দ্রৌপদী

দ্রৌপদী : পাঞ্চালরাজ দ্রুপদের যজ্ঞবেদী হতে উদ্ভূতা কন্যা। দ্রোণ বধের জন্য পুত্রলাভেচ্ছায় দ্রুপদ যখন গঙ্গা ও যমুনার তীরে যাজ ও উপযাজ নামে দুই ব্রাহ্মণের দ্বারা পুত্রলাভের আশায় যজ্ঞ করেন, তখন যজ্ঞাগ্নি হতে দ্রোণহন্তা ধৃষ্টদ্যুম্ন উঠে আসেন। সাথে সাথে যজ্ঞবেদী হতে যাজ্ঞসেনী আজন্ম যুবতী, শ্যমবর্ণা, পদ্মপলাশলোচনা, নীল ও কুঞ্চিত কেশকলাপভূষিতা এক নারীর আর্বিভাব হয়। তিনিই মহাভারতে দ্রৌপদী নামে অভিহিত। এদের জন্মকালে আকাশবাণী হয় যে, ধৃষ্টদ্যুম্ন দ্রোণ বধ করবেন ও যাজ্ঞসেনী ক্ষত্রিয়গণের কুলক্ষয় ও দেবতাদের মহৎ কর্ম সাধন করবেন ও এর দ্বারা কৌরবকূল বিনষ্ট হবে। দ্রৌপদীর অন্য নাম পঞ্চালী(পাঞ্চাল রাজ কন্যা বলে), কৃষ্ণা(কৃষ্ণ বর্ণ বলে), সৈরিন্ধ্রী ও নিত্য-যৌবনা বেদিজা। অর্জুনকেই কন্যাদানের ইচ্ছা ছিল বলে দ্রুপদ এক কৃত্রিম আকাশযন্ত্র ও এক দুর্জয় ধনু নির্মাণ করেন। ঘোষণা করেন, যে ব্যক্তি এ ধনুতে য্যা যোজনা করে যন্ত্রের মধ্যে পঞ্চবাণ দিয়ে লক্ষ্য ভেদ করতে পারবেন, তিনিই দ্রৌপদীকে লাভ করবেন। জতুগৃহ থেকে উদ্ধার হয়ে অতি গোপনে ব্রহ্মচারীর বেশ ধরে পান্ডবগণ দ্রৌপদীর স্বয়ংবর সভায় উপস্থিত হন। অনেক ক্ষত্রিয় রাজারা ধনুতে জ্যা সংযোজন করতে ব্যর্থ হন। মহাবীর কর্ণ অগ্রসর হয়ে অতি সহজেই ধনুতে জ্যা যোজনা করেন এবং লক্ষভেদের প্রাক্কালে দ্রৌপদী বলেন,“সূতপুত্রকে বিবাহ করবেন না।” কর্ণ ক্রুধে ধনু রেখে প্রস্থান করেন। কৃষ্ণের অনুমতি নিয়ে অর্জুন ধনুতে জ্যা যোজনা করে লক্ষ্যভেদ করে দ্রৌপদীকে লাভ করেন। দ্রৌপদীকে নিয়ে পান্ডবরা গৃহে প্রবেশকালে মাতাকে বলেন যে,“ তারা অপূর্ব এক জিনিস নিয়ে এসেছেন।” মাতা গৃহ থেকে উত্তর দেন,“ তোমরা পঞ্চ পান্ডব তা ভাগ করে নাও।” তারপর গৃহের বাহিরে এসে দ্রৌপদীকে দেখে মাতা কুন্তি বিহ্বল ও বিব্রত হন। মায়ের আজ্ঞা পালন করতে যেয়ে ব্যাসদেবের বিধান মতে পঞ্চ পান্ডবের সাথে দ্রৌপদীর বিবাহ দেয়া হয়। ব্যাস বলেন (রাম সীতাকে নিয়ে বনবাসে যাওয়ার সময় অগ্নিদেব বলেন,“প্রক্তনকার্য দুর্নিবার্য। আপনি সীতাদেবীরক গোপনে রক্ষা করবেন। কারণ ৭ দিনের মধ্যে রাবণ সীতেক হরণ করবেন।” তখন রামের অনুরোধে অগ্নি সীতাকে নিয়ে যান এবং ছায়া-সীতা রামের সাথে বসবাস করবে। রাবণ ছায়া-সীতাকেই হরণ করেন। সীতার অগ্নিপরীক্ষার সময়ও অগ্নি ছায়া-সীতাকে রক্ষা করে সীতাকে ফিরিয়ে দেন। ছায়া-সীতা নারায়ন সরোবরে একশত বছর মহাদেবের তপস্যা করে মহাদেবকে সন্তষ্ট করেন। তখন মহাদেব তাকে বর দিতে চান। তখন ছায়া পাঁচবার স্বামী প্রার্থনা করেন। মহাদেব বলেন,“তুমি পাঁচবার স্বামী প্রার্থনা করেছে, সে কারণে হরির অংশস্বরূপ পঞ্চ ইন্দ্রি তোমার স্বামী হবেন। তারা এখন পঞ্চপান্ডব নামে খ্যাত।” পরে এ ছায়া রাজা দ্রুপদের যজ্ঞকুন্ড হতে উদ্ভূত হয়ে দ্রৌপদী নামে খ্যাত হন। তিনিই সত্যযুগে বেদবতী, ত্রেতাযুগে সীতা এবং দ্বাপরযুগে দ্রৌপদী। সূত্র-ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ )।

পান্ডবরা ইন্দ্রপ্রস্থে বাসকালে নারদ মুনি তথায় উপস্থিত হলে; নারদ মুনির বিধান অনুসারে দ্রৌপদী এক বছর করে একজন পান্ডবের সাথে বাস করবেন। এর অন্যথা হলে ১২ বছর বনবাসী হতে হবে। ঘটনাক্রমে অর্জুন একবার যুধিষ্ঠির ঘরে ঢুকে পড়েন। অর্জুনকে ১২ বছর ব্রহ্মচারী হয়ে থাকতে হয়েছে। কিছুদিন পরেই অর্জুন সুভদ্রাকে বিবাহ করেন। পঞ্চপান্ডবদের ঔরসে প্রতিবিদ্ধ্য, সুতসোম, শ্রুতকর্মা, শতানীক ও শ্রুতসেন নামে পাঁচ পুত্রের জন্ম হয়।

দ্যুতক্রীড়ায় শকুনির ছলনায় যুধিষ্ঠির সর্বশান্ত হন। সবশেষে শকুনির তিরস্কারে দ্রৌপদীকে দ্যূতক্রীড়ায় পণ রেখে তাকেও হারান। অক্ষক্রীড়ার পণ অনুযায়ী নিজেরাও শকুনি কর্তৃক বিজিত হন। দুর্যোধনের আদেশে ভ্রাতা দু:শাসন দ্রৌপদীকে চুলের মুঠি ধরে টেনে হিঁচড়ে দ্যুত সভায় নিয়ে আসেন। মহাবীর কর্ণের ইঙ্গিতেই দু:শাসন দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ করতে উদ্যত হন। দ্রৌপদীর কাতর প্রার্থনায় বাসুদেব শ্রীকৃষ্ণ তার অন্তরঙ্গা শক্তির প্রভাবে শত শত কাপড় দিয়ে দ্রৌপদীকে আবৃত করে রাখেন। দু:শাসন হাজার চেষ্টা করেও দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ করতে পারেনি। দুর্যোধন দ্রৌপদীকে বাম উরু দেখিয়ে অপমান করেন। তখন ভীম তার উরু ভাঙ্গার এবং দু:শাসনের রক্ত পান করার প্রতিজ্ঞা করেন। এদিকে দ্রৌপদীও প্রতিজ্ঞা করেন যে পর্যন্ত না ভীম দু:শাসনের রক্তে তার কেশ বন্ধনে সাহায্য না করে ততদিন তিনিও কেশ বন্ধন করবেন না। ঘটনার পরম্পরা আঁচ করতে পেরে রাজা ধৃতরাষ্ট্র বিচলিত হয়ে পড়েন এবং দ্রৌপদী ও পঞ্জপান্ডবদের মুক্তির আদেশ দেন।

আবারও সে অনর্থ। শকুনি ও দূর্যোধনের পরামর্শে যুধিষ্ঠির দ্যুতক্রীড়ায় অংশ গ্রহণ করে পরাজিত হয়ে দ্রৌপদীসহ পঞ্চপান্ডব বার বছরের বনবাস ও এক বছরের অজ্ঞাতবাসের জন্য যাত্রা করেন। বনবাসে যাওয়া প্রাক্কালে সূর্যদেব দ্রৌপদীকে একটি তাম্রপাত্র দেন। পাত্রের গুণ হচ্ছে দ্রৌপদী এ পাত্রে রান্না করে যতক্ষণ অভুক্ত থাকবে ততক্ষণ অতিথি সেবা করতে পারবেন। দুর্যোধনের সেবায় সন্তষ্ট হয়ে দূর্বাসা তাকে বর দিতে চাইলে দূর্যোধন বলেন, দ্রৌপদীর আহারের পর কাম্যকবনে উপস্থিত হয়ে দশ হাজার শিষ্য নিয়ে পান্ডবদের আতিথ্য গ্রহণ করেন। দূর্বাসা কাম্যকবনে উপস্থিত হয়ে আতিথ্য গ্রহণ করেন। ততক্ষণে দ্রৌপদীর আহার সমাপ্ত হয়েছে। দূর্বাসা মুনি সম্পর্কে দ্রৌপদী জানতেন। তার অভিশাপে পান্ডববংশ ভস্মীভূত হবে। উপায়ন্তর না দেখে অগতির গতি বাসুদেব কৃষ্ণের প্রার্থনায় রত হন। বাসুদেব দ্রৌপদীর প্রার্থনায় সাড়া দিয়ে তথায় উপস্থিত হন। দ্রৌপদী কৃষ্ণকে সমস্ত ঘটনা বলেন। তখন বাসুদেব কৃষ্ণ দ্রৌপদীকে তার তাম্রপাত্রটি আনতে বলেন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ পাত্রটি অন্বেষণ করে একটি খাবারের কণা পান। কৃষ্ণ তাই আহার করে বলেন বিশ্বাত্মা যেনে এতে তৃপ্ত হন। স্নানরত দূর্বাসা মুনিসহ শিষ্যদের উদর ভর্তি হয়ে যায়। দূর্বাসা মুনি লজ্জিত হয়ে পান্ডবদের সাথে দেখা না করেই চলে যান।

দ্রৌপদী সীতা-সাবিত্রীর শ্রেণীতে স্থান পাননি, তিনি নিত্য স্মরণীয়া পঞ্চকন্যার একজন। দ্রৌপদী সর্ব বিষয়ে অসামান্যা, প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্যে অন্য কোনও নারী তাঁর তুল্য জীবন্ত রূপে চিত্রিত হননি। তিনি অতি রূপবতী কিন্তু শ্যামাঙ্গী সেজন্যে তাঁর নাম কৃষ্ণা। বার বৎসর বনবাস প্রায় শেষ হয়ে এলে সিন্ধুরাজ জয়দ্রথ তাঁকে হরণ করতে আসেন। তখন বয়সের হিসাবে দ্রৌপদী যৌবনের শেষ প্রান্তে এসেছেন, তিনি পঞ্চ বীর পুত্রের জননী, তারা দ্বারকায় অস্ত্রশিক্ষা করছে। তথাপি জয়দ্রথ তাঁকে দেখে বলেছেন,“একে পেলে আমার আর বিবাহের প্রয়োজন নেই, এ নারীকে দেখে মনে হচ্ছে অন্য নারীরা বানরী।”

দ্রৌপদী যখন বিরাট ভবনে সৈরিন্ধ্রীরূপে এলেন তখন রাজমহিসী সুদেষ্ণা তাঁকে দেখে বললেন,“তোমার করতল, পদতল ও ওষ্ঠ বক্তবর্ণ, তুমি হংসগদগদভাষিণী, সুকেশী, সুস্তনী,...কাশ্মীরী তুরঙ্গমীর ন্যায় সুদর্শনা। রাজা যদি তোমাকে দেখে লুদ্ধ না হন তবে তোমাকে মাথায় করে রাখব। এ রাজভবনে যে সকল নারী আছে তারা এক দৃষ্টিতে তোমাকে দেখছে পুরুষরা মোহিত হবে না কেন? সুন্দরী, তোমার অলৌকিক রূপ দেখে বিরাট রাজা আমাকে ত্যাগ করে সর্বান্ত:করণে তোমাতেই আসক্ত হবেন।”

অজ্ঞাতবাসের দশ মাস অতিক্রান্ত হয়েছে। একদিন বিরাট সেনাপতি ও সুদেষ্ণার ভ্রাতা কীচক বিরাট ভবনে দ্রৌপদীকে দেখে তাকে পাবার ইচ্ছা প্রকাশ করেন এবং দ্রৌপদীর রূপ দেখে রাজা বিরাট পাছে তার প্রতি আকৃষ্ট হন সে কারণে সুদেষ্ণাও কীচককে অনুপ্রাণিত করছিল। একদিন কোন এক পর্ব উপলক্ষে সুদেষ্ণা দ্রৌপদীকে কীচকের ভবনে প্রেরণ করলে কীচক দ্রৌপদীকে স্পর্শ করেন। দ্রৌপদী কীচকে সজোরে ধাক্কা মেরে বিরাটের রাজ সভায় উপস্থিত হন। সাথে সাথে কীচকও সভায় উপস্থিত হয়ে দ্রৌপদীর কেশাকর্ষণ করে পদাঘাত করেন। কিন্তু বিরাট কীচকের ভয়ে ও পান্ডবদের পরিচয় প্রকাশ হয়ে যাওয়ার ভয়ে নিরবতা পালন করেন। দ্রৌপদী এ অপমানের প্রতিশোধ নেয়ার জন্য ভীমকে অনুপ্রাণিত করেন এবং ভীম কীচককে হত্যা করেন। কীচকের মৃতদেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার সময় কীচকের ভ্রাতৃদ্বয় দ্রৌপদীকে দেখে জোরপূর্বক শ্মশানে নিয়ে একই চিতায় দগ্ধ করার জন্য। দ্রৌপদী পান্ডবদের ছদ্মনামে চিৎকার করে ডাকতে থাকলে ভীম সে ডাক শুনে শ্মশানে উপস্থিত হয়ে সমূলে বৃক্ষ উৎপাটন করে কীচক ভ্রাতৃদ্বয়কে বধ করেন। এ ঘটনায় সকলেই ভীত হয়ে পড়ে এবং সুদেষ্ণা দ্রৌপদীকে বিরাট ভবন ত্যাগ করার জন্য বলেন। অজ্ঞাতবাস শেস হওয়ার তখন মাত্র তের দিন থাকার জন্য দ্রৌপদী সুদেষ্ণাকে অনেক অনুরোধ করেন।

কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের প্রাক্কালে কৃষ্ণ যখন পান্ডবদের মতামত গ্রহণ করছিলেন তখন দ্রৌপদী কৌরবগণের অপমানের কথা স্মারণ করিয়ে দেন এবং বলেন দু:শাসনের বাহু ছিন্ন না হওয়া পর্যন্ত তার শান্তি নেই।

কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ শেষ। একদিন অশ্বত্থামা কৃপাচার্য ও কৃতবর্মার সহায়তায় পান্ডব শিবিরে প্রবেশ করে দ্রৌপদীর পাঁচপুত্রসহ পান্ডব সেনাদের হত্যা করেন। পুত্রদের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে দ্রৌপদী যুধিষ্ঠিরের নিকট এসে প্রায়োপবেশনে প্রাণত্যাগ করতে কৃতসংকল্প হন। যুধিষ্ঠির তাকে ধৈর্য ধরতে বলেন। দ্রৌপদী বলেন অশ্বত্থামাকে হত্যা করে তার মাথার মণি এনে দিলেই তবেই তার শোক সংবরণ হবে। তখন পান্ডব ও কৃষ্ণ অশ্বত্থামার ব্রহ্মশির অস্ত্রের কথা স্মরণ করে তাকে অনুসরণ করেন এবং তাকে হত্যা করে মাথার মণি নিয়ে আসেন।

তিনি অসহিষ্ণু, তেজস্বিনী, স্পষ্টবাদিনী, তীক্ষ্ম বাক্যে নিষ্ক্রিয় পুরুষদের উত্তেজিত করতে পারেন। তার ভিতরে প্রতিশোধ স্পৃহাও ছিল। তাঁর বাগ্মিতার পরিচয় অনেক স্থানে পাওয়া যায়। বনপর্ব ৫ পরিচ্ছদ, উদ্যোগপর্ব ১০ পরিচ্ছদ এবং শান্তিপর্ব ২ পরিচ্ছদে দ্রৌপদীর খেদ ও ভৎসনার যে নাটকীয় বিবরণ আছে তা সর্ব সাহিত্যে দুর্লভ। বহু কষ্ট ভোগ করে তাঁর মন তিক্ত হয়ে গেছে, মঙ্গলময় বিধাতায় তাঁর আস্থা নেই। বনপর্ব ৭ পরিচ্ছেদে তিনি যুধিষ্ঠিরকে বলেছেন,“ মহারাজ, বিধাতা প্রাণিগণকে মাতা-পিতার দৃষ্টিতে দেখে না, তিনি রুষ্ট ইতরজনের ন্যায় ব্যবহার করেন।” দ্রৌপদী মাঝে মাঝে তাঁর পঞ্চ স্বামীকে বাক্যবাণে পীড়িত করেন, স্বামীরা তা নির্বিবাদে সয়ে যান। তাঁরা দ্রৌপদীকে সম্মান ও সমাদর করেন। বিরাটপর্বে যুধিষ্ঠির বলেছেন,“আমাদের এ ভার্যা প্রাণাপেক্ষা প্রিয়া, মাতার ন্যায় পালনীয়, জ্যেষ্ঠা ভগিনীর ন্যায় রক্ষণীয়া।” দ্রৌপদী পাঁচ স্বামীকেই ভালবাসেন। কিন্তু তাঁর ভালবাসার কিছু প্রকারভদ দেখা যায়। যুধিষ্ঠির তাঁকে অনেক জ্বালিয়েছেন, তথাপি দ্রৌপদী তাঁর জ্যেষ্ঠ স্বামীকে ভক্তি করেন, অনুকম্পা ও কিঞ্চিৎ অবজ্ঞাও করেন, ভাল মানুষ অবুঝ একগুঁয়ে গুরুজনকে লোকে যেমন করে থাকে। বিপদের সময় দ্রৌপদী ভীমের উপরেই বেশী ভরসা রাখেন এবং শক্ত কাজের জন্য তাঁকেই বলতেন। নকুল-সহদেবকে তিনি দেবরের ন্যায় স্নেহ করতেন। অর্জুন তাঁর প্রথম অনুরাগের পাত্র। পরেও বোধ হয় অর্জুনের উপরেই তাঁর প্রকৃত প্রেম ছিল। মহাপ্রস্থানিকপর্বে যুধিষ্ঠির বলেছেন,“ধনঞ্জয়ের ‍উপর এঁর বিশেষ পক্ষপাত ছিল।” অর্জুন কিছুকাল উলুপী ও চিত্রাঙ্গদার সঙ্গে কাটিয়েছিলেন; দ্রৌপদী তা গ্রাহ্য করেননি। কিন্তু অর্জুন যখন রূপবতী সুভদ্রাকে ঘরে আনলেন তখন দ্রৌপদী অতি দু:খে বললেন,“কৌন্তেয়, তুমি সুভদ্রার কাছেই যাও, পুনর্বার বন্ধন করলে পূর্বের বন্ধন শিথিল হয়ে যায়।” ‍দ্রৌপদীর একটি বৈশিষ্ট- কৃষ্ণের সহিত তাঁর স্নিগ্ধ সম্বন্ধ। তিনি কৃষ্ণের সখী এবং সুভদ্রার ন্যায় স্নেহভগিনী, সকল সংকটে কৃষ্ণই তাঁর শরণ্য ও স্মরণীয়
সূত্রঃ মহাভারত ও বিভিন্ন পৌরাণিক উপখ্যান অবলম্বনে।

বেদ সম্পর্কে সামান্য ধারণা

শ্রীমদ্ভগবতগীতার সম্পূর্ণ শ্লোকের অর্থ

বিবিধ


মহাভারতের প্রধান প্রধান চরিত্র