মহাভারত:আদিপর্ব ১০৭-১১১

১০৭. দ্রুপদ রাজার নিকট মুনিগণের আগমনা
অন্তর্য্যামী সর্ব্বজ্ঞ সকল মুনিগণ।
পাণ্ডব বিবাহ হেতু কৈলা আগমন।।
শিষ্যসহ পরাশর মহা তপোবল।
জমদগ্নি জৈমিনি শ্রীঅসিত দেবল।।
কৌণ্ডমুনি মাণ্ডব্য ভার্গব জরদগব।
দুর্ব্বাসা লোমশ আঙ্গিরস তপোধন।।
শিষ্য ষষ্টি-সহস্রে আইল দ্বৈপায়ন।।
যতেক আইল মুনি লিখনে না যায়।
দ্বারী সব আসি দ্রুত দ্রুপদে জানায়।।
শুনিয়া দ্রুপদ-রাজা শীঘ্রগতি উঠি।
আগুসরি প্রণমিল ভূমে শির লুঠি।।
গললগ্নীকৃতবাসে করি সম্ভাষণ।
বসিবারে সবে দিল উত্তম আসন।।
পাদ্য-অর্ঘ্য ধূপ দীপ গন্ধে কৈল পূজা।
যোড়হাতে দাঁড়াইল পাঞ্চালের রাজা।।
আমার ভাগ্যের কথা কহনে না যায়।
সে কারণে মুনিগণ আইলা হেথায়।।
আছিল সন্দেহ এই বিবাহ কারণ।
বিধিদাতা সংসারে তোমরা সর্ব্বজন।।
যে বিধান কহিবা, করিব সেইমত।
বিচারিয়া সব কথা দেহ অভিমত।।
মুনিগণ বলে শুন ইহা কি কহিব।
পূর্ব্বে যে ধাতার সৃষ্ট তাহা কি ঘুচাব।।
কৃষ্ণার বিবাহ হেতু এই নিরূপণ।
ঘটিবে যে পঞ্চপতি বিধির লিখন।।
সুরভির শাপ আর পমুপতি-বরে।
পঞ্চপতি পাবে সতী কহিনু তোমারে।।
মুনিগণ-মুখে শুনি এতেক বচন।
মৌনী হৈয়া রহিলেন দ্রুপদ-রাজন।।
ধৃষ্টদ্যুন্ন বলে, এ ত নাহিক সংসারে।
লোকে যাহা নাহি, তাহা করি কি প্রকারে।।
এহেন করিতে কর্ম্ম লোকে উপহাস।
এমত নিন্দিত কর্ম্ম কহ কেন ভাষ।।
যুধিষ্ঠির বলিলেন, অন্য নাহি জানি।
মায়ের বচন যে অধিক বেদবাণী।।
মুনিগণমুখে শুনিয়াছি পূর্ব্ব বাণী।
জটিল ব্রাহ্মণ ছিল সর্ব্বশাস্ত্রজ্ঞানী।।
যত দ্বিজগণে তিনি করান পঠন।
সর্ব্বশাস্ত্র বেদাগম গ্রন্থ ব্যাকরণ।।
পড়াইয়া পিছে দেন এই উপদেশ।
জটিল ব্রাহ্মণ ছিল সর্ব্বশাস্ত্রজ্ঞানী।।
যতি দ্বিজগণে তিনি করান পঠন।
সর্ব্বশাস্ত্র বেদাগম গ্রন্থ ব্যাকরণ।।
পড়াইয়া পিছে দেন এই উপদেশ।
যত শাস্ত্র হৈতে শুন কহি যে বিশেষ।।
মাতার যে আজ্ঞা যত্নে করিবা পালন।
না করিবা দ্বিধা রহে বেদের বচন।।
লোক বেদ হৈতে গুরুশ্রেষ্ঠ আমি জানি।
সর্ব্বগুরু হৈতে শ্রেষ্ঠ জননীরে মানি।।
জননী আমারে আজ্ঞা দেন এই মত।
পঞ্চজনে বাঁটি লহ অন্য ভিক্ষা মত।।
ধর্ম্মাধর্ম্ম বলি তাহা কি খণ্ডিতে পারে।
অধর্ম্মেতে আছে ধর্ম্ম, ধর্ম্মে পাপ করে।।
অধর্ম্ম কর্ম্মেতে মম মন নাহি রয়।
এ কর্ম্ম করিতে মম চিত্তে বড় লয়।।
সে কারণে বুঝি এই ধর্ম্ম আচরণ।
বিশেষে খণ্ডিতে নারি মায়ের বচন।।
অনন্তরে বলিতে লাগিল বৃকোদর।
কার শক্তি লঙ্ঘিবেক ধর্ম্মের উত্তর।।
বেদশাস্ত্র লোক আমি সবার বাহির।
আমা সবাকার ধাতা কর্ত্তা যুধিষ্ঠির।।
আমরা না মানি শাস্ত্র কিম্বা অন্য জনে।
ধর্ম্ম-আজ্ঞা পালন করি যে প্রাণপণে।।
কে লঙ্ঘিবে, যে আজ্ঞা করেন যুধিষ্ঠির।
অনেক সহিনু এ পাঞ্চাল নৃপতির।।
পুনঃ পুনঃ ধর্ম্মবাক্য করিলে হেলন।
অন্যজন হৈলে আজি নিতাম জীবন।।
সম্বন্ধে শ্বশুর আনি গুরুমধ্যে গণি।
তেঁই মম ক্রোধেতে রহে তব জীবনী।।
লোকে বেদে যদি বলে, নহে ভীত মন।
আজি হৈতে সর্ব্বশাস্ত্র করহ লিখন।।
ধর্ম্মপুত্র যুধিষ্ঠির যে আজ্ঞা করিবে।
কারহার আছয়ে শক্তি কে তাহা দূষিবে।।
হেনকালে কুন্তী মুনি হইল বাহির।
কৃতাঞ্জলি বন্দে সব চরণ মুনির।।
ব্যাসের চরণে ধরি সকরুণে কয়।
আমারে নিস্তার কর, মিথ্যা বাক্যে ভয়।।
যা বলিল যুধিষ্ঠির, সেই সত্য কথা।
যেন মতে মম বাক্য না হয় অন্যথা।।
মুনি বলে, ত্যজ ভয়ষ না কর ক্রন্দন।
অলঙ্ঘ্য তোমার বাক্য নহিবে লঙ্ঘন।।
মহাভারতের কথা সুধার সাগর।
কাশীরাম দাস কহে, শুনে সাধু নর।।
১০৮. দ্রৌপদীর পঞ্চ স্বামী হইবার কারণ
ব্যাস বলে, পূর্ব্ব তত্ত্ব জান মুনিগণ।
শুনহ দ্রুপদ রাজা পূর্ব্ব বিবরণ।।
ক্রেতাযুগে দ্বিজকন্যা আছিল দ্রৌপদী।
পতিবাঞ্ছা করি শিব পূজে নিরবধি।।
রচিয়া মৃত্তিকা-লিঙ্গ নানা পুষ্প দিয়া।
ঘৃত মধু উপচার বাদ্য বাজাইয়া।।
অবশেষে প্রণমিয়া পড়ি ক্ষিতিতলে।
পতিং দেহি পতিং দেহি পঞ্চবার বলে।।
হেনমতে বহুকাল পূজয়ে মহেশ।
তুষ্ট হৈয়া বর তাহে দেন ব্যোমকেশ।।
পঞ্চস্বামী হবে তোর পরম সুন্দর।
শুনিয়া বিস্ময় মানি কহে যোড় কর।।
কেন হেন উপহাস কর শূলপাণি।
লোকে বেদে বহির্ভূত অপূর্ব্ব কাহিনী।।
শঙ্কর বলেন, কন্যে কি দোষ আমার।
স্বামীবর তুমি যে মাগিলা পঞ্চবার।।
অকারণে কন্যা আর করহ রোদন।
কখন খণ্ডন নহে আমার বচন।।
হইবে তোমার স্বামী পঞ্চ মহারথী।
ক্ষিতিমধ্যে হৈবে তবু সর্ব্বশ্রেষ্ঠা সতী।।
পৃথিবীতে ঘুষিবেক তোমার চরিত্র।
তম নাম নিলে লোক হইবে পবিত্র।।
এত বলি অন্তর্হিত হইলেন হর।
গঙ্গাজলে গিয়া কন্যা ত্যজে কলেবর।।
পুনঃ সেই কন্যা জন্মে কাশীরাজালয়ে।
সেই জন্ম পতিহীন যৌবন সময়ে।।
না হইল বিবাহ যৌবনকাল গেল।
আপনারে তিরস্কারি তপ আরম্ভিল।।
হিমাদ্রি পর্ব্বতে তপ করে অনুক্ষণ।
তপস্যা দেখিয়া চমৎকার দেবগণ।।
নিকটে আইল সবে দেখিয়া অদ্ভুত।
ধর্ম্ম ইন্দ্র পবন অশ্বিনী-যুগ্মসুত।।
জিজ্ঞাসিল, কন্যা তপ কর কি কারণে।
এমত কঠোর তপ এ নব-যৌবনে।।
স্বামী-ইচ্ছায় তপস্যা কর বরাননে।
যারে ইচ্ছা বর তুমি আমা পঞ্চজনে।।
এত শুনি চাহে কন্যা পঞ্চজন পানে।
সবার সমান রূপ দেখিল নয়নে।।
কাহারে বরিব, হেন ভাবিতে লাগিল।
অধোমুখ হৈয়া কন্যা নিঃশব্দে রহিল।।
কন্যার হৃদয়-কথা জানি পঞ্চজন।
পঞ্চজন বর তারে দিল ততক্ষণ।।
ত্যজ তপ, এই দেহ ত্যজ, কন্যা তুমি।
পর-জন্মে আমরা হইব তব স্বামী।।
এত বলি অন্তর্হিত হৈল দেবগণ।
তপস্যা করিয়া কন্যা ত্যজিল জীবন।।
সেই কন্যা তব গৃহে হইল দ্রৌপদী।
অযোনি-সম্ভবা জন্ম হৈল যজ্ঞভেদী।।
ধর্ম্ম ইন্দ্র বায়ু আর অশ্বিনী-যুগল।
পঞ্চ-অংশে জন্মিল পাণ্ডব মহাবল।।
পাণ্ডবের হেতু কৃষ্ণা ধাতার নির্ম্মাণ।
পূর্ব্বের নির্ব্বন্ধ ইহা কে করিবে আন।।
মহাভারতের কথা অমৃত-সমান।
কাশীরাম দাস কহে, শুনে পুণ্যবান।।
১০৯.দ্রৌপদীর পূর্ব্বজন্ম বৃত্তান্ত
অগস্ত্য বলেন, সত্য কহিলেন ব্যাস।
আমি যাহা জানি শুন কহি সে আভাষ।।
পূর্ব্বে এককালে যজ্ঞ করেন শমন।
অহিংসাতে কোন প্রাণী না হয় মরণ।।
মনুষ্যে পূরিল ক্ষিতি, দেবে ভয় হৈল।
সবে আসি ব্রহ্মারে সকলি নিবেদিল।।
শুনি ব্রক্ষা চলিলেন সহ দেবগণ।
নৈমিষ-কাননে যজ্ঞ করেন শমন।।
ব্রহ্মারে দেখিয়া যম উঠি সম্ভাষেন।
কি কর্ম্ম করহ বলি ধাতা জিজ্ঞাসেন।।
সৃষ্টির উপরে আছে তব অধিকার।
পাপপূন্য বুঝি দণ্ড দিবা সবাকার।।
তাহা ছাড়ি তুমি আসি যজ্ঞে দিলা মন।
মম বাক্য লঙ্ঘিতেছ, ইহা বা কেমন।।
শুনিয়া কহেন যম করি যোড়পাণি।
মম শক্তি এ কর্ম্ম নহিল পদ্মযোনি।।
সব দেবগণ মধ্যে আমি হৈনু চোর।
ত্রিভুবন উপরে বিষয় দিলা মোর।।
ত্রৈলোক্যের রাজা হৈয়া দেব পুরন্দর।
তিনি যজ্ঞ করিতে পায়েন অবসর।।
কুবের বরুণ যজ্ঞ ইচ্ছা কৈলে করে।
মুহূর্ত্তেক অবকাশ নাহিক আমারে।।
না পারিনু এ কর্ম্ম করিতে দেবরাজ।
অন্য কোন জনেরে সমর্প এই কাজ।।
না পারিনু পাপ পুণ্য কর্ম্মের নির্ণয়।
কার কতকাল আয়ু, নির্ণয় না হয়।।
যমের বচনে সচিন্তিত প্রজাপতি।
দেহ হৈতে কৈল এক মূর্ত্তির উৎপত্তি।।
লেখনী দক্ষিণ করে, তালপত্র বামে।
জাতিতে কায়স্থ হৈল চিত্রগুপ্ত নামে।।
যমেরে বলেন, তুমি রাখ সাথে এরে।
যখন যা জিজ্ঞাসিবা, কহিবে তোমারে।।
যাহার যে কর্ম্ম তুমি জানিতে পারিবা।
ব্যাধিরূপ হৈয়া সবে বিনাশ করিবা।।
আপনার কর্ম্মভোগ ভুঞ্জিবে সংসার।
তথাপিহ তোমার উপরে অধিকার।।
ব্রহ্মার বচনে যম প্রবোধ পাইয়া।
সঞ্জীবনী পুরী যান যজ্ঞ সমাপিয়া।।
যমে প্রবোধিয়া সবে যথাস্থানে চলে।
যাইতে কনক-পদ্ম দেখে গঙ্গাজলে।।
সহস্র সহস্র পুষ্প ভাসি যায় স্রোতে।
দেখিয়া বিস্ময় হৈল সবাকার চিতে।।
অম্লান কনকপুষ্প গন্ধে মন মোহে।
তদন্ত জানিতে ইন্দ্র ধর্ম্মরাজে কহে।।
ইন্দ্রের আজ্ঞায় ধর্ম্ম গেল শীঘ্রগতি।
বহুক্ষণ নাহি দেখি চিন্তে সুরপতি।।
তাহার পশ্চাতে পাঠাইল দুইজন।
চলি গেল শীঘ্রগতি অশ্বিনী-নন্দন।।
হইল অনেকক্ষণ নাহি বাহুড়িল।
ইন্দ্র সুরপতি তথা আপনি চলিল।।
তদন্ত জানিতে তবে গেল সুরপতি।
হিমালয়ে গঙ্গাকূলে কান্দিছে যুবতী।।
কনক-কমল তবে গেল সুরপতি।
হিমালয়ে গঙ্গাকূলে কান্দিছে যুবতী।।
কনক কমল হয়, তার অশ্রুজলে।
খরস্রোতে ভাসি যায় মন্দাকিনী-জলে।।
কন্যারে দেখিয়া জিজ্ঞাসিল দেবরাজ।
কে তুমি, কি হেতু কান্দ, কহ নিজ কাজ।।
নয়ন কুরঙ্গ বিম্ব জিনিয়া অধর।
কমল-সম তব অঙ্গ যে মনোহর।।
মুখ হব নিন্দে ইন্দু, মধ্য মৃগনাথ।
চারু ভুরু যুগ্ম ঊরু নিন্দে হস্তিহাত।।
কি কারণে আপনি কান্দহ একাকিনী।
আমারে বরহ যদি আছ বিরহিণী।।
কন্যা বলে, আমি হই দক্ষের নন্দিনী।
ছাড়িয়া সংসার-সুখ জন্ম-তপস্বিনী।।
মোরে হেন কহিতে তোমারে না যুয়ায়।
পাপ-চক্ষে চাহিলে অনেক কষ্ট পায়।।
এই মতে আমারে কহিল চারিজন।
তা সবার কষ্ট যত না যায় কথন।।
ইন্দ্র বলে, কহ তাঁরা আছয়ে কোথায়।
কন্যা বলে, যদি ইচ্ছা আইস তথায়।।
কন্যার সহিত গেল দেব পুরন্দর।
পর্ব্বত-উপরে দেখে পুরুষ সুন্দর।।
কেতকী বলিল, দেব আমি তপস্বিনী।
এ পুরুষ আমারে বলে উপহাস-বাণী।।
শিব বলিলেন, মূঢ় না দেখ নয়নে।
প্রতিফল ইহার পাইবা মম স্থানে।।
এই গিরিবর তুমি তোল পুরন্দর।
হরের আজ্ঞায় ইন্দ্র তোলে গিরিবর।।
পর্ব্বতের গহ্বরে হরের কারাগার।
চরণে নিগড় বন্দী আছয়ে সবার।।
ধর্ম্ম বায়ু অশ্বিনীদ্বয় আছে চারিজন।
দেখিয়া হইল ভীত সহস্র-লোচন।।
করযোড়ে বিস্তর করিল স্তব হরে।
তুষ্ট হইয়া সদানন্দ বলেন তাঁহারে।।
লক্ষ্মী-অংশ কেতকী আজ্ন্ম তপাচারী।
তার অপরাধ আমি ক্ষমিতে না পারি।।
তব স্তব-বাক্যে মোর হইল সন্তোষ।
তোমা হেতু ক্ষমিলাম এ চারির দোষ।।
বিষ্ণুর সদনে লৈয়া যাব তোমা সব।
তাঁর আজ্ঞামত কর্ম্ম করিবা বাসব।।
এত বলি সবে লৈয়া যান ত্রিলোচন।
শ্বেতদ্বীপে যথায় আছেন নারায়ণ।।
কহিলেন সকল কেতকী-বিবরণ।
শুনি করিলেন আজ্ঞা শ্রীমধুসূদন।।
ইন্দ্রত্ব পাইয়ে তোর নাহি খণ্ডে লোভ।
মর্ত্ত্যে জন্ম লইয়া ভুঞ্জিতে আছে ক্ষোভ।।
কর্ম্মফল অবশ্য ভুঞ্জয়ে যাহা করি।
হইবে তোমার ভার্য্যা কেতকী সুন্দরী।।
পঞ্চজন জন্ম সবে লভ নরযোনি।
কেতকী হইবে তোমা পঞ্চের ভামিনী।।
তোমা সবা প্রীতিহেতু আমিই জন্মিব।
দ্বাপরে ক্ষত্রিয়-দর্প নিঃশেষ করিব।।
এত বলি দুই কেশ দিলেন কেশব।
মহেশ সহিত তবে চলিলা বাসব।।
কেশবের কেশ লৈয়া আসিলা মহেশ।
শুক্ল কৃষ্ণ দুই হৈলা রাম হৃষীকেশ।।
শুনহ দ্রুপদ এই পূর্ব্বের কাহিনী।
সেই দেবী কেতকী হইলা যাজ্ঞসেনী।।
মহাভারতের কথা অমৃত-সমান।
কাশীদাস কহে, সদা শুনে সাধুজন।।
১১০.কেতকীর প্রতি সুরভির অভিশাপ দান
দ্রুপদ কহিল, বলি শুন তপোধন।
কার কন্যা কেতকী, তাপসী কি কারণ।।
কি হেতু রোদন কৈল গঙ্গাতীরে বসি।
ইহার বৃত্তান্ত মোরে কহ মহাঋষি।।
অগস্ত্য বলেন, শুন তাহার কাহিনী।
সত্যযুগে ছিল সেই দক্ষের নন্দিনী।।
না করিল বিভা, সে সন্ন্যাস-ধর্ম্ম নিল।
হিমালয়-মন্দিরে হরের নিবেদিল।।
তোমার আলয়ে আমি তপস্যা করিব।
তুমি আজ্ঞা দিলে আমি নির্ভয়ে থাকিব।।
হর বলিলেন, থাক এই গিরিবরে।
আমার নিকটে থাক, কি ভয় তোমারে।।
পুরুষ পাইয়া তোরে যে করে সম্ভাষ।
শীঘ্র তুমি তাঁহারে আনিবা মম পাশ।।
হরের আশ্বাস পেয়ে কেতকী রহিল।
একাসনে ধেয়ানেতে জন্ম গোঁয়াইল।।
দৈবে এক দিন তথা আইল সুরভি।
পাছে পঞ্চ ষণ্ড দেখি ঋতুমতী গবী।।
পঞ্চগোটা ষণ্ড এক সুরভির পাছে।
ষণ্ডে ষণ্ডে মহাযুদ্ধ কেতকীর কাছে।।
ষণ্ডের গর্জ্জনে কেতকীর ধ্যান ভাঙ্গে।
পঞ্চগোটা ষণ্ড দেখি সুরভির সঙ্গে।।
দেখিয়া কেতকী তবে ঈষৎ হাসিল।
কেতকী হাসিল, তাহা সুরভি জানিল।।
উপহাস বুঝিয়া হৃদয়ে হৈল তাপ।
ক্রুদ্ধা হৈয়া গোমাতা তাহারে দিল শাপ।।
নাহিক ইহাতে লজ্জা, গরু জাতি আমি।
নরযোনি হয়ে তোর, হবে পঞ্চ স্বামী।।
পুনঃপুনঃ জন্ম তোর হৈবে নরযোনি।
দুই জন্ম বৃথা তোর যাবে বিরহিণী।।
তৃতীয় জন্মেতে হবে স্বামী পঞ্চজন।
পাইবে লক্ষ্মীর অঙ্গ হৈবে বিমোচন।।
একজন-অংশে তার হৈবে পঞ্চজন।
ভেদাভেদ নহিবেক, সবে একমন।।
কেতকী পুছিল তারে করি যোড়হাত।
অল্পদোষে এত বড় শাপিলা নির্ঘাত।।
কতকালে হবে মোর শাপ বিমোচন।
এক অংশে কাহারা হইবে পঞ্চজন।।
শাপ দিলা, তবে আমি ভুঞ্জিবারে চাই।
ইহার তদন্ত মোরে কহ শুনি গাই।।
সুরভি বলিল, শুন তাহার কারণ।
একা ইন্দ্র অংশেতে হইল পঞ্চজন।।
বৃত্রাসুর নাম, ত্বষ্টা মুনির নন্দন।
পরাক্রমে জিনিলেক সকল ভুবন।।
সুররাজ রণে যবে তারে সংহারিল।
শুনি ত্বষ্টা মুনি ক্রোধে আগুন হইল।।
আজি সংহারিব ইন্দ্রে, দেখ সর্ব্বজন।
নহে মোর তপোব্রত সব অকারণ।।
ব্রহ্মবধী বিশ্বাস-ঘাতকী দুরাচার।
কি মতে বহিছে ধর্ম্ম এ পাপীর ভার।।
ত্রিশিরস পুত্র মোর তপেতে আছিল।
অনাহারী মৌনব্রতী কারে না হিংসিল।।
হেন পুত্রে মোরে মোর দুষ্ট দুরাচার।
বিশ্বাস করিয়া বৃত্রে করিল সংহার।।
আজি দৃষ্টিমাত্রে ভস্ম করিব তাহারে।
এত বলি মুনিবর ধায় ক্রোধভরে।।
দুইপাটী দন্ত ঘন করে কড়মড়।
সুরাসুর দেখিয়া পলায় উভরড়।।
বায়ু বলিলেন, ইন্দ্র নিশ্চিন্তে আছহ।
ক্রোধান্বিত ত্বষ্টামুনি আইসে দেখহ।।
করে করে কচালে, ঊরুতে মারে চড়।
ক্ষিতি কাঁপে চলিতে চরণ তড়বড়।।
দীঘল জটিল দাড়ি করে নড়বড়।
সঘনে গর্জ্জয়ে যেন ঘন গড়গড়।।
নাসার নিঃশ্বাস যেন প্রলয়ের ঝড়।
নেত্রানলে পোড়ে বন শুনি চড়চড়।।
ঘন ঘন জ্হিবা ধরি দিতেছে কামড়।
ভুজে ঠেকি ভাঙ্গে বৃক্ষ শুনি মড়মড়।।
মম বাক্যে সুরপতি বাহনে না চড়।
আগু হৈয়া অর্দ্ধপথে পায়ে গিয়া পড়।।
দুই হাত বান্ধি তার চরণেতে পড়।
গলায় কুঠারি বান্ধি দন্তে লহ খড়।।
নতুবা পলাও শীঘ্র, আইল নিয়ড়।
রহিলে নাহিক রক্ষা, কহিলাম দড়।।
শুনি ইন্দ্র ভয়ে আত্মা করে ধড়ফড়।
না স্ফুরে মুখেতে বাক্য, হৈল যেন জড়।।
কোথায় লুকাব, হেন না দেখি আহড়।
আজ্ঞা কৈল আনিবারে যত হস্তী ঘোড়।।
ঐরাবত আদি যত হস্তী বড় বড়।
চতুর্দ্দিকে বেড়িয়া রাখিল যেন গড়।।
ত্বষ্টার দেখিয়া ক্রোধ ইন্দ্র পায় ত্রাস।
কোথা যাব, রক্ষা পাব, গেলে কার পাশ।।
নিকটেতে ইন্দ্রের আছিল চারি জন।
ধর্ম্ম, বায়ু আর দুই অশ্বিনী-নন্দন।।
চারি জনে চারি অংশ কৈল সমর্পণ।
অপর আত্মায় দিল নিজ দেহে স্থান।।
পঞ্চ ঠাঁই পঞ্চ-আত্মা কৈল পুরন্দর।
এক আত্মা ধরিয়া রহিল কলেবর।।
আর চারি আত্মা সমর্পিল চারি ঠাঁই।
ধর্ম্ম বায়ু অশ্বিনীকুমার দুই ভাই।।
হেনকালে উপনীত ত্বষ্টা মহাঋষি।
দৃষ্টিমাত্রে পুরন্দরে কৈল ভস্মরাশি।।
ইন্দ্রে ভস্ম বসিল ইন্দ্রাসনে।
আমি ইন্দ্র বলিয়া ঘোষিল দেবগণে।।
কেতকীর প্রতি তবে সুরভি বলিল।
হেনমতে ইন্দ্র তবে পঞ্চ ঠাঁই হৈল।।
সেই পঞ্চ অংশ হৈতে হৈবে পঞ্চজন।
তুমি তার ভার্য্যা হৈবে, না যায় খণ্ডন।।
কেতকী বলিল, কহ শুনি গো জননী।
কিমতে পাইল প্রাণ পুনঃ বজ্রপাণি।।
গবী বলে, ত্বষ্টা ইন্দ্রে করিয়া সংহার।
আপনি লইল স্বর্গে ইন্দ্রের যে ভার।।
দেবগণ গিয়া তবে কহিল ব্রহ্মারে।
ইন্দ্র বিনা থাকিতে কি পারে স্বর্গপুরে।।
ভাঙ্গিল ইন্দ্রের সভা, দেবের নগর।
নৃত্য গীত নাহি করে অপ্সরী অপ্সর।।
অনুক্ষণ হইল অসুর-উপদ্রব।
এই হেতু রহিতে না পারিলাম সব।।
এত শুনি ব্রহ্মা পাঠাইল নারদেরে।
নারদ কহিল সব ত্বষ্টার গোচরে।।
ইন্দ্রত্ব লইয়া মুনি কর ইন্দ্রকার্য্য।
ইন্দ্র বিনা উপদ্রব হৈল সর্ব্বরাজ্য।।
মুনি বলে, ইন্দ্রত্বে কি মম প্রয়োজন।
জপ তপ ব্রতে মন যায় অনুক্ষণ।।
যাহার ইন্দ্রত্বে ইচ্ছা, লউক এখন।
ত্বষ্টার এ কথা শুনি বলে তপোধন।।
ইন্দ্রেরে সৃজিল ধাতা সৃষ্টির কারণ।
বিনা ইন্দ্র ইন্দ্রত্ব করিবে কোন্ জন।।
আপনি ইন্দ্রত্ব যদি না করিবা মুনি।
ক্রোধ ত্যজি জিয়াইয়া দেহ বজ্রপাণি।।
বিধাতার সৃষ্টি রাখ, আমার বচন।
শুনিয়া স্বীকার করিলেন তপোধন।।
ইন্দ্র-ভস্ম যে ছিল অগ্রেতে আনি দিল।
শান্ত দৃষ্টে চাহি ত্বষ্টা তাঁরে জীয়াইল।।
হেনমতে দেবরাজ পুনঃ পায়প্রাণ।
তোমারে কহিলাম এ কথন পুরাণ।।
এত বলি সুরভি গেলেন নিজ-স্থান।
চিন্তিয়া কেতকী চিত্তে করিতেছে ধ্যান।।
গঙ্গাতীরে বসি কান্দে, পড়ে অশ্রুজল।
তাহে জন্ম হয় দিব্য কনক-কমল।।
এতেক বলিতে স্বর্গে দুন্দুভি বাজিল।
আকাশে থাকিয়া ডাকি দেবতা কহিল।।
অগস্ত্য কহেন যাহা, কিছু নহে আন।
পঞ্চ পাণ্ডবের হেতু কৃষ্ণার নির্ম্মাণ।।
শীঘ্র কর শুভকর্ম্ম, সুরপতি ডাকে।
এত বলি পুষ্পবৃষ্টি করে ঝাঁক ঝাঁকে।।
ইন্দ্র পাঠাইয়া দিল দিব্য আভরণ।
কেয়ূর কুণ্ডল হার বলয় কঙ্কণ।।
অম্লান অম্বর, পারিজাত পুষ্পরাজ।
চিত্ররথ সহ দিল অঙ্গনা-সমাজ।।
হেনকালে আইলেন রাম নারায়ণ।
দ্বারকা নিবাসী যত স্ত্রী পুরুষগণ।।
বিবাহ-মঙ্গল দ্রব্য বসুদেব লৈয়া।
স্ত্রীগণ লইয়া এল গরুড়ে চড়িয়া।।
আইল দেবকী দেবী রোহিণী রেবতী।
রুক্মিণী কালিন্দী সত্যভামা জাম্ববতী।।
নগ্নজিতা মিত্রবৃন্দা ভদ্রা সুলক্ষণা।
আর যত যদুনারী কে করে গণনা।।
নানারত্ন আনিল ভূষণ অলঙ্কার।
দশকোটি অশ্ব, দশকোটি রথ আর।।
দশকোটি মাতঙ্গ, বৃষভ অগণন।
উট খর শকটে পূর্ণিত করি ধন।।
সকলে দিলেন কৃষ্ণ ধর্ম্মের নন্দনে।
যুধিষ্ঠির অপার আনন্দযুক্ত মনে।।
মাতুলাণী মাতুলে প্রণমে পঞ্চজনে।
একে একে সম্ভাষেন যত যদুগণে।।
নিকটেতে রাজগণ পাইয়া বারতা।
বিবাহ-যৌতুক লৈয়া শীঘ্র এল তথা।।
যারে যেই সম্ভাষ করিল সর্ব্বজন।
আদরে করিল পূজা দ্রুপদ রাজন।।
মহাভারতের কথা অপ্রমিত সুধা।
সতত শুনহ নর ভারতের কথা।।
১১১.পঞ্চ-পাণ্ডবের সহিত দ্রৌপদীর বিবাহ
মুনিগণ দেবগণ আইল সভায়।
বিবাহের আজ্ঞা দিল পাঞ্চালের রায়।।
পঞ্চ ভায়ে বসাইল পঞ্চ সিংহাসনে।
হরিদ্রা পিটালি গন্ধ দিল প্রতিজনে।।
পঞ্চ-তীর্থ জল আনি স্নান করাইল।
ইন্দ্রের ভূষণে বিভূষিতাঙ্গ হইল।।
বিবাহ মঙ্গল যত হইল সুবেশ।
রত্নবেদী-মধ্যস্থলে করিল প্রবেশ।।
সিংহাসনে বসাইল দ্রৌপদী সুন্দরী।
পঞ্চ ভাই সাতবার প্রদক্ষিণ করি।।
পঞ্চজন অগ্রে-বেদী-মধ্যে বসাইল।
পঞ্চ ভাই হস্তে হস্তে বন্ধন করিল।।
কৃষ্ণা-বাম-বৃদ্ধাঙ্গুলি যুধিষ্ঠির হস্ত।
তর্জ্জনীতে বৃকোদর মধ্যাঙ্গুষ্ঠে পার্থ।।
নকুল অনামাঙ্গুষ্ঠে কনিষ্ঠে কনিষ্ঠ।
ক্রমে পঞ্চজনে কৃষ্ণা করাইল দৃষ্ট।।
দুন্দুভি-নিনাদে নৃত্য করে বিদ্যাধরী।
হুলাহুলী মঙ্গল করয়ে নরনারী।।
পাঞ্চজন্য বাজান আপনি নারায়ণ।
লক্ষ লক্ষ শঙ্খ বাজে, বাদ্য অগণন।।
কল্যাণ করিল যত দেবি-ঋষিগণ।
দ্বিজেরে দক্ষিণা দিল না যায় লিখন।।
হেনমতে সম্পূর্ণ করিয়া বিভাকার্য্য।
প্রভাতে চলিয়া গেল যেবা যার রাজ্য।।
মুনিগণ দ্বিজগণ গেল নিজ স্থান।
দ্বারাবতী চলিলেন কৃষ্ণ বলরাম।।
যাইতে বিদুরে স্মরিলেন যদুমণি।
পাণ্ডবের বার্ত্তা দিতে গেলেন আপনি।।
কৃষ্ণে দেখি বিদুর আনন্দ-জলে ভাসে।
পাদ্য অর্ঘ্য সিংহাসনে পূজিল বিশেষে।।
দ্বাদশ বৎসর হেথা নাহি যাহায়াত।
বড় ভাগ্য হস্তিনা, কি হেতু জগন্নাথ।।
কহ কিছু জান যদি পাণ্ডবের বার্ত্তা।
কোন্ দেশে কোন্ রূপে আছে তার কোথা।।
মরিল বাচিঁল কিছু না জানি তদন্ত।
কেবল ভরসা এই সবে ধর্ম্মবন্ত।।
হা হা কুন্তী, হা হা ধর্ম্মপুত্র যুধিষ্ঠির।
তোমা না দেখিয়া আছে এ পাপ শরীর।।
এত বলি বিদুর পড়িল মূর্চ্ছা হৈয়া।
দুই হাতে ধরি কৃষ্ণ বসান তুলিয়া।।
হাসিয়া বিদুরে তবে কহে জগন্নাথ।
ভাল বার্ত্তা লহ তুমি হৈয়া খুল্লতাত।।
পাণ্ডবের বিবাহ যে ত্রৈলোক্য জানিল।
এক লক্ষ্য রাজা সহ দলে আসিছিল।।
কালি রাত্রে বিবাহিতা হৈল যাজ্ঞসেনী।
পঞ্চ পাণ্ডবের ভার্য্যা তিনি একাকিনী।।
পতি ও ভাসুর দুই রাজা যুধিষ্ঠির।
পতি ও দেবের দুই সহদেব বীর।।
ভীম ও অর্জ্জুন আর নকুল প্রবীর।
ভাসুর, দেবর, পতি তিন দ্রৌপদীর।।
আমিও ছিলাম সব কুটুম্ব সংহতি।
শুভকর্ম্ম সমাপিয়া যাই দ্বারাবতী।।
গোবিন্দ-চরণ ধরে ভূমে লোটাইয়া।
এ কথা এথায় হরি না কহিও আর।
শুনি দুষ্টলোকে পাছে করে কুবিচার।।
হাসিয়া বলেন কৃষ্ণ, ডরহ কাহারে।
সবে পলাইয়া এল পাণ্ডবের ডরে।।
ভীমার্জ্জুন-পরাক্রম অতুল ভূতলে।
এক লক্ষ্য নৃপতি জিনিল অবহেলে।।
বিদুরে প্রবোধি চলি গেলা ভগবান্।
বিদুর ত্বরিতে গেল ধৃতরাষ্ট্র-স্থান।।
বিদুর বলেন, আজি, শুভরাত্রি হৈল।
দ্রুপদ-নন্দিনী কৃষ্ণা কুরুকুলে এল।।
এই মাত্র সংবাদ পাইয়া আমি আজ।
আপনারে জানাতে আসিনু মহারাজ।।
ধৃতরাস্ট্র শুনি কহে আনন্দে বিভোর।
আগুসরি আন গিয়া পুত্রবধূ মোর।।
নানারত্ন ফেল দুর্য্যোধনেরে নিছিয়া।
আগুসরি আন কৃষ্ণা রতনে ভূষিয়া।।
বিদুর বলিল, রাজা হেথা বধূ কোথা।
যুধিষ্ঠিরে বলিলেন, দ্রুপদ-দুহিতা।।
ধৃতরাষ্ট্র শুনি যেন শেল বাজে বুকে।
ততোধিক ভাগ্য বলি, বলে রাজা মুখে।।
দুর্য্যোধন হইতে অধিক যুধিষ্ঠির।
শুভবার্ত্তা শুনি হৃষ্ট হইল শরীর।।
কহ শুনি বিদুর, আছয়েতারা কোথা।
কার ঠাঁই পাইলা তুমি এ সব বারতা।।
বিদুর বলেন, কৃষ্ণা কৈল লক্ষ্য-পণ।
সেই লক্ষ্য বিন্ধিলেক ইন্দ্রের নন্দন।।
তব মুখে শুনি কথা আনন্দ অপার।
বিদুর কহিছে মন বুঝিয়া রাজার।।
কন্যা-হেতু বহু দ্বন্দ্ব কৈল রাজা সব।
ভীমার্জ্জুন সবারে করিল পরাভব।।
মুনিগণ দেবগণ একত্র হইয়া।
পঞ্চ ভাই পাণ্ডবে কৃষ্ণারে দিল বিয়া।।
যদুবংশ সহ গিয়াছিলেন শ্রীপতি।
কহি বার্ত্তা আমারে গেলেন দ্বারাবতী।।
এত বলি বিদুর গেলেন নিজ স্থান।
অধোমুখে অন্ধ রাজা মনে করে ধ্যান।।
মহাভারতের কথা অমৃত সমান।
কাশীরাম দাস কহে, শুনে পুণ্যবান।।

বেদ সম্পর্কে সামান্য ধারণা

শ্রীমদ্ভগবতগীতার সম্পূর্ণ শ্লোকের অর্থ

বিবিধ


মহাভারতের প্রধান প্রধান চরিত্র