দ্রোণাচার্য

দ্রোণাচার্য : মহর্ষি ভরদ্বাজ। দ্রোণাচার্যের পিতা। একদিন মহর্ষি ভরদ্বাজ তার ঋষি সাঙ্গপাঙ্গসহ গঙ্গায় স্নান করতে গেলেন। এমন সময় ঘৃতাচি নামক স্বর্গের অপ্সরা অন্তরীক্ষে ভ্রমণ করছিলেন। দক্ষিণা বাতাসে তার বসন উড়িল। মুনি তার অঙ্গ দর্শন করিলেন। দর্শন করা মাত্র মুনির চিত্ত অস্থির হলো। তার চিত্ত উদ্বেগ হলো।

দেখিয়া তার চিত্তে জন্মিল উদ্বেগ।
পঞ্চশর-শরের অধিকতর বেগ।।
নাহি হেন জন, যারে না মোহে কামিনী।
কামার্ত হয়ে মুনির রেত:পাত হলো। তিনি চিন্তিত হলেন। শেষে দ্রোণী বা কলসের মধ্যে তিনি সেই শুক্র রাখলেন। তথায় এক পুত্র সন্তানের জন্ম হলো। দ্রোণের মধ্যে পুত্রের জন্ম হলো বলে তার নাম রাখলেন দ্রোণ। পুত্রকে তিনি বেদ-বিদ্যা শিক্ষায় পারদশী করে তুলেন। অগ্নির পুত্র অগ্নিবেশ্য মুনির কাছে থেকে অস্ত্রশিক্ষা করে আগ্নেয়স্ত্র লাভ করেন। পাঞ্চালরাজ পৃষতের সাথে ভরদ্বাজ মুনির বেশ সখ্যতা ছিল। তার দ্রুপদ নাম এক পুত্র ছিল। ভরদ্বাজের আশ্রমে এসে পৃষত পুত্র দ্রুপদ দ্রোণের সাথে একত্রে ক্রীড়া ও অধ্যায়ন করত। তাদের মধ্যে গলায় গলায় ভাব ছিল। এমন সম্পর্ক ছিল যে একজন আরেক জনকে না দেখে থাকতে পারত না। কিছুকাল পর পৃষত দেহ রাখেন। দ্রুপদ পাঞ্চালের রাজা হন। কিছুকাল পর ভরদ্বাজও কলেবর পরিত্যাগ স্বর্গারোহণ করেন। আশ্রমে থেকে দ্রোণ বেদ ও বেদাঙ্গ অধ্যায়ন করতে থাকেন। পিতার অজ্ঞানুসারে মহর্ষি শরদ্বানের কন্যা ও কৃপাচার্যের ভগিনী কৃপীকে বিবাহ করেন। কৃপীর গর্ভে এক পুত্রের জন্ম হলো। জন্মের পরই শিশুটি উচ্চৈ:শ্রবার ন্যায় হ্রেষা রব কলে উঠলেন। দৈববাণী হলো “যেহেতু এ পুত্র জন্মর পর ঘোড়ার মত চিৎকার করে উঠেছে এর নাম হবে অশ্বত্থামা এবং সে দীর্ঘজীবী হবে এবং সর্বগুণে গুণান্বিত হবে।” পুত্রের মুখ দর্শনে দ্রোণ আনন্দিত হলেন। দ্রোণ পুত্রকে নানা অস্ত্রবিদ্যা শিক্ষা দেন। একদিন দ্রোন জানতে পারেন যে, জমদগ্নি নন্দন পরশুরাম তার সমস্ত সম্পদ ব্রাহ্মণদের দান করছেন। মহেন্দ্র পর্বতে পরশুরামের নিলয়ে গেলেন। সেখানে দেখলেন তিনি প্রায় সবকিছূই ব্রাহ্মণদের দান করে বনে দিনাদিপাত করছেন। জমদগ্নি নন্দন বললেন,“আপনি কোথা হতে এসেছেন, আপনার পরিচয়ই বা কি?” তখন দ্রোণ বললেন,“আমি ভরদ্বাজ পুত্র দ্রোণ। শুনেছি আপনি সবকিছূ ব্রাহ্মণদের দান করছেন। আমাকে বিবিধ ধন-রত্ন প্রদান করুন।” পরশুরাম বললেন,“হে বিপ্রে! আমার যাবতীয় হিরণ্য ও অন্যান্য ধন যা ছিল সবই ব্রাহ্মণদের দান করেছি। কশ্যপকে দিয়েছি পৃথিবী। এখন আছে মাত্র আমার প্রাণ ও ধনু:শ তূণ।” দ্রোণ বললেন,“হে ভৃগুনন্দ! ধনূর্বান ও এর প্রয়োগবিধি আমাকে শিক্ষা দিন।” পরশুরাম দ্রোণাচার্যের প্রার্থনা পূর্ণ করলেন। ইতোমধ্যে দ্রোণাচার্য জানতে পারলেন যে, তার বাল্যসখা দ্রুপদ পাঞ্চালের রাজা হয়েছেন। বন্ধুত্বের দাবী নিয়ে তিনি পাঞ্চালরাজ্যে উপস্থিত হলেন।

পাঞ্চাল রাজ্যে আগমন করে দ্রোণাচার্য দ্রুপদরাজকে বললেন,“রাজন! আমি তোমার বাল্যসখা দ্রোণ।” দ্রোণের বাক্য শ্রবণ করে রাজা দ্রুপদ বিন্দুমাত্র সম্মান প্রদর্শন না করে রাজার স্বভাব সুলভ ভঙ্গিতে ভ্রূকুটি প্রদর্শন করে বললেন,“ব্রাহ্মণ! তুমি হঠাৎ আমাকে সখা বলে নিতান্ত নির্বোধের কাজ করেছ।কারণ ঐশ্বর্যশালী রাজার সাথে শ্রীহীন লোকের মিত্রতা হওয়া অসম্ভব। বাল্যাবস্থায় তুমি আমার সখা ছিলে, এটা যথার্থ। কিন্তু এখন তোমার সহিত আমার কোন বন্ধুত্ব নেই এবং চিরকাল তা থাকতেও পারে না। হে দ্বিজোত্তম! পূর্বে তোমার সহিত আমার মিত্রতা ছিল বটে, যেমন পন্ডিতের সহিত মূর্খের ও শূরের সহিত ক্লীবের বন্ধুত্ব কদাচিৎ হওয়া উচিৎ নয়। তদ্রুপ বিত্তশালীর সহিত দরিদ্রের মিত্রতা হওয়া অসম্ভব। হে ব্রাহ্মণ! যারা ধনে ও জ্ঞানে আপনার সদৃশ তাদের সহিত বৈবাহিক সম্বন্ধ ও সখ্যতা স্থাপন করা কর্তব্য। তদ্ব্যতীত উৎকৃষ্টের সহিত নিকৃষ্টের বা নিকৃষ্টের সহিত উৎকৃষ্টের মিত্রতা বা বৈবাহিক সম্বন্ধ করা অনূচিত। হে বিপ্র! যেমন অশ্রোত্রিয়ের সহি শ্রোত্রিয়ের ও অরথীর সহিত রথীর বন্ধুত্ব হওয়া যেমন সম্ভব নয় তেমনি রাজার সহিত দরিদ্রের কখনও মিত্রতা হয় না। তবে তুমি কি মনে করে পূর্বের সম্পর্ক ধরে আমার সহিত সখ্য করতে ইচ্ছা করছ?” মহাতেজা ও মহা ধনুর্ধর দ্রোণাচার্য দ্রুপদের উপহাস বাক্য শ্রবণে ক্রুদ্ধ হলেন এবং তাৎক্ষনিকভাবে দ্রুপদের প্রতি তার প্রচন্ড বৈরীভাবে জন্মও হল। দ্রোণাচার্য রাগ, ক্রুধ সংযত করে তাৎক্ষনিকভাবে সে স্থান ত্যাগ করে হস্তিনাপুরে শ্যালক কৃপাচার্যের গৃহে গমন করলেন।

একদিন হস্তিনাপুরের রাজকুমারদ্বয় নগরের বাহিরে বীটা নিয়ে খেলা করছিলেন। হঠাৎ দন্ডের আঘাতে বীটাটি সন্নিকটে এক কূপে পতিত হলো। কুমারদ্বয় কিছুতেই বীটাটি কুপ থেকে তুলতে পারছিলেন না। হতাশ হয়ে তারা ভাবতে লাগল কি করা যায়। এমন সময় শ্যামবর্ণ, পকাচুল, কৃশকায় দ্রোণাচার্য তাদের সম্মুখ দিয়ে যাচ্ছিলেন। বিষন্ন বদন কুমারদের দেখে দ্রোণাচার্য জিজ্ঞাসা করলেন.“তোমাদের মুখ বিষন্ন কেন? কি হয়েছে?” তারা কুপেতে বীটা দেখিয়ে দিল। তখন দ্রোণাচার্য কিছুটা উপহাস ছলেই বললেন,“ধিক! তোমাদের ক্ষাত্রকূর জন্ম, ধিক! তোমাদের অস্ত্রশিক্ষ। একটি বীটা তোমরা তুলিতে পারলে না। আমি ঈষীকা(কাশ তৃণ) দ্বারা তোমারদের বীটা কুপ হতে তুলে দেব। আমাকে তোমরা ভোজন করাবে।” তারপর দ্রোণাচার্য তার অঙ্গুরীটি কুপে ফেললেন এবং একটি ঈষীকা নিক্ষেপ করে বীটা বিদ্ধ করলেণ। তারপর এর উপর আরেকটি ঈষীকা দিয়ে প্রথম ঈষীকা বিদ্ধ করলেন। এভাবে পর পর অনেকগুলি ঈষীকা বিদ্ধ করে উপরের ঈষীকা ধরে টান দিয়ে বীটাটি ‍উদ্ধার করলেন। তারপর শর নিক্ষেপ করে তিনি শরসহ অঙ্গুরী উদ্ধার করলেন। কুমারদ্বয় ব্রাহ্মণের আশ্চর্য ক্ষমতা দেখে উৎফুল্ল হলেন। কুমারদ্বয় বললেন, হে বিপ্রে! আপনার পরিচয় দিয়ে আমাদের কৃতার্থ করুন।” দ্রোণ বললেন,“আমাকে যেরূপে তোমরা দেখেছ ঠিক তাই তাই ভীষ্মকে বলো।” কুমারদের মুখ হতে বিবরণ শ্রবণ করার পর ভীষ্ম বুঝলেন তিনিই দ্রোণাচার্য।

তারপর হস্তিনাপুরে মহামহিম ভীষ্মের সাথে দ্রোণাচার্যের সাক্ষাত হলে তিনি বুঝতে পারলেন দ্রোণাচার্য কুরুবংশের যোগ্য গুরু হবেন। তিনি তাকে কুরু-পান্ডবদের অস্ত্রশিক্ষাগুরু নিয়োগ করেন। কুরু-পান্ডবদের অস্ত্র চালনায় দক্ষ করে গড়ে তুলেন। বৃষ্ণি ও অন্ধক বংশীয় এবং বিভিন্ন দেশের রাজপুত্রগণ দ্রোণের নিকট অস্ত্র শিক্ষার জন্য আসতে থাকলেন। সূতপুত্র কর্ণকেও তিনি অস্ত্র শিক্ষা দেন। নিষাদরাজ হিরণ্যধনুর পুত্র একলব্য দ্রোণাচার্যের কাছে অস্ত্র শিক্ষার জন্য আসলে নীচু জাত বলে তিনি তাকে ফিরিয়ে দেন। কিন্তু একলব্য হতাশ হলেন না। সে অরণ্যে গিয়ে দ্রোণাচার্যের মূর্তি গড়ে পুষ্প দিয়ে পূজা করতে লাগলেন এবং মূর্তির সামনের অস্ত্রবিদ্যা শিক্ষা করতে লাগলেন। এভাবে সে সর্ব অস্ত্র শিক্ষা করে মহাধনুর্ধর হলো।

একদিন কুরুপান্ডবগণ মৃগয়ায় গেলেন। পান্ডবের এক অনুচর মৃগয়ার উপকরণ ও ‍কুকুর নিয়ে পিছনে পিছনে চললেন। একলব্য যেখানে ধ্যান মগ্ন ছিলেন সেখানে গিয়ে কুকুর বিকট চিৎকার করতে লাগল। এতে তার ধ্যান ভঙ্গ হলো। তিনি ক্রোধে কুকুরের মুখে বাণ নিক্ষেপ করে মুখ বন্ধ করে দিলেন। কুকুর এ অবস্থায় পান্ডবদের কাছে গেলে তারা বিস্মিত হন। পান্ডবগণকে বলতে শোনা যায় বহুবিদ্যা তারা শিক্ষা করেছে কিন্তু এমন বিদ্যা তো তাদেরও জানা নেই। অনুচরকে বলে সেখানে গেলেন পান্ডবগণ। গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন,“কে তুমি? কার কাছ থেকে তুমি এ বিদ্যা অর্জন করেছে?” ব্রহ্মচারী বলে,“আমার নাম একলব্য। দ্রোণাচার্যে মৃম্ময়ী গড়ি আস্ত্র-শিক্ষা করলাম।” ব্রহ্মাচারী বাক্য শুনে পান্ডবগণ বিস্মিত হলেন। মৃগয়া বাদ দিয়ে দ্রোণাচার্যের কাছে গিয়ে সব ঘটনা বললেন। অর্জুন বললেন,“গুরু! আপনি তো বলেছেন, আমি আপনার সবচেয়ে প্রিয় শিষ্য এবং আমার থেকে কেহ শ্রেষ্ঠ হবে না।” কিন্তু গুরুদেব.“একলব্যকে আপনি এমন বিদ্যা শিক্ষা দিলেন যা আমি জানি না।” অর্জুনের বাক্য শ্রবণ করে ক্ষণিক চিন্তা করেন এবং সেখানে তারা দুজন গমন করেন। গুরুদ্রোণকে দর্শন করে একলব্য দূর হতে ভূমিষ্ঠ হয়ে প্রণাম করে কৃতাঞ্জলিপুটে দাঁড়িয়ে রইলেন এবং বললেন,“গুরুদেব! কি প্রয়োজনে আগমন।” দ্রোণ বললেন,“তুমি যদি আমার শিষ্য হও তবে গুরুদক্ষিণা আজ দাও।” তখন একলব্য বললেন,“আমার কি ভাগ্য কৃপা করে আপনি এসেছেন। আমার সবকিছুতেই আপনার অধিকার আছে। গুরুকে অদেয় আমার কিছুই নেই।” দ্রোণ বললেন,“তোমার দক্ষিণ হস্তের বৃদ্ধাঙ্গুলিটি আমাকে দক্ষিণাস্বরুপ দাও।” গুরুদেবের নিষ্ঠুর কথায় একলব্য মুহুর্তকাল বিলম্ব না করে নিজের বৃদ্ধাঙ্গুলি ছেদন করে গুরুকে দক্ষিণা দিলেন। দ্রোণাচার্য ও অর্জুন সন্তুষ্ট হলেন। সাথে সাথে একলব্যের কঠোর কর্ম দেখে বিস্মিতও হলেন।

অস্ত্রবিদ্যা শিক্ষা শেষ হলে দ্রোণাচার্য শিষ্যদের কাছে গুরু দক্ষিণা দাবী করেন। তিনি বলেন তোমরা পাঞ্চালরাজ দ্রুপদকে যুদ্ধে পরাজিত করে বন্ধী করে আমার সম্মুখে নিয়ে আসবে। এটাই আমার গুরুদক্ষিণা। রাজ কুমারদ্বয় পাঞ্চালরাজকে বন্ধী করে গুরু দ্রোণাচার্যের কাছে নিয়ে আসেন। তখন দ্রুপদ বাধ্য হয়েই দ্রোণাচার্যকে গঙ্গার উত্তরস্থ অহিচ্ছত্র দেশ দান করেন। কিন্তু বলপূর্বক মিত্রতা স্থাপন দ্রুপদের মনে হিংসার জন্ম দিয়েছে। তিনি তা মেনে নিতে পারেননি। তাই দ্রোণাচার্যের বিনাশের জন্য তিনি এক মহাতেজা পুত্র লাভের চেষ্টা করছেন।

দ্রুপদের কাছে অপমান ও নিগৃহীত হওয়ার পর তার প্রতিশোধ নিতে যাজ ও উপযাজ নামক ব্রাহ্মণ দিয়ে গঙ্গা ও যমুনা নদীর তীরে দ্রোণহন্তার জন্য একটি যজ্ঞ করেন। সে যজ্ঞের অগ্নি থেকে বর্ম ও ধনু হস্তে ধৃষ্টদ্যুম্ন উত্থিত হয়। যজ্ঞ থেকে একটি কন্যাও উত্থিত হয় যার নাম কৃষ্ণ (দ্রৌপদী)।

পঞ্চদশ দিবসের যুদ্ধ। দ্রোণাচার্যের শরের আঘাতে পান্ডবসেনা অকাতরে প্রাণ হারাচ্ছে। ভয়ে এদিক ওদিক ছুটাছুটি করছে। অবস্থা এমন আর কিছুক্ষণ যুদ্ধ করলে পান্ডবের পরাজয় নিশ্চিত হবে। দ্রোণাচার্য যুদ্ধক্ষেত্রে ত্রাসের সৃষ্টি করলেন। পান্ডবপক্ষীয় বীরগণ ত্রাহি ত্রাহি করতে লাগলেন। দ্রোণাচার্যের শরের আঘাতে ভীম মুর্ছিত হয়ে যুদ্ধক্ষেত্র পরিত্যাগ করল। বৃষ্টির মত বাণ ছুড়তে লাগলেন দ্রোণ। শত শত সৈন্য মুর্হুতে ভূমিতে পতিত হলো যেন কদলী পড়ে ভূতলে। তখন অর্জুন অগ্নিশর্মা হয়ে দ্রোণাচার্যের উপর লাখ লাখ দিব্য অস্ত্রের বাণবৃষ্টি করতে লাগলেন যেন সৃষ্টি ধ্বংস হওয়ার উপক্রম হলো। অর্জুনের দিব্যঅস্ত্র প্রতিরোধ করে দ্রোণাচার্য অর্জুনকে হতাশ করে সেনা বিনাশে মনোনিবেশ করলেন। হতাশ যুধিষ্ঠির, হতাশ ধনঞ্জয়, চিন্তিত কৃষ্ণ। ঠিক তখন কৃষ্ণ দ্রোণাচার্যকে লক্ষ্য করে বললেন,“শোন দ্রোণ! অশ্বত্থামার তোমার পুত্র ভীমের গদার আঘাতে নিধন হয়েছে।” শ্রবণ করা মাত্রই দ্রোণাচার্যের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। তবে ব্যাসদেব যে বলেছিল.“ এ পুত্র চিরজীবী। সুমেরু ভেঙ্গে পড়তে পারে, চন্দ্র-সূর্য স্থানচূত্য হতে পারে কিন্তু মুনি বাক্য তো মিথ্যা হতে পারে না। নারায়ণ, আপনি এ কি অসম্ভব কথা বললেন। হৃদয়ে আমার বিস্ময় জন্মেছে। ব্যাস যে বলেছিল চারযুগে অমর সে। তবে এমন কথা কেন হরি আপনি বলছেন।” আমার কথা মিথ্যা নয়, অশ্বত্থামা রণভূমিতে পতিত হয়েছে।” তখন দ্রোণ বলেলেন,“ যদি ধর্মরাজ যুধিষ্ঠির এসে বলে তবে আমি বিশ্বাস করব।” ধর্মরাজ যুধিষ্ঠির অনিচ্ছা সত্ত্বেও কৃষ্ণের পরামর্শে তিনি বললেন,“ অশ্বত্থামা হত: ইত নামে গজ:” গজ কথাটি লঘু স্বরে উচ্চারিত করেন যুধিষ্ঠির। পুত্র শোকে দ্রোণাচার্য আকুল হয়ে ক্রন্দন করতে প্রায় অচেতন হলেন। ঠিক তখনই অর্জুন দ্রোণকে লক্ষ্য করে বাণ নিক্ষেপ করলেন। দ্রোণের কন্ঠতলে ধনু বিদ্ধ হল। ভারসাম্য রক্ষা করতে না পেরে রথের উপর পড়ে যান। ধৃষ্টদ্যুম্ন নিরস্ত্র দ্রোণাচার্যকে হত্যার জন্য ধাবিত হন। ধৃষ্টদ্যুম্ন দ্রোণের রথের উপর উঠে খড়গের দ্বারা গুরুদেব দ্রোণাচার্যের কেশ ধরে শিরোচ্ছেদ করলেন।

ConversionConversion EmoticonEmoticon

:)
:(
=(
^_^
:D
=D
=)D
|o|
@@,
;)
:-bd
:-d
:p
:ng

বেদ সম্পর্কে সামান্য ধারণা

শ্রীমদ্ভগবতগীতার সম্পূর্ণ শ্লোকের অর্থ

বিবিধ


মহাভারতের প্রধান প্রধান চরিত্র