মহাভারত:বনপর্ব-০২১-০২৫

২১. শ্রীবৎস রাজার সহিত ভদ্রার বিবাহ
শুন শুন মহারাজ অপূর্ব্ব কথন।
মালিনী ভবনে বঞ্চে শ্রীবৎস রাজন।।
মালা গাঁথি করে রাজা কালের হরণ।
ফুল ফল জলে রাজা পূজে নারায়ণ।।
কায়মনোবাক্যে রাজা ধর্ম্ম নাহি ত্যজে।
আপনা গোপন করি রহে ধর্ম্মকাজে।।
শুন ধর্ম্ম মহীপাল অপূর্ব্ব ঘটন।
ভদ্রাবতী কন্যার শুনহ বিবরণ।।
ভোজনে বসেছে বাহুদেব মহীপাল।
পরিবেশনে আসে ভদ্রা, হাতে স্বর্ণথাল।।
রাণীজ্ঞান করি রাজা করে হরিহাস।
কান্দিয়া কহিল ভদ্রা জননীর পাশ।।
শুনি রাণী ক্রোধচিত্তে করেন গমন।
ভৎসয়া নৃপতি প্রতি কহিছে বচন।।
শুন মহারাজ তুমি রাজপদে মজি।
সকলি করিলে নষ্ট ধর্ম্মপথ ত্যজি।।
পরকালবন্ধু ধর্ম্ম তাহে করি হেলা।
বিষয়ে হইলে মত্ত, রাজভোগে ভোলা।।
জান না যে মহারাজ আছয়ে শমন।
কি বোল বলিবে কালে না ভাব এখন।।
এমন কুকর্ম্ম রাজা কেহনা আচরে।
আপনার তনয়ারে পরিহাস করে।।
সুপাত্র আনিয়া যদি কন্যা কর দান।
চিরদিন স্বর্গভোগ, বৈকুন্ঠেতে স্থান।।
ইহা না করিয়া তারে কর পরিহাস।
ধিক্ ধিক্ রাজ তব জীবনে কি আশ।।
এমত শুনিয়া রাজা রাণীর বচন।
লজ্জিত হইয়া রাজা কহিছে তখন।।
শুন শুন মহাদেবি আমার বচন।
মিথ্যাভাষে মোরে তুমি করহ লাঞ্ছন।।
এত বড় যোগ্য কণ্যা আছে মম ঘরে।
এক দিন মহাদেবি না কহ আমারে।।
আমি ধর্ম্ম হেলা নাহি করি যে কখন।
জানেন আমার মন সেই নারায়ণ।।
আজি আমি কন্যার কবির স্বয়ন্বর।
এত বলি বাহিরে চলিল নৃপবর।।
ডাকাইয়া পাত্র মন্ত্রী আনিয়া সকল।
সবারে কহিল আমন্ত্রহ ভূমণ্ডল।।
ইচ্ছাবরী হইবেক আমার নন্দিনী।
আনন্দিত হৈল সবে এই কথা শুনি।।
আজ্ঞা পেয়ে নিমন্ত্রণ করিল সবার।
যতদূর পাইলেক মনুষ্য সঞ্চার।।
নিমন্ত্রণ পাইয়া যতেক রাজগণ।
বাহুদেব রাজ্যে সবে করিল গমন।।
নিরবধি আসে রাজা, কত লব নাম।
কলিঙ্গ তৈলঙ্গ আর সৌরাষ্ট্র ভূধাম।।
দ্রাবিড় মগধ মৎস্য কর্ণাট ভূপাল।
গুজরাট মহারাষ্ট্র কাশ্মীর পাঞ্চাল।।
চতুরঙ্গ দলে আসে যত নৃপগণ।
উপযুক্ত গৃহ দিল করি নিরূপণ।।
হর্ষিত হইল সবে পেয়ে রম্যস্থান।
ভক্ষ্য ভোজ্য যত দিল, নাহি পরিমাণ।।
কেবা খায়, কেবা লয়, কেবা দেয় আনি।
খাও খাও, লও লও, এই মাত্র শুনি।।
আড়ে দীর্ঘে দশ ক্রোশ পুরী পরিমাণ।
প্রতি মঞ্চে প্রতি রাজা করে অধিষ্ঠান।।
সবাকারে বিধিমতে পূজিল রাজন।
আনন্দ সাগর নীরে ভাসে রাজগণ।।
নানা কথা আলাপনে বসে সর্ব্বজন।
অধিবাস হেতু রাজা করিল গমন।।
কন্যা অধিবাস করি ষষ্ঠ্যাদি অর্চ্চন।
ঘোড়শ মাতৃকা পূজা গন্ধাধিবাসন।।
অগ্নি পূজি গেল রাজা সভায় তখন।
মালিনীর মুখে শুনে শ্রীবৎস রাজন।।
শুনিয়া দেখিব বলি বাঞ্ছা কৈল চিত্তে।
রাজকন্যা ইচ্ছাবরী হয় কোন পাত্রে।।
যতেক নৃপতিগণ সভায় আসিল।
কদম্ব তরুর মূলে শ্রীবৎস বসিল।।
মনোযোগ কর রাজা ধর্ম্মের নন্দন।
বিধির নির্ব্বন্ধ কর্ম্ম কে করে খণ্ডন।।
হাতে চন্দনের পাত্র মালার সহিত।
সভামধ্যে ভদ্রাবতী হৈল উপনীত।।
ভদ্রার রূপের কথা বর্ণন না যায়।
তিলোত্তমা শচীদেবী তার তুল্য নয়।।
লক্ষ্মী-অংশে জন্মি ভদ্রা আইলা অবনী।
রাজার ঋণেতে মুক্তি বাঞ্ছি নারায়ণী।।
সভামধ্যে আসি ভদ্রা করে নিবেদন।
এ সভাতে দেব দ্বিজ আছ যত জন।।
সকলে জানিবে যে আমার নমস্কার।
আজ্ঞা কর, আমি পাই পতি আপনার।।
এত বলি চতুর্দ্দিকে করে নিরীক্ষণ।
হেনকালে শূন্যবাণী হইল তখন।।
কদম্ব-তরুর তলে তোমার ঈশ্বর।
যার লাগি কৈলে তপ দ্বাদশ বৎসর।।
শুনি স্মিতমুখী ভদ্রা করিল গমন।
যথায় বসিয়া আছে শ্রীবৎস্য রাজন।।
নিকটেতে গিয়া ভদ্রা প্রদক্ষিণ করে।
দিলেক চন্দন মাল্য চরণ উপরে।।
দণ্ডবৎ করি ভদ্রা রহে দাণ্ডাইয়া।
যতেক সভার লোক উঠিল হাসিয়া।।
ছি ছি করি দুষ্ট রাজা নিন্দিল অপার।
শিষ্টজন কহে এই কর্ম্ম বিধাতার।।
কাহার ইচ্ছায় কিবা হইবারে পারে।
বিধির নির্ব্বন্ধ কেহ খণ্ডাইতে নারে।।
কায়ার সহিত যেন ছায়ার গমন।
কর্ম্মের নির্ব্বন্ধ এই জানিবে তেমন।।
এইরূপে কথার আলাপে সর্ব্বজন।
যার যেই দেশে যাত্রা কৈল রাজগণ।।
বাহুদেব রাজা চিত্তে অনুতাপ করি।
শীঘ্রগতি উঠি যান নিজ অন্তঃপুরী।।
কহেন কান্দিয়া রাজা মহাদেবী স্থান।
ভদ্রার কপালে হেন কৈল ভগবান।।
এত রাজগণ ছিল, না বরিল কায়।
অন্টত্যজ দেখিয়া চিত্ত মজাইল তায়।।
পুরুষে পুরুষে মোর রহিল অখ্যাতি।
হেন ইচ্ছা হয় মোর, গলে দিই কাতি।।
রাণী কহে, মহারাজ করহ শ্রবণ।
তব চিন্তা মম চিন্তা সব অকারণ।।
হইবে যখন যাহা ঈশ্বরের ইচ্ছা।
তুমি আমি যত চিন্তি, এ সকল মিছা।।
হেলায় সৃজন যার, হেলায় সংহার।
বুঝিবে তাঁহার মায়া, হেন শক্তি কার।।
ভদ্রা তনয়ার বুদ্ধি দিয়াছেন তিনি।
চিন্তা করি কি করিব এবে তুমি আমি।।
রাণীর প্রবোধ বাক্য শুনিয়া রাজন।
মন্ত্রীকে করিল আজ্ঞা শুন সর্ব্বজন।।
বাহিরে আবাস করি দেহত ভদ্রার।
ভক্ষ্য ভোজ্য দেহ শীঘ্র যাহা চাহি তার।।
পুরীর ভিতর আর নাহি প্রয়োজন।
হয়েছে সভার মধ্যে মস্তক মুণ্ডণ।।
ভদ্রা কন্যা মুখ আমি না দেখিব আর।
বিধাতা করিল মোরে অন্তঃপুরী সার।।
এত কাল ভগবতী করি আরাধন।
কুজাতি কুরূপ বরে বরিল এখন।।
এ সব ভাবিয়া নাহি রুচে অন্নজল।
ইচ্ছা করি আজি মরি প্রবেশি অনল।।
লোক মাঝে মুখ দেখাইব কোন লাজে।
এ ছার জীবন মোর থাকে কোন কাজে।।
হায় হায় বিধি কেন কৈল হেন রূপ।
ভদ্রা কন্যা লিাগি এল কত শত ভূপ।।
কারে না বরিয়া কৈল দরিদ্রে বরণ।
এমত ভাবিয়া রাজা কান্দয়ে তখন।।
রাণী বলে, মহারাজ হলে হতজ্ঞান।
কারণ করণ কর্ত্তা সেই ভগবান।।
হেলায় সৃজন যাঁর, হেলায় সংহার।
কে বুঝিতে পারে চিত্ত চরিত্র তাঁহার।।
তুমি আমি কর্ম্মপাশে আছি যে বন্ধনে।
মায়ার কারণ এত চিন্তা করি মনে।।
কেবা কার ভাই বন্ধ, কেবা কার পিতা।
অনর্থের হেতু মাত্র বিষয়কামিতা।।
মায়া মোহ ত্যজ রাজা, ধর্ম্ম কর সার।
যাহা হতে সংসার সমুদ্র হবে পার।।
এইমত বুঝাইয়া মহিষী রাজনে।
বাহির উদ্যানে গেলা ভদ্রা সন্নিধানে।।
দেখিল আছয়ে ভদ্রা স্বামী বিদ্যমানে।
ইষ্টলাভে মুগ্ধা, নাহি চাহে কারো পানে।।
দেখিয়া রাণীর অতিশয় দুঃখ হৈল।
কোলে নিয়া নিজ বস্ত্রে মুখ মুছাইল।।
জামাতা কন্যাকে নিয়া বাহির আবাসে।
রাখিয়া মধুর ভাষে দোঁহাকারে তোষে।।
এক গৃহে থাক ভদ্রা না ভাবিহ দুঃখ।
দিন কত হৈলে গত পাবে বড় সুখ।।
গৌরী আরাধনা ফল মিথ্যা না হইবে।
কতদিন পরে ভদ্রা রাজরাণী হবে।।
এইরূপে নন্দিনীকে তুষি মহারাণী।
ভিতর মহলে যান যথা নৃপমণি।।
রাজা বলে, মোর ভদ্রা গেল কোথাকারে।
রাণী বলে, রেখে এনু বাহির আগারে।।
ভক্ষ্য ভোজ্য নিয়োজিত করি দিল লোকে।
নিত্য নিত্য পুরী হৈতে নিয়া দিবে তাকে।।
এই মত দুই জন রহিল বাহিরে।
দেখ যুধিষ্ঠির রাজা দৈবে কি না করে।।
বনপর্ব্বে অপূর্ব্ব শ্রীবৎস উপাখ্যান।
কাশী কহে, শুনিলে জন্ময়ে দিব্যজ্ঞান।।
২২. শ্রীবৎস রাজার সহিত চিন্তাদেবীর
মিলন
শ্রীবৎসের দুঃখ কথা কহে যদুরায়।
পঞ্চ ভাই জিজ্ঞাসেন কাতর হিয়ায়।।
দ্রৌপদী কহেন, দেব কহ পুনর্ব্বার।
চিন্তার কি হৈল গতি কেমন প্রকার।।
কিরূপে ভদ্রারে লয়ে বঞ্চিল রাজন।
কহ দেব, শুনিতে ব্যাকুল বড় মন।।
শ্রীকৃষ্ণ বলেন, সবে শুন সেই কথা।
রাজগৃহে মানহীন বঞ্চে রাজা তথা।।
পরগৃহে বঞ্চে, পর অন্নেতে পালিত।
তাঁহার জীবনে ধিক্ মরণ উচিত।।
কষ্টেতে বঞ্চেন রাজা দিবস রজনী।
সান্ত্বনা করেন ভদ্রা কহি প্রিয়বাণী।।
বহুকাল গেল দুঃখে, আছে অল্পকাল।
অচিরে পাইবে রাজ্য শুন মহীপাল।।
জ্ঞানবান্ লোক কভু কাতর না হয়।
স্থির হয়ে ধর্ম্ম করে, ঈশ্বরে ধেয়ায়।।
সুখ ‍দুঃখ দেখ রায় সহযোগে কর্ম্ম।
সুখে উপার্জ্জয়ে ধর্ম্ম, দুঃখেতে অধর্ম্ম।।
ইহা বুঝি মহারাজ শান্তচিত্ত হও।
নিরবধি রামনাম বদনেতে লও।।
না জানহ মহাশয় আছয়ে শমন।
ইহা জানি নরপতি তত্ত্বে দেহ মন।।
ভদ্রার বিনয় বাক্য শুনিয়া রাজন।
অহর্নিশ করে রাজা ঈশ্বরে স্মরণ।।
এরূপে দ্বাদশ বর্ষ হৈল অবশেষ।
শনির ভোগান্ত গত, শুভেতে প্রবেশ।।
হেনকালে একদিন শ্রীবৎস রাজন।
ভদ্রা পতি কহে রায় মধুর বচন।।
তব বাপে কহি কিছু কর্ম্ম দেহ মোরে।
ক্ষীরোদ নদীর তটে দান সাধিবারে।।
শুনিয়া ইঙ্গিতে ভদ্রা মায়েরে কহিল।
রাণীর ইঙ্গিতে রাজা সেইক্ষণে দিল।।
পাইয়া নৃপের আজ্ঞা শ্রীবৎস নৃপতি।
নদীকূলে বসে রাজা হইয়া জগাতি।।
শত শত মহাজন নৌকা বাহি যায়।
তল্লাসী লইয়া তারে পুনঃ ছাড়ি দেয়।।
দেখ যুধিষ্ঠির রাজা দৈবের ঘটনে।
কত দিনে সেই সাধু আইসে ঐ স্থানে।।
দেখিয়া তরণী তার শ্রীবৎস চিনিল।
আটক করিয়া তরী ঘাটেতে রাখিল।।
নিজ জনে আজ্ঞা দিল শ্রীবৎস রাজন।
নৌকা হতে কূলে তোল আছে যত ধন।।
আজ্ঞামাত্র স্বর্ণপাট যতেক আছিল।
তরী হৈতে নামাইয়া কূলে উঠাইল।।
দেখি সদাগর গিয়া নৃপে জানাইল।
তোমার জামাতা মোর সর্ব্বস্ব লুটিল।।
শুনি রাজা ক্রোধচিত্তে জামাতারে বলে।
কে হেতু সাধুর সব স্বর্ণপাট নিলে।।
শ্রীবৎস বলেন, রাজা করহ শ্রবণ।
সাধু নহে, এই বেটা দুষ্ট মহাজন।।
এই স্বর্ণপাট যদি করে দুইখান।
তবেত উহার স্বর্ণ সকলি প্রমাণ।।
শুনি সদাগরে ডাকি কহেন নৃপতি।
স্বর্ণপাট দুইখণ্ড কর শীঘ্রগতি।।
একখানি পাট যদি দুইখানি হয়।
তবেত তোমার স্বর্ণ হইবে নিশ্চয়।।
এ কথা শুনিয়া সাধু কুঠার আনিয়া।
খুলিতে করিল যত্ন স্বর্ণপাট নিয়া।।
খুলিতে নারিল সাধু, মহালজ্জা পায়।
তবেত শ্রীবৎস রাজা কহিছে সভায়।।
খুলিতে নারিল সাধু, পাইলে প্রমাণ।
আমি খুলি স্বর্ণপাট করি দুইখান।।
স্বর্ণপাট হাতে করি শ্রীবৎস রাজন।
তাল বেতালেরে তবে করেন স্মরণ।।
স্মরণ করিবামাত্র দুইখান হয়।
দেখিয়া সভার লোক মানিল বিস্ময়।।
সম্ভ্রমে উঠিয়া রাজা যোড়করে কয়।
কহ বাপু কেবা তুমি হও মায়াময়।।
দেবতা গন্ধর্ব্ব যক্ষ কিবা নাগ নর।
মায়া করি ভদ্রা নিতে এলে গুণাকর।।
বুঝি মোর ভদ্রার ভাগ্যের নাহি সীমা।
সত্য করি কহ বাপু, না ভাণ্ডিহ আমা।।
শ্বশুরের বাক্য শুনি শ্রীবৎস নৃপতি।
কহিতে লাগিল তবে মধুর ভারতী।।
শুন শুন মহারাজ মম নিবেদন।
নীচে কি উত্তম বিধি করান মিলন।।
সমানে সমানে ধাতা করান সংযোগ।
সুখ দুঃখ হয় রাজা শরীরের ভোগ।।
মৃত্যু সম বনে দুঃখ দ্বাদশ বৎসর।
শনির পীড়নে আইনু তোমার নগর।।
ধাতার নির্ব্বন্ধে করি ভদ্রারে গ্রহণ।
ভয় নাহি মহারাজ, নহি নীচ জন।।
শুন নরপতি তুমি মোর বিবরণ।
প্রাগদেশ পতি আমি শ্রীবৎস রাজন।।
চিরদিন ধর্ম্ম ন্যায়ে রাজ্য পালি আমি।
দৈব্যের বিপাক রাজা, জ্ঞাত হও তুমি।।
একদিন শনি সহ জলধি কুমারী।
দোঁহে দ্বন্দ্ব করি আসে মম বরাবরি।।
লক্ষ্মী কহে, আমি পূজ্যা সকল সংসারে।
শনি বলে, আমি শ্রেষ্ঠ যত চরাচরে।।
এইমত দ্বন্দ্ব করি আসিদুই জন।
আমারে কহিল, কহ শ্রেষ্ঠ কোন্ জন।।
শুনিয়া হৃদয়ে মোর হৈল বড় ভয়।
কাহারে কহিব শ্রেষ্ঠ, কি হবে উপায়।।
উভয়ে বলিনু, কল্য আসিহ প্রভাতে।
ইহার প্রমাণ কালি বুঝিব মনেতে।।
বিদায় হইয়া দোঁহা করিল গমন।
আমার ভাবনা হৈল, কি করি এখন।।
কেবা ছোট, কেবা বড় কহিতে না পারি।
অনেক ভাবিয়া চিত্তে অনুমান করি।।
স্বর্ণ রৌপ্য সিংহাসন করি দুইখানি।
দুইভিতে সিংহাসন, মধ্যে থাকি আমি।।
সভা করি উপবিষ্ট রহিনু তথায়।
দুই জন আইলেন প্রভাত সময়।।
দোঁহে দে সম্ভ্রমেতে বসাই ঝটিতি।
কাতর অন্তরে আমি করি বহু স্তুতি।।
তুষ্ট হয়ে দুই জন বসে সিংহাসনে।
শনি বসে বামে আর কমলা দক্ষিণে।।
আমারে জিজ্ঞাসে দোঁহে সহাস্য বদন।
শুনিয়া উত্তর আমি করিনু তখন।।
আপনা আপনি দোঁহে ভাবি দেখ মনে।
দক্ষিণেতে শ্রেষ্ঠ বলি, বামে সাধারণে।।
এত শুনি ক্রোধী হয়ে শনি মহাশয়।
অল্পদোষে গুরুদণ্ড করিল আমায়।।
রাজ্যনাশ বনবাস স্ত্রী বিচ্ছেদ হৈল।
মরণ অধিক দুঃখ মোরে ডুবাইল।।
শ্রীবৎস মুখেতে শুনি এ সব ভারতী।
এস্ত হয়ে বাহুরাজ উঠে শীঘ্রগতি।।
যোড়হাত করি রাজা করেন স্তবন।
ক্ষমহ আমার দোষ, অজ্ঞাত কারণ।।
শুভক্ষণে ভদ্রাকন্যা কুলে উপজিল।
তাহার কারণে তোমা দরশন হৈল।।
সার্থক সেবিল গৌরী আমার নন্দিনী।
এতদিনে আপনাকে ধন্য বলে মানি।।
ধন্য মোর কুলে ভদ্রা তনয়া হইল।
ঘরে বসি তোমা হেন রত্ন মিলাইল।।
এত দিন আছিলাম হইয়া অস্থির।
অমৃতাভিষিক্ত আজি হইল শরীর।।
পূর্ব্বজন্মার্জ্জিত পুণ্য কতেক আছিল।
সেই ফলে ভদ্রা কন্যা তোমারে পাইল।।
কাতর হইয়া রাজা পড়িল ধরণী।
শ্রীবৎস কহিছে, তব শুন মম বাণী।।
লঘুজনে এতাদৃশ নহে ত উচিত।
শীঘ্র করি মহারাজ চিন্ত মম হিত।।
নৌকাপরে চিন্তা মম আছেন বন্ধন।
শীঘ্র করি তারে রাজা করহ মোচন।।
শুনি বাহু নরপতি উঠে শীঘ্রগতি।
পাত্র মিত্রগণ সবে চলিল সংহতি।।
নদীতীরে গিয়া দেখে নৌকার উপরে।
চিন্তাদেবী আছে তথা কাতর অন্তরে।।
কহিতে লাগিল রাজা চিন্তাদেবী প্রতি।
দুঃখকাল গেল মাতা, উঠ শীঘ্রগতি।।
তোমার বিচ্ছেদ দুঃখী শ্রীবৎস রাজন।
উঠ মাতা, দোঁহে গিয়া কর গো মিলন।।
জরাযুত চিন্তা অঙ্গ দেখিয়া রাজন।
জিজ্ঞাসিল চিন্তা প্রতি তার বিবরণ।।
পলিত গলিত কেন পতিব্রতা দেহ।
জয়াযুত অঙ্গ কেন বিস্তারিয়া কহ।।
শুনি চিন্তা ধীরে ধীরে কহে মৃদুভাষে।
জরাযুত অঙ্গ কথা শুন ইতিহাসে।।
এই সদাগর যায় বাণিজ্য করিতে।
আটক হইল তরী দৈবের দোষেতে।।
হেনকালে দৈবজ্ঞ এক আসিল তথা।
সদাগর পুছে দৈবজ্ঞ তরীর কথা।।
দৈবজ্ঞ কহে, সতী হইবে যে রমণী।
সে স্পর্শিলে তরী তবে উঠিবে এখনি।।
কাঠুরে রমণীগণ যতেক আছিল।
ক্রমে ক্রমে সদাগর সবে আনাইল।।
সকলে ছুঁইল তরী, না হৈল উদ্ধার।
পশ্চাতে আমারে গিয়া ডাকে বারবার।।
বিস্তর বিনয় করি আমারে কহিল।
কাতর দেখিয়া মোর দয়া উপজিল।।
দয়া করি উদ্ধারিয়া দিনু যদি তরী।
দুষ্ট দুরাচার চিত্তে দুষ্টবুদ্ধি করি।।
আমাকে তুলিয়া নিল নৌকার উপর।
ভয় পেয়ে মম অঙ্গ কাঁপে থর থর।।
অতি ভয়ে সূর্য্যদেবে করিলাম স্তুতি।
স্তবে তুষ্ট হইলেন সূর্য্য মম প্রতি।।
আমি কহিলাম, দেব মোর রূপ লহ।
জরাযুত অঙ্গে এবে মোরে দান দেহ।।
স্তবে তুষ্ট হয়েবর দিল সেইক্ষণ।
মায়া অঙ্গ দিয়া মোরে কহিল তখন।।
স্মরণ করিবামাত্র নিজরূপ পাবে।
চিন্তা না করিহ চিন্তা মাহরাণী হবে।।
দৈবগ্রহ ঘুচিলে পাইবে নৃপবর।
কিছুদিন শুদ্ধচিত্তে ভাবহ ঈশ্বর।।
শুন মহারাজ মম জরার ভারতী।
দুঃখ শুনি কান্দে তবে বাহু নরপতি।।
তুমি সতী পতিব্রতা, পতি অনুরতা।
ত্রিভুবন তব গুণ স্মরিবেক মাতা।।
সূর্য্যের চিন্তায় চিন্তা নিজরূপ পাইল।
যেমন পূর্ব্বের রূপ তেমতি হইল।।
রাজা কহে, চতুর্দ্দোল আন শীঘ্রগতি।
চিন্তা কহে, চল যাই প্রভুর বসতি।।
এত বলি পদব্রজে চলিলেন সতী।
যথায় উদ্বেগ চিত্ত শ্রীবৎস নৃপতি।।
নিকটেতে গিয়া চিন্তা প্রদক্ষিণ করে।
প্রণিপাত করি কহে স্বামী বরাবরে।।
দেখি তবে আস্তে ব্যাস্তে উঠিয়া রাজনে।
বামপার্শ্বে বসাইল নিজ সিংহাসনে।।
চিরদিন বিচ্ছেদেতে ছিল দুই জন।
দোঁহার মিলনে দোঁহে আনন্দিত মন।।
প্রেমাবেশে অবসন্ন হৈল দুই জন।
পুনঃ পুনঃ আলিঙ্গন বদন চুম্বন।।
বিনোদ শয্যায় রাজা করিল শয়ন।
চিন্তা ভদ্রা পদ সেবা করে দুই জন।।
নানা হাস্যে নানা রসে শ্রীবৎস রাজন।
অতি আনন্দেতে করে নিশা সমাপন।।
প্রভাত সময়ে বার দিয়া বাহু রাজা।
শ্রীবৎস চিন্তারে তবে করে বহু পূজা।।
আনন্দেতে সভাতলে বসে সর্ব্বজন।
নানা শাস্ত্র আলাপন করে জনে জন।।
পুণ্যশ্লোক শ্রীবৎস চিন্তা মিলন-কথা।
শ্রীব্যাসদেব বিরচিত অপূর্ব্ব গাথা।।
কাশীরাম দাস রচে পয়ার প্রবন্ধে।
ভক্তিতে শুনিলে দিব্যচক্ষু লভে অন্ধে।।
২৩. স্বরূপ মূর্ত্তিতে শনির আবির্ভাব
ও শ্রীবৎস রাজাকে বরদান
প্রভাতে বাহুক রাজা, লইয়া যতেক প্রজা,
বসিয়াছে সানন্দ বিধানে।
এ হেন সময় শনি, করিছে আকাশবাণী,
শুন সভাপাল সর্ব্বজনে।।
দেবতা গন্ধর্ব্ব যক্ষ, সকলি আমার পক্ষ,
সকলে আমারে শ্রেষ্ঠ জানে।
বিদ্যাধরী বিদ্যাধর, রাক্ষস কিন্নর নর,
সবে মানে, শ্রীবৎস না মানে।।
মনুষ্য হইয়া মোরে, অত্যন্ত অবজ্ঞা করে,
কত সব অবজ্ঞা তাহার।
সুরাসুর যারে ডরে, মনুষ্য অবজ্ঞা করে,
বুঝে সবে করিয়া বিচার।।
কহিতে কহিতে শনি, আইল মরতভূমি,
যথা সভামধ্যে সর্ব্বজন।
আরক্ত লোচন পিঙ্গ, মহাজ্যোতি কৃষ্ণ অঙ্গ,
পরিধান সুরক্ত বসন।।
তেজোময় দেখি আভা, উজ্জ্বল হইল সভা,
অতি ভয় পায় সভাজন।
আস্তে ব্যস্তে সর্ব্বজনে, দাণ্ডাইল বিদ্যামানে,
স্তব করে শ্রীবৎস রাজন।।
তুমি সকলের সার, তোমা বিনা নাহি আর,
ত্রিভুবনে করয়ে পূজন।
সর্ব্ব ঘটে ভুঞ্জ তুমি, তুমি সকলের স্বামী,
নবগ্রহরূপী জনার্দ্দন।।
আমি মূর্খ মুঢ় জন, কি জানি তোমার গুণ,
জ্ঞানহীন তোমারে না চিনি।
বারেক করহ দয়া, ত্যজিয়া কপট মায়া,
বরদাতা হও মহামানী।।
এরূপে শ্রীবৎস ভূপ, স্তব করে বহুরূপ,
স্তবে তুষ্ট হয়ে শনি কয়।
শুন ওহে মহারাজা, করহ আমার পূজা,
আর তব নাহি কিছু ভয়।।
দেশে যাহ নরবর, একচ্ছত্রে রাজ্যেশ্বর,
রবে দশ হাজার বৎসর।
পুত্র পাবে শত জন, কন্যারত্ন মহাধন,
অন্তেবাস বৈকুন্ঠ নগর।।
মম সহ করি বাদ, হৈল তব এ প্রমাদ,
পৃথিবীতে রহিল ঘোষণ।
যে তোমার নাম লবে, তার মনোব্যথা যাবে,
শুন ওহে শ্রীবৎস রাজন।।
শ্রীবৎসেরে দিয়া বর, অন্তর্দ্ধান শনৈশ্চর,
চলিলেন আপন ভবনে।
ভবার্ণবে ভয় বাসি, বন্দনা করিল কাশী,
বনপর্ব্বে শ্রীবৎস রাজনে।।
২৪. দুই রাজ্ঞী সহ শ্রীবৎস রাজার
স্বরাজ্যে গমন
যুধিষ্ঠির জিজ্ঞাসেন, কহ গদাধর।
বরদাতা হয়েশনি গেল অতঃপর।।
তদন্তরে বাহু রাজা শ্রীবৎস নৃপতি।
কি করিল বিস্তারিয়া কহ লক্ষ্মীপতি।।
মাধব কহেন, রাজা কর অবধান।
বর দিয়া শান যদি গেল নিজ স্থান।।
আনন্দিত বাহু রাজা পুত্রের সহিত।
নট নটী আনাইয়া গাওয়াইল গীত।।
নানা বাদ্য মহোৎসব প্রতি ঘরে ঘরে।
হাস্য পরিহাসে কেহ পাশাক্রীড়া করে।।
অস্ত্র লোফালুফি করে, ধানুকী তবকী।
কেহ ভোজ বিদ্যা খেলে চক্ষে দিয়া ফাঁকি।।
বাদ্য অন্বেষণ কেহ করে কোন স্থানে।
কেহ নাচে, কেহ গায়, আনন্দ বিধানে।।
রোপাইল সারি সারি গুবাক কদলী।
চন্দনের ছড়া দিয়া নাশিলেক ধূলি।।
দিব্য রত্ন অলঙ্কারে বেশ ভূষা করে।
অগুরু চন্দন চূয়া পুষ্পমালা পরে।।
যতনে পরয়ে কেহ উত্তম বসন।
কোন ‍নারী ত্বরা করি করিল রন্ধন।।
চর্ব্ব চুষ্য লেহ্য পেয় করি আয়োজন।
কোন কোন স্থানে হয় ব্রাহ্মণ ভোজন।।
নগরের মধ্যে এই হইল ঘোষণ।
মালিনীর গৃহে ছিল শ্রীবৎস রাজন।।
ধন্য বাহুরাজ ঘরে ভদ্রা জন্মেছিল।
যাহা হতে বাহুরাজা শ্রীবৎস পাইল।।
এইরূপে মহানন্দে রহে সর্ব্বজন।
কত দিন বঞ্চে তথা শ্রীবৎস রাজন।।
একদিন প্রভাতে করিয়া স্নান দান।
যান রাজা সানন্দে শ্বশুর সন্নিধান।।
করযোড়ে করি কহে শ্রীবৎস রাজন।
অবধান কর রায় মোর নিবেদন।।
আজ্ঞা কর নিজ দেশে করিব গমন।
বহুদিন দেখি নাই জ্ঞাতি বন্ধুগণ।।
বাহুরাজা কহে বাপু কি কথা কহিলে।
পূর্ব্ব পুণ্যফলে বিধি তোমারে মিলালে।।
এই রাজ্যে রাজা তাত হইবে আপনি।
কি কারণে হেন কথা কহ নৃপমণি।।
রাজা কহে, যত কহ স্নেহের কারণ।
অদ্য আমি নিজ রাজ্যে করিব গমন।।
নিশ্চয় বুঝিয়া মন বাহু নৃপবর।
সারথিরে আজ্ঞা তবে করিল সত্বর।।
আজ্ঞামাত্র সারথি চলিল শীঘ্রগতি।
রথ সাজি সেইক্ষণে আনিল সারথি।।
রাজা বলে, সৈন্যগণ সাজ সর্ব্বজন।
শ্রীবৎস কহিল রায় নাহি প্রয়োজন।।
দক্ষিণ সমুদ্র পারে আমার বসতি।
সৈন্য সেনা কেমনে যাইবে ঘোড়া হাতী।।
রাজা বলে কেমনে যাইবে তুমি তথা।
শ্রীবৎস বলিল, রাজা উপায় দেবতা।।
তাল বেতালের রাজা করিল স্মরণ।
স্মরণমাত্রেতে তারা আসে দুই জন।।
হাসিয়া কহিল দোঁহে কি আজ্ঞা করহ।
শ্রীবৎস কহিল, মোরে নিজ রাজ্যে লহ।।
শ্বশুরে প্রণাম করি উঠে রথোপরে।
চিন্তা ভদ্রা বলি নৃপ ডাকিল সত্বরে।।
দোঁহে বাহুরাজ পদে বিদায় মাগিল।
চিন্তা ভ্রদা দোঁহে আসি রথে আরোহিল।।
চূড়ায় বসিল তাল বেতাল সারথি।
বায়ুবেগে যায় রথ সুললিত গতি।।
নিমেষেতে দশ হাজার যোজন যান।
রাজা কহে, কহ তাল এই কোন্ স্থান।।
তাল কহে, এই দেখ সুরভি আশ্রম।
কহিতে কহিতে পায় কাঠুরে ভবন।।
তাল কহে, মহারাজ কর অবধান।
পোড়া মৎস্য জলে গেল, দেখ সেই স্থান।।
ভাঙ্গা নায় শনি আসি কাঁথা হরে নিল।
নিমেষেতে সেই স্থান পশ্চাৎ হইল।।
ক্রমেতে পাইল আসি আপন ভবন।
তাল কহে, নিজ রাজ্যে আইলা রাজন।।
রথ হৈতে রাজা রাণী নামি তিন জন।
পদব্রজে ধীরে ধীরে করেন গমন।।
শুনিল নগরলোক আইল রাজন।
মত শরীরেতে যেন পাইল জীবন।।
বাম পার্শ্বে দুই রাণী সিংহাসনে রাজা।
পাত্র মিত্র সবে আসি করিলেক পূজা।।
পূর্ব্বের সুহৃদ বন্ধু যতেক আছিল।
ক্রমেতে আসিয়া সবে একত্র হইল।।
বান্ধব সানন্দ, নিরানন্দ রিপুগণ।
পূর্ব্বমত রাজা রাজ্য করেন শাসন।।
চিন্তা ভদ্রা দুই রাণী পরম সুশীলা।
ক্রমে ক্রমে শত পুত্র দোঁহে প্রসবিলা।।
দুই রাণী গর্ভে জন্মে দুই কন্যা ধন।
অমৃতেতে অভিষ্ক্তি হইল রাজন।।
বহুকাল রাজ্য করে শ্রীবৎস রাজন।
ধর্ম্ম কর্ম্ম করে যত না যায় বর্ণন।।
রাজসূয় অশ্বমেধ করে বার বার।
দানেতে দরিদ্র কেহ না রহিল আর।।
দীর্ঘকাল রাজ্য করি পরম কৌতুকে।
অন্তকালে রাণী সহ গেল বিষ্ণুলোকে।।
অতএব যুধিষ্ঠির করি নিবেদন।
দৈবাধীন কর্ম্মে শোক করা অকারণ।।
শ্রীবৎস চরিত্র আর শনির মাহাত্ম্য।
যেবা শুনে, যেবা পড়ে সে হয় পবিত্র।।
কদাচ শনির কোপ তাহারে না হয়।
শাস্ত্রের বচন এই নাহিক সংশয়।।
যে জন শনির ধ্যান করে বারো মাস।
বিপদ না হয় তার কহে কাশীদাস।।
২৫. শ্রীকৃষ্ণের দ্বারকায় প্রস্থান
এত বলি জগন্নাথ মাগেন মেলানি।
সবারে সম্ভাষ করিলেন চক্রপানি।।
সুভদ্রা সৌভদ্র দোঁহে সঙ্গেতে করিয়া।
দ্বারকা গেলেন হরি রথ চালাইয়া।।
ধৃষ্টদ্যুন্ন লয়ে ভাগিনেয় পঞ্চজন।
সসৈন্যে পাঞ্চাল দেশে করিল গমন।।
আর যেই দুই ভার্য্যা পাণ্ডবের ছিল।
নিজ নিজ ভ্রাতৃসহ ভ্রাতৃদেশে গেল।।
পুণ্যকথা ভারতের শুনে পুণ্যবান।
পৃথিবীতে সুখ নাহি ইহার সমান।।

বেদ সম্পর্কে সামান্য ধারণা

শ্রীমদ্ভগবতগীতার সম্পূর্ণ শ্লোকের অর্থ

বিবিধ


মহাভারতের প্রধান প্রধান চরিত্র