াণ।।
বহু বন পার হৈয়া অনেক পর্ব্বত।
দিবানিশি যান হরি চিন্তি অবিরত।।
কত শত মুনি ঋষি দেখি নানা স্থানে।
মেঘনাদ পর্ব্বতে গেলেন কত দিনে।।
পরম সুন্দর গিরি সুরপুরী সম।
অনেক তপস্বী ঋষি মুনির আশ্রম।।
পর্ব্বতে উঠিয়া রাজা দেখি জম্বুদ্বীপ।
ভয়ঙ্কর নদ নদী দেখেন সমীপ।।
অনেক তপস্বী ঋষি আছে গিরিবরে।
পর্ব্বত গহবরে কেহ বৃক্ষের কোটরে।।
তাম্রজটা গলে পাটা তেজে গ্রহরাজ।
তপ জপ সাধে নিত্য আপনার কায।।
মেঘবর্ণ মেঘনাদ গিরি মনোহর।
দ্বিতীয় সুমেরু সম সুন্দর শিখর।।
অতিশয় উজ্জ্বল পর্ব্বত সুশোভন।
দানব ঈশ্বর নাম বৈসে পঞ্চানন।।
দানব নৃপতি দেশে দানব রক্ষক।
পঞ্চজনে দেখে যেন জ্বলন্ত পাবক।।
মনুষ্য আইল দেশে এ সব দেখিয়া।
রাজার সাক্ষাতে সবে জানাইল গিয়া।।
পঞ্চজন নর আসে সঙ্গে এক নারী।
তব যোগ্যা হয় রাজা পরম সুন্দরী।।
আইসে লইতে রাজ্য হেন লয় চিতে।
শুনি মেঘনাদ দৈত্য সাজিল ত্বরিতে।।
বাহিনী সহিত সাজি আইল বাহিরে।
তিন লক্ষ কিরাত ধনুক যুড়ি তীরে।।
দানবের রূপ যেন কন্দর্প আকার।
নীলবর্ণে সাজিয়া করিল অন্ধকার।।
যেই পথে পঞ্চ ভাই আইসে পাণ্ডব।
সেই পথে আগুলিয়া রহিল দানব।।
অন্ধকার করিলেক বাণ বরিষণে।
দেবতা বরিষে যেন ‍আষাঢ় শ্রাবণে।।
নানা বাণবৃষ্টি করে প্রচণ্ড কিরাত।
পবন রুধির নাহি দেখি দীননাথ।।
মহাসিংহনাদ করে শব্দ বিপরীত।
দেখিয়া পাণ্ডবগণ হইল বিস্মিত।।
মেঘনাদ দৈত্য জিজ্ঞাসিল যুধিষ্ঠিরে।
কে তোমরা পঞ্চজন, যাবে কোথাকারে।।
যুধিষ্ঠির বলিলেন দানব প্রধান।
চন্দ্রবংশ সমুদ্ভব পাণ্ডুর সন্তান।।
ভ্রাতৃভেদে মম বংশ হইল সংহার।
অতএব স্বর্গপথে করি অগ্রসর।।
আশীর্ব্বাদ কর রাজা তুমি পুণ্যবান।
তোমার প্রসাদে দেখি প্রভু ভগবান।।
তবে মেঘনাদ বলে শুন যুধিষ্ঠির।
যুদ্ধ কর পঞ্চভাই না হও অস্থির।।
যুদ্ধ নাহি দিয়া যদি করিবা গমন।
যাইতে নারিবা স্বর্গে শুনহ রাজন।।
আমার সহিত যুদ্ধে যদি পাও প্রাণ।
তবে স্বর্গপুরে তুমি করহ প্রয়াণ।।
পৃথিবীতে শুনিয়াছি সোমবংশ হতে।
নিঃক্ষত্রা হইল ক্ষিতি ভীমার্জ্জুন হাতে।।
তিন কোটি কিরাত দানব তিনকোটি।
ভীমার্জ্জুন কর দেখি যুদ্ধ পরিপাটী।।
দানবের বচনেতে হল মনে দুঃখ।
পঞ্চ ভাই যান, করি উত্তরেতে মুখ।।
দেখিল পাণ্ডবগণ করিল প্রয়াণ।
কুপিয়া দানব হল অগ্নির সমান।।
হাতে অস্ত্র করিয়া বেড়ায় চতুর্ভিত।
দেখিয়া দ্রৌপদী দেবা হৈল চমকিত।।
মেঘনাদ দৈত্য বলে যাক পঞ্চ ভাই।
ইহা সবাকার ভার্য্যা আন মম ঠাঁই।।
এত শুনি ধর্ম্মরাজ কিছু না বলিল।
দ্রৌপদীরে দৈত্যগণ ধরিয়া লইল।।
দেখি বৃকোদর ধর্ম্মে বলে ডাক দিয়া।
দ্রৌপদীরে দৈত্যগণ লইল ধরিয়া।।
শুনিয়া চাহেন রাজা পাঞ্চালীর ভিতে।
ক্রুদ্ধ হৈল বৃকোদর নারিল সহিতে।।
জ্বলন্ত অনল যেন ঘৃতযোগে বাড়ে।
অশেষ প্রকারে দৈত্যগণে গালি পাড়ে।।
গদা নাহি শালবৃক্ষ দেখি বিদ্যমান।
উপাড়িল বৃক্ষবর দিয়া এক টান।।
নাড়া দিয়া পাতা ঝাড়ি হাতে নিল ডাল।
ক্রোধ করি ধায় বীর ক্রুদ্ধ যেন কাল।।
প্রহার করয়ে বৃক্ষ, ডাকে হান হান।
দেখি মেঘনাদ দৈত্য হল কম্পমান।।
ভীম বলে শুনরে কিরাত দৈত্যগণ।
দ্রৌপদীরে ছাড়, যদি পাইবে জীবন।।
ইহা বলি প্রহারিল দৈত্যের উপর।
অসংখ্য কিরাত দৈত্য গেল যমঘর।।
অবশেষে পলাইল লইয়া জীবন।
মস্তক ভাঙ্গিল কার ভাঙ্গিল দশন।।
দেখি মেঘনাদ বলে মনে ভয় পেয়ে।
তুমি রাজ্য কর হেথা নরপতি হয়ে।।
প্রাণ রক্ষা কর, হের লহ তব নারী।
এত বলি দৈত্যপতি পরিহার করি।।
দেখি চিত্তে ক্ষমা দিল বীর বৃকোদর।
দ্রৌপদীকে লয়ে গেল ধর্ম্মের গোচর।।
তুষ্ট হয়ে ধর্ম্মরাজ ভীমে দেন কোল।
স্বর্গপথে যান রাজা মুখে হরিবোল।।
মহাভারতের কথা অমৃত সমান।
কাশীদাস দেব কহে শুনে পুণ্যবান।।
০২. পাণ্ডবগণের কেদার পর্ব্বতারোহন
মুনি বলে শুন পরীক্ষিতের নন্দন।
চলেন উত্তরমুখে পাণ্ডুপুত্রগণ।।
দানব ঈশ্বর শিব রচিত সুবর্ণে।
নানা ধাতু বিদ্যমান শোভে প্রতি বর্ণে।।
মস্তকে শোভিত মণি মুকুতার পাঁতি।
অন্ধকারে দীপ্ত করে যেন দিনপতি।।
দিব্য সরোবর তথা সুবাসিত জল।
হংস চক্রবাক শোভে প্রফুল্ল কমল।।
তাহা দেখি পঞ্চভাই জলেতে নামিয়া।
করেন তর্পণ স্নান পিতৃ উদ্দেশিয়া।।
স্নান করি কুণ্ড হতে উঠি ছয়জন।
দানব ঈশ্বরে আসি করিল পূজন।।
কেহ স্তব করে কেহ শিব সেবা করে।
অষ্টাঙ্গ প্রণাম কেহ করে লুঠি শিরে।।
ভক্তিভাবে ভোলানাথে মাগিলেন বর।
তোমার প্রসাদে যেন দেখি দামোদর।।
এত বলি প্রণমিয়া করি জলপান।
উত্তরমুখেতে পুনঃ করিল প্রয়াণ।।
কতদূর যাইতে দেখেন সরোবর।
জল দেখি তুষ্ট হন পঞ্চ সহোদর।।
জল পান করি স্নিগ্ধ হন পঞ্চজন।
ত্যজিলেন মেঘনাদ পর্ব্বতের বন।।
কেদার পর্ব্বতে তবে করি আরোহণ।
বড় সুখ পাইলেন দেখি উপবন।।
কেদার পর্ব্বত সেই অতি সুশোভন।
যাহাতে শুনেন কর্ণে স্বর্গের বাজন।।
পর্ব্বতে উঠিয়া ভাবিছেন হৃষীকেশ।
পৃথিবী চাহিয়া রাজা না পান উদ্দেশ।।
অতিশয় উচ্চ গিরি বড় ভয়ঙ্কর।
লক্ষ গজ পরিমাণ বিস্তার উপর।।
পর্ব্বতের চারি পাশে শোভে নানা বৃক্ষ।
কিন্নর গন্ধর্ব্ব কন্যা আছে লক্ষ লক্ষ।।
জিনিয়া সাবিত্রী সতী সুন্দর কামিনী।
ভ্রমর গুঞ্জরে যেন প্রফুল্ল পদ্মিনী।।
পাণ্ডবের রূপ দেখি মোহে নারীগণ।
কহিতে লাগিল কিছু মধুর বচন।।
কোথা হৈতে আগমন যাবে কোথাকারে।
কিবা নাম কোন্ বর্ণ কহিবা আমারে।।
ধর্ম্ম বলিলেন চন্দ্র বংশেতে উৎপত্তি।
যুধিষ্ঠির নাম মম পাণ্ডুর সন্তুতি।।
জ্ঞাতিবধ পাতকে অস্থির মম মন।
স্বর্গে যাব কৃষ্ণ আজ্ঞা দিলেন যেমন।।
অতএব রাজ্য ছাড়ি যাই স্বর্গপুরে।
এই পরিচয় কন্যে জানাই তোমারে।।
এত শুনি পুনরপি বলে কন্যাগণ।
পৃথিবী ছাড়িয়া যদি আইলে রাজন।।
কি হেতু পাইয়া দুঃখ যাহ স্বর্গপুর।
এই দেশে থাক হৈয়া রাজ্যের ‍ঠাকুর।।
দেখহ আমার পুরী পরম সুন্দর।
শোক রোগ ব্যাধি জরা নাহি নৃপবর।।
চন্দ্র সূর্য্য জিনি শোভা আবাস উদ্যান।
কিন্নর নগরে রাজা হও মতিমান।।
তিন লক্ষ কন্যা মোরা হব তব দাসী।
করিব চামর সেবা চারি পাশে বসি।।
এত শুনি ধর্ম্মরাজ বলেন তখন।
কৃষ্ণের আজ্ঞায় যাব অমর ভুবন।।
দ্বাপর হইল শেষ কলি আগমন।
যদুবংশ লইয়া গেলেন নারায়ণ।।
তাঁর দরশন বিনা রহিতে না পারি।
অতএব স্বর্গে যাব দেখিতে মুরারি।।
করিলাম সঙ্কল্প যাবৎ প্রাণ থাকে।
না করিব রাজ্যভোগ যাব স্বর্গলোকে।।
শুনি কন্যাগণ পুনঃ কহে যুধিষ্ঠিরে।
কেমনে যাইবে স্বর্গে মানব শরীরে।।
মনুষ্য দুর্গম স্বর্গ শুন নরপতি।
শরীর ত্যজিয়া সে গেলেন যদুপতি।।
এই দেশে গঙ্গাতীরে থাকি কত কাল।
দেবদেহ পেয়ে স্বর্গে যাবে মহীপাল।।
আমাদের সঙ্গে থাক হাস্য রঙ্গ রসে।
কতক দিবস কাল কাট অনায়াসে।।
রাজা বলিলেন যে তোমরা মাতৃসম।
তোমা সবাকার মায়া মনেতে দুর্গম।।
নিষ্ঠূর শুনিয়া নিবর্ত্তিল কন্যাগণ।
চলেন উত্তরমুখে পাণ্ডুর নন্দন।।
পর্ব্বত দেখেন বীর অতি মনোহর।
বিরাজিত অর্দ্ধ অঙ্গ শঙ্করী শঙ্কর।।
নানা রত্ন বিভূষিতা আসন গম্ভীরা।
অন্ধকার আলো করে যেন চন্দ্র তারা।।
তাহে বিরচিত কুণ্ড ত্রিভুবন সার।
স্ফটিক সমান শুভ্র চন্দ্রের আকার।।
কুণ্ডে নামি স্নানদান করি পঞ্চজন।
দুই কুল কৌরবের করেন তর্পণ।।
স্নান করি তিনবার প্রদক্ষিণ কৈল।
মণিময় মহেশে দেখি তুষ্ট হইল।।
বিমল ঈশ্বর শিব সাক্ষাতে দেখিয়া।
প্রণাম করেন সবে অঙ্গ লোটাইয়া।।
কৃমী কীট পশু পক্ষী যদি তথা মরে।
রুদ্ররূপ ধরি তারা যায় রুদ্রপুরে।।
এ সকল তত্ত্ব শুনি লোকের বদনে।
পুনঃ পুনঃ প্রণাম করিল ছয়জনে।।
ভক্তিভাবে ভোলানাথে মাগিলেন বর।
ভূতনাথ ভূতাধীশ তুমি ভূতেশ্বর।।
কৃত্তিবাস কালীকান্ত দেহ এই বর।
তোমার প্রসাদে যেন দেখি দামোদর।।
বর মাগি ছয়জন চলে তথা হৈতে।
পর্ব্বত কেদার পার হল মহা শীতে।।
যাইতে উত্তরমুখে পাণ্ডুর নন্দন।
দুই জলাশয় তাহে দেখে সুশোভন।।
ধর্ম্মের নির্ম্মাণ তাতে প্রফুল্ল কমল।
হংস চক্রবাক ক্রীড়া করয়ে সকল।।
অপ্সরী কিন্নরী তথা নানা ক্রীড়া করে।
মুনিগণ তপ করে পর্ব্বত উপরে।।
খেলয়ে মর্কটগণ পেয়ে দিব্য শাখী।
বিবিধ বিধানে সুখ করে পশু পাকী।।
কতক্ষণ বিশ্রাম করিয়া তার তীরে।
জল হেতু ভীমেরে পাঠান সরোবরে।।
ভারত-পঙ্কজ রবি মহামুনি ব্যাস।
তাঁহার আশিসে রচে কাশীরাম দাস।।
০৩. ধর্ম্মরাজ কর্ত্তৃক ছলনা
মুনি বলে শুনহ নৃপতি জন্মেজয়।
উত্তরমুখেতে যান পাণ্ডুর তনয়।।
যুধিষ্ঠির প্রভৃতি আইসে স্বর্গপথে।
সমাচার জানি ধর্ম্ম আসিল ছলিতে।।
জলচর পক্ষী হৈয়া রন সরোবরে।
বসিলেন যুধিষ্ঠির পর্ব্বত উপরে।।
পথশ্রমেতৃষ্ণাযুক্ত রাজা যুধিষ্ঠির।
জল হেতু চলিলেন বৃকোদর বীর।।
আজ্ঞা পেয়ে সরোবরে গেল বৃকোদর।
দেখিয়া ডাকিয়া বলে পক্ষী জলচর।।
কিবা বার্ত্তা কি আশ্চর্য্য কিবা সারপথ।
কেবা সদা সুখে থাকে কহ চারি মত।।
পক্ষীর বচন ভীম না শুনিল কাণে।
শিলারূপ হইলেন জল পরশনে।।
এইরূপে অর্জ্জুন নকুল সহদেবে।
প্রশ্ন না কহিতে পারি শিলা হয় সবে।।
অবশেষে আপনি চলেন ধর্ম্ম ভূপ।
তারে ধর্ম্ম জিজ্ঞাসেন মায়া পক্ষীরূপ।।
কি বার্ত্তা আশ্চর্য্য পথ কেবা সদা সুখী।
জল খাবে পাছে অগ্রে কহ শুনি দেখি।।
ধর্ম্ম বলিলেন এই বার্ত্তা আমি জানি।
মাস বর্ষ রূপে কাল পাক করে প্রাণী।।
দিনে দিনে যমালয়ে যায় জীবগণ।
শেষের জীবন আশা আশ্চর্য্য লক্ষণ।।
শ্রুতি স্মৃতি আগম অশেষ ধর্ম্মপথ।
সেই পথ সার যেই সজ্জনের মত।।
ফল মূল শাক যেই খায় দিবাশেষে।
অপ্রবাসী অঋণী সে সদা সুখে বৈসে।।
এই সত্য চারি আমি জানি মহাশয়।
শুনিয়া সন্তুষ্ট ধর্ম্ম দেন পরিচয়।।
চমৎকার হৈয়া রাজা পড়িলেন পায়।
ভ্রাতৃগণে উদ্ধারিয়া আনন্দিত কায়।।
আশীর্ব্বাদ করি ধর্ম্ম বলিলেন তবে।
সর্ব্ব ধর্ম্ম শ্রেষ্ঠ তুমি একা স্বর্গে যাবে।।
আর সব জন পথে পড়িবে নিশ্চয়।
এত বলি ধর্ম্ম চলিলেন নিজালয়।।
মহাভারতের কথা স্বরগ-সোপান।
পাপিগণ শ্রবণেতে লভে ভবে ত্রাণ।।
০৪. মেঘবর্ণ পর্ব্বতে পাণ্ডবগণের গমণ
ও ভীমের হস্তে ভীষণা রাক্ষসীর মৃত্যু।
মুনি বলে শুনহ নৃপতি জন্মেজয়।
গেলেন উত্তরমুখে পাণ্ডুর তনয়।।
মেঘবর্ণ নামে গিরি অতি ভয়ঙ্কর।
অরোহেণ পাণ্ডুপুত্র তাহার উপর।।
ছত্রিশ যোজন সেই পর্ব্বত প্রসর।
অতি অনুপম যেন সুমেরু শিখর।।
তথায় থাকিয়া মেঘ বর্যে চারি মাস।
নানা শব্দে কোলাহল দেখিলা তরাস।।
সেইত পর্ব্বত রক্ষা করে দেবগণ।
পূর্ণচন্দ্র সদা তথা করে সুশোভন।।
মেঘগণ আছে তথা অতি ভয়ঙ্কর।
দিবা রাত্র নাহি জানি পর্ব্বত উপর।।
পঞ্চনারী বৈসে সুখে সুবর্ণের পুরে।
কিন্নরী জিনিয়া শোভা করে অলঙ্কারে।।
যুধিষ্ঠিরে দেখি বলে নারী পঞ্চজন।
কোথা হৈতে আসিয়াছ তুমি বিচক্ষণ।।
মনুষ্যের শ্রেষ্ঠ তুমি বুঝিনু কারণে।
বহু দুঃখ পাইয়াছ হেন লয় মনে।।
নয় কোষী অন্তঃ লৈয়া থাক এই ভূমি।
আপন ইচ্ছায় স্বামী করিলাম আমি।।
আমার নগর দেখ অতি রম্য পুরী।
তুমি স্বামী হইলে সেবিব কোটি নারী।।
দ্বিতীয় স্বর্গের সুখ পাইবে হেথায়।
রাজ্য কর যত দিন চন্দ্র সূর্য্য রয়।।
কন্যার বচন শুনি ধর্ম্মের তনয়।
যোড়হাতে কহিছেন অতি সবিনয়।।
সঙ্কল্প করিনু আমি সবার সাক্ষাতে।
স্বর্গপুরী যাইব দেখিব জগন্নাথে।।
কলি আগমন হয় ইহার কারণ।
স্বর্গে যাই অনুজ্ঞা দিলেন নারায়ণ।।
দয়া করি মোরে বর দেহ কন্যাগণ।
স্বর্গে গিয়া দেখি যেন বিষ্ণুর চরণ।।
এত বলি তথা হৈতে করিয়া গমন।
উত্তরমুখেতে যান পাণ্ডুর নন্দন।।
হেনকালে সেই পথে ভাষণী রাক্ষসী।
মুখ মেলি পর্ব্বত শিখরে আছে বসি।।
স্বর্গ মর্ত্ত্য যুড়ি কায় অতি ভয়ঙ্কর।
বদন দেখিয়া ভয় করে দিবাকর।।
বিশাল রাক্ষসী পথ আগুলিয়া রহে।
বিপুল মনুষ্য দেখি খাইবারে চাহে।।
ধর্ম্ম বলিলেন, দেখ ভাই বৃকোদর।
মুখ মেলি খেতে চায় দুষ্ট নিশাচর।।
ভয় হয় মনে, দেখি মূর্ত্তি ভয়ঙ্কর।
চারি ক্রোশ পথ যুড়ি দীর্ঘ কলেবর।।
কিরূপে যাইব পথে করিল আটক।
দীপ্তমান তেজ যেন জলন্ত পাবক।।
দ্রৌপদীর ভয় হৈল রাক্ষসী দেখিয়া।
ভয়েতে অর্জ্জুন বীরে ধরিল চাপিয়া।।
শঙ্খপাণি নামে মুনি বৈসে সেই বনে।
যুধিষ্ঠির জিজ্ঞাসা করেন তাঁর স্থানে।।
কি হেতু রাক্ষসী বাস করে স্বর্গপথে।
সর্ব্বকালে আছে, কিম্বা এল কোথা হতে।।
শুনি মুনি বলিলেন বচন গভীর।
রাক্ষসীর বিবরণ শুন যুধিষ্ঠির।।
চিত্রা নামে স্বর্গপুরে আছিল অপ্সরী।
দুর্ব্বাসা মুনির শাপে হৈল নিশাচরী।।
ক্ষুধায় না থাকে এই মায়াবী রাক্ষসী।
যারে পায় তারে খায় কিবা যোগী ‍ঋষি।।
তপস্বী সন্ন্যাসী মুনি মৃগ পক্ষী নরে।
পাইলে আনন্দ মনে সবে গ্রাস করে।।
ক্ষণেকে অপ্সরী হয়ে সুরে মন মোহে।
নবরূপ পক্ষীরূপ ইচ্ছা হয় যাহে।।
বকাসুর নামে ছিল রাক্ষস দুরন্ত।
তাহার ভগিনী এই শুনহ তদন্ত।।
শক্তি যদি থাকে, দুষ্টে করহ সংহার।
নহে ধরি নিশাচরী করিবে আহার।।
এত শুনি বৃকোদর হৈল আগুয়ান।
দম্ভ করি কহিল রাক্ষসী বিদ্যমান।।
বকাসুর‍ নামে যেই তোর জ্যেষ্ঠ ভাই।
তারে ‍মারিয়াছি আমি তোরে না ডরাই।।
এত বলি মহাক্রোধে বীর বৃকোদর।
পর্ব্বতের শৃঙ্গ দৃই ভাঙ্গিল সত্বর।।
টান দিয়া একখান মারে রাক্ষসীরে।
মুখ মেলি রাক্ষসী গিলিল কোপভরে।।
দেখি কোপে আর শৃঙ্গ মারে বৃকোদর।
লুফিয়া ‍রাক্ষসী ধরে পর্ব্বত শিখর।।
রক্তাক্ষি রাক্ষসী কোপে চাহে চারিপাশে।
বড় বৃক্ষ ভাঙ্গে তার নাসার নিশ্বাসে।।
ভীমের সাক্ষাতে শব্দ করে ভয়ঙ্কর।
দেবাসুর কম্পমান সিন্ধু ধরাধর।।
রাক্ষসীর ঘোর শব্দ ঘন হুহুঙ্কার।
কোপে থর থর অঙ্গ পবনকুমার।।
উপাড়িল সেই বৃক্ষ দিয়া এক টান।
পদভরে পর্ব্বত হইল কম্পবান।।
ভীম বলে নিশাচরী দেখ এই বৃক্ষ।
বজ্রসম প্রহারে ভাঙ্গিব তোর বক্ষ।।
এত বলি হাতে গাছ আসে বায়ুবেগে।
রাক্ষসী কাটিয়া পাড়ে দশনের আগে।।
না মরে রাক্ষসী সেই নাহি ছাড়ে পথ।
দেখি ধর্ম্ম চিন্তিত হলেন মনোগত।।
বীর বৃকোদর পুনঃ গোবিন্দ ভাবিয়া।
সুররাজ পর্ব্বত আনিল টান দিয়া।।
ভীম বলে নিশাচরী শুন রে ভাষণা।
মনে না করিহ আর বাঁচিতে কামনা।।
মুনি ঋষি খেয়ে তোর বেড়েছে বাসনা।
আজ যুদ্ধে দেখাইব যমের যাতনা।।
এত বলি দুই হাতে পর্ব্বত ধরিয়া।
রাক্ষসীরে প্রহারিল হুঙ্কার ছাড়িয়া।।
আইসে পর্ব্বত দেখি গগনের পথে।
লাফ দিয়া রাক্ষসী ধরিল বাম হাতে।।
বলবতী নিশাচরী শঙ্করের বরে।
ফেলাইয়া দিল গিরি দক্ষিণ সাগরে।।
দেখিয়া বিস্ময়াপন্ন হৈল ভীমবীর।
কি হবে উপায় চিন্তিলেন যুধিষ্ঠির।।
তবে বৃকোদর বীর বিষন্ন বদনে।
ব্যাকুল হইল বীর রাক্ষসীর রণে।।
নাহি মরে নিশাচরী নাহি ছাড়ে পথ।
মুখ মেলি গ্রাসে যেন আদিত্যের রথ।।
মনে ভাবি ভীমসেন হইল বিস্ময়।
জনক পবনে চিন্তে সঙ্কট সময়।।
পুত্রে পার কর পথে পিতা প্রভঞ্জন।
তোমার প্রসাদে তবে দেখি নারায়ণ।।
এত বলি বৃকোদর ডাকিল পবনে।
ডাক দিয়া পবন বলিল ভীমসেনে।।
শুন পুত্র বৃকোদর না হও ভাবিত।
কি কার্য্য তোমার রণে করিব বিহিত।।
জোড়হাতে বলে ভীম বন্দিয়া চরণ।
রাক্ষসী মারিলে হয় স্বর্গ আরোহণ।।
এই কর্ম্ম কর পিতা হর তার বল।
ঘুষিবে তোমার যশ অবনীমণ্ডল।।
এত শুনি হাসিয়া বলিলেন পবন।
তব তেজঃ হৌক পুত্র আমার সমান।।
বাহুবলে রাক্ষসীরে করহ সংহার।
বহু সুখে সুরপরে কর আগুসার।।
বৃক্ষ লয়ে বৃকোদর মারে মালসাট।
চালাইয়া দিল বৃক্ষ নাসিকার বাট।।
রাক্ষসী নিস্তেজ হল ভীমের প্রহারে।
লোটাইয়া পড়ে ভূমে ছটফট করে।।
দেখিয়া হইল ভীম প্রফুল্ল অন্তর।
লম্ফ দিয়া উঠিলেন বুকের উপর।।
নাসাপথে উঠে বৃক্ষ ভেদি তার মুণ্ড।
হস্ত পদ চিরিয়া করিল খণ্ড খণ্ড।।
আকর্ষণ করি করে উপাড়িল স্তন।
বজ্র কিলে ভাঙ্গিলেন দুপাটি দশন।।
মস্তক ঢুকায় তার পেটের ভিতরে।
গলা চাপি ধরিয়া বধিল ‍রাক্ষসীরে।।
মাংসপিণ্ড সম কৈল কচ্ছপের হেন।
পূর্ব্বেতে কীচক বীর বিনাশিল যেন।।
কুষ্মাণ্ড সমান কৈল রাক্ষসীর কায়।
মহাক্রোধে পদাঘাত মরিলেক তায়।।
ঘোর শব্দ করিয়া মরিল নিশাচরী।
আনন্দিত বৃকোদর বিক্রমে কেশরী।।
অন্তরীক্ষে তুলে তারে বৃক্ষে জড়াইয়া।
ঘন পাক দিয়া ফেলে ভূমে আছাড়িয়া।।
দেবাসুর নাগ নর দেখি বিদ্যমান।
গন্ধমাদনেরে যেন লুফে হনুমান।।
অন্তরীক্ষে শত পাক দিয়া রাক্ষসীরে।
ফেলাইয়া দিল তারে দক্ষিণ সাগরে।।
ভীষণা রাক্ষসী মারি ভীম মহাবীর।
শীঘ্রগতি গেল যথা রাজা যুধিষ্ঠির।।
(মিসিং)
ভারত পঙ্কজরবি মহামুনি ব্যাস।
পাঁচালী প্রবন্ধে বিরচিল কাশীদাস।।
০৫. ভদ্রকালী পর্ব্বতে পাণ্ডবদের গমন
ও হরি পর্ব্বতে দ্রৌপদীর দেহত্যাগ
মুনি বলে শুন পরীক্ষিতের নন্দন।
চলিল উত্তরমুখে ভাই পঞ্চজন।।
দেখিল অপূর্ব্ব এক পর্ব্বত উপর।
অতি অপরূপ শিবলিঙ্গ মনোহর।।
চন্দ্র সূর্য্য স্ফটিক জিনিয়া শুভ্রকায়।
স্তব করিলেন রাজা মহেশের পায়।।
তোমার প্রসাদে করি স্বর্গ আরোহণ।
এত বলি প্রণমিয়া করেন গমন।।
বহু কষ্টে ‍রাক্ষস আশ্রম এড়াইয়া।
ভদ্রকালী নামে গিরি আরোহেণ গিয়া।।
দেখেন পর্ব্বতে উঠি পাণ্ডুর নন্দন।
সপ্তরথে সূর্য্য আদি গ্রহদেবগণ।।
তাহা দেখি ছয় জন হরিষ অন্তরে।
ভদ্রকালী দেবী দেখিলেন গিরিপরে।।
প্রনাম করিয়া বর মাগেন যতনে।
এই বর দাও মাতা মাগি তব স্থানে।।
যুধিষ্ঠির কন দেবী কর মোরে দয়া।
কলিকালে জাগ্রতা থাকিবা মহামায়া।।
রাজা প্রজা অন্যায় যে করে অবিচারে।
খণ্ড খণ্ড হবে তারা তোমার খর্পরে।।
অমর নগর সম সুন্দর শোভন।
বিদ্যাধরি অপ্সরী জিনিয়া কন্যাগণ।।
লীলাবতী নামে কন্যা ভূপতি তাহাতে।
পাটে অধিকার করে পুরুস বর্জ্জিতে।।
পঞ্চ ভাই পাণ্ডবে দেখিয়া নিজ পুরে।
অগ্র হয়ে কহিলেন সবার গোচরে।।
রাজ্য নিতে এল কিবা কোন নরপতি।
আমার পর্ব্বতে এল অপরূপ গতি।।
সর্ব্বকাল এই রাজ্য মম অধিকার।
যে হুউক সমরে করিব মহামার।।
এত বলি হাতে অস্ত্র অনুক লইয়া।
যুধিষ্ঠিরে রাখিল পর্ব্বতে বসাইয়া।।
কোন নারী জিজ্ঞাসা করলি পাণ্ডবেরে।
কেবা তুমি কোথা যাবে কেন এই পুরে।।
রাজা বলে কন্যাগণ না হও অস্থির।
পৃথিবীর রাজা আমি নাম যুধিষ্ঠির।।
কি কারণে তোমা সবে ভাব অন্য কথা।
রাজ্য দেশ লইতে না আসি আমি হেথা।।
কলি আগমন হবে পৃথিবী ভুবনে।
স্বর্গে আরোহণ মোরা করি সে কারণে।।
এত শুনি কন্যাগণ চলিল ধাইয়া।
লীলাবতী রাণীকে সংবাদ দিল গিয়া।।
শুনি লীলাবতী কন্যা ফেলে ধনুর্ব্বাণ।
লক্ষ নারী সাজ করে বিবিধ বিধান।।
নানা অলঙ্কার অঙ্গে ‍সাজন করিয়া।
যুধিষ্ঠির অগ্রে কহে হাসিয়া হাসিয়া।।
জিতেন্দ্রিয় রাজা তুমি মহাপুণ্যবান।
অতএব এতদূরে করিলে প্রয়াণ।।
মম ভাগ্যে আসিয়াছ আমার নগর।
আমি দাসী হব তুমি হও রাজ্যেশ্বর।।
ভদ্রকালী পর্ব্বতেতে আমি অধিকারী।
হীরা মণি মাণিক্যে মণ্ডিত মম পুরী।।
যাবৎ থাকিবা ভদ্রকালীর পর্ব্বতে।
তাবৎ থাকিব রাজা তোমার সহিতে।।
জরা মৃত্যু ব্যাধি ভয় নাহি কোন পীড়া।
স্বর্গ হতে এ স্থানে আনন্দ পাবে বাড়া।।
যুধিষ্ঠির বলেন যে শুন লীলাবতী।
নিঃশত্রু করিয়া আমি ছাড়িলাম ক্ষিতি।।
কলি আগমনে আজ্ঞা দেন নারায়ণ।
রাজ্য ত্যজি কর গিয়া স্বর্গ আরোহণ।।
করেছি সঙ্কল্প আমি মর্ত্ত্যের ভিতর।
রাজ্য না করিব, যাব অমর নগর।।
অতএব ক্ষমা মোরে দাও কন্যাগণ।
সুরপুরী যাব আমি যথা নারায়ণ।।
যুধিষ্ঠির নৃপতির চরিত্র দেখিয়া।
পুনরপি কহে কন্যা ঈষৎ হাসিয়া।।
বুদ্ধি নাহি কিছু তব ধর্ম্মের নন্দন।
কি সুখ পাইবা স্বর্গে দেখি নারায়ণ।।
আমাদের সঙ্গে তুমি থাক নিরন্তর।
স্বর্গের অধিক ফল পাবে অতঃপর।।
যুধিষ্ঠির বলিলেন কৃষ্ণ সঙ্গ হৈতে।
অন্য সুখ নাহি ভাল লাগে মোর চিতে।।
শ্রীকৃষ্ণ বিচ্ছেদে মরি শুন কন্যাগণ।
অতএব যাব আমি অমর ভুবন।।
রাজার বিনয় বাক্য শুনি নারীগণ।
বাহুড়িয়া নিবর্ত্তিয়া গেল সর্ব্বজন।।
লীলাবতী কন্যা গেল পেয়ে মনোদুঃখ।
পঞ্চ ভাই চলিলেন উত্তরাভিমুখ।।
কত দূরে দেখিলেন পাণ্ডুর নন্দন।
ভদ্রেশ্বর নামে লিঙ্গ অতি সুশোভন।।
ত্রৈলোক্য বিখ্যাত শিব অতি মনোহর।
নানা রত্নে বিরচিত প্রবাল প্রস্তর।।
তাহা দেখি পাণ্ডবের হরষিত মন।
পঞ্চ ভাই করিলেন প্রণাম স্তবন।।
স্নানদান করি সবে ফল পুষ্প লৈয়া।
পূজা করি স্তব করে চৌদিক বেড়িয়া।।
বর মাগিলেন অতি মনের কৌতুকে।
করিলেন যাত্রা সবে উত্তরাভিমুখে।।
হরিনাম পর্ব্বতে করেন আরোহণ।
দেখেন পর্ব্বতে মণি মাণিক্য রতন।।
(মিসিং)
ঐরাবত নামে হস্তী ফিরে পালে পালে।
দেব যক্ষ মরে, অঙ্গ হিমেতে ভেদিলে।।
মহাহিমে শীত ভেদি যায় কত দূর।
পাছে পড়ি দ্রৌপদীর অঙ্গ হৈল চুর।।
বিষম দারুণ হিমে শীর্ণ কলেবর।
মুর্চ্ছিত হইয়া পড়ে পর্ব্বত উপর।।
অন্তকাল জানি দেবী চিন্তে নারায়ণ।
স্বামীগণ মুখ চাহি ত্যজিল জীবন।।
পাঞ্চালীর পতন পর্ব্বত হরিনামে।
অগ্রগামী রাজা না জানের কোন ক্রমে।।
পাছে বৃকোদর পার্থ দেখি বিপরীত।
ডাক দিয়া যুধিষ্ঠিরে বলেন ত্বরিত।।
পাঞ্চালী পড়িয়া পথে ত্যজিল শরীর।
শুনি তবে আকুল হৈলেন যুধিষ্ঠির।।
মহাভারতের কথা রচিলেন ব্যাস।
পাঁচালী প্রবন্ধে কহে কাশীরাম দাস।।

বেদ সম্পর্কে সামান্য ধারণা

শ্রীমদ্ভগবতগীতার সম্পূর্ণ শ্লোকের অর্থ

বিবিধ


মহাভারতের প্রধান প্রধান চরিত্র