রাজা শান্তুুনু

শান্তুনু: তিনি করুবংশীয় রাজা। তার পিতার নাম প্রতীপ। তিনি মহাবীর ভীষ্মের পিতা। ইক্ষাকু-বংশীয় এক রাজা মহাভিষ যিনি পূণ্যকর্মের জন্য স্বর্গবাসের অধিকার পেয়েও নৈতিক স্খলনজনিত কারণে ব্রহ্মার অভিশাপে পুনরায় মর্ত্যলোকে জন্ম গ্রহণ করেন। তখন প্রতীত ও তার স্ত্রী পুত্র লাভের আশায় তপ্যারত ছিলেন। রাজা মহাভিষ তাদের পুত্ররুপে জন্ম গ্রহণ করেন। তার নামই হলো শান্তুনু। শান্তুন যৌবনপ্রাপ্ত হলে প্রতীপ তাকে যৌবরাজ্যে অভিষিক্ত করেন এবং তিনি বনবাসী হন। পূর্বপুরুষদের পদাংক অনুসরন করে একদিন রাজা শান্তুনু হরিণ শিকারে গেলেন। ভাগীরথী তীরবর্তী উপবন অতিক্রম করার সময় তিনি সেখানে এক অপরুপ সুন্দরী কন্যাকে দেখে মুগ্ধ হন এবং তিনি তাকে বিবাহ করতে প্রস্তাব দেন। তখন কন্যা তাকে শর্ত দেন যে তিনি যে কাজ করবেন তাতে রাজা কোন বাঁধা দিতে পারবে না। বাঁধা দিলে তিনি তাকে ছেড়ে চলে যাবেন। রাজা শান্তুনু তাতে রাজী হন এবং তাকে স্ত্রী রুপে গ্রহণ করে রাজ্যে ফিরে যান। যথাসময়ে তার স্ত্রী গর্ভে প্রথম সন্তান জন্ম গ্রহণ করে। তার স্ত্রী সন্তানটি গঙ্গায় বিসর্জন দেন। তা দেখে রাজা শান্তুনু বুকে ফেটে যায় কিন্তু প্রতিজ্ঞানুসারে তিনি কিছু বলতে পারছেন না। এভাবে একে একে তার স্ত্রী তার গর্ভের সাতটি সন্তানকে গঙ্গায় বিসর্জন দেন। কিন্তু অষ্টম গর্ভের সন্তানকে বিসর্জন দেয়ার সময় রাজা শান্তুনু তাকে বাঁধা দেন এবং জানতে চান সে কে? শান্তুনু জানতে পারেন তিনি স্বয়ং গঙ্গাদেবী। তার পুত্ররুপে যারা জন্ম গ্রহণ করেছে তারা সকলেই ব্রহ্মশাপগ্রস্থ অষ্ট বসু। গঙ্গায় বিসর্জনকৃত সাতজন বসুই ব্রহ্মশাপ হতে মুক্ত হয়েছেন। কিন্তু অষ্টবসু অর্থাৎ শেষ পুত্রটি তিনি তার কাছে রেখে ধর্মবিদ্যায়, যুদ্ধবিদ্যায় বিশারদ করে তারপর রাজা শান্তুনুর কাছে ফিরিয়ে দেন। গঙ্গার এ পুত্রের নামই হলো  দেবব্রত। যৌবনপ্রাপ্ত হলে রাজা শান্তুনু তাকে যৌবরাজ্যে অভিষিক্ত করেন। এর কিছুদিন পর রাজা শান্তুনু যমুনা তীবে ভ্রমণ করার সময় এক পরমা সু্ন্দরীকে দেখে মুগ্ধ হন। তিনি তাকে বিবাহ করার জন্য কন্যার পিতা দাসরাজের কাছে প্রস্তাব দেন। কিন্তু দাসরাজ শর্ত দেন যে, সত্যবতীর গর্ভে  যে সন্তান হবে তাকে সিংহাসনের অধিকার দিতে হবে। রাজা শান্তুনু এ প্রস্তাবে রাজী হতে পারলেন না। তার পুত্র  দেবব্রত পিতার মনকষ্ট জানার পর কঠিন সিদ্ধান্ত  নেন যে, তিনি কখনও সিংহাসনের বসবেন না এবং চিরকুমার থাকবেন। এ কঠিন সিদ্ধান্তের জন্যেই তার আরেক নাম হয় ‘ভীষ্ম’। রাজা শান্তুনু পুত্রের এ বলিদান দেখে অভিভূত হন। পুত্রের এ আত্মত্যাগকে সম্মান জানিয়ে কুরুবংশের বিশাল রাজ্যের ভবিষ্যৎ বিবেচনা করে সত্যবতীকে বিবাহ করেন। এ সত্যবতীর গর্ভে বিচিত্রবীর্য ও চিত্রাঙ্গদ নামে দুই পুত্রের জন্ম হয়। রাজা শান্তুনুর মৃত্যুর পর বিচিত্রবীর্য রাজা হন। মৃত্যুর সময় তিনি ভীষ্মকে অজেয় ও ইচ্ছামৃত্যুর বর দেন। 

বেদ সম্পর্কে সামান্য ধারণা

শ্রীমদ্ভগবতগীতার সম্পূর্ণ শ্লোকের অর্থ

বিবিধ


মহাভারতের প্রধান প্রধান চরিত্র