মহাভারত:বনপর্ব-০৫১-০৫৫

৫১. দময়ন্তীর পুনঃ স্বয়ম্বর শ্রবণে
ঋতুপর্ণের বিদর্ভ যাত্রা ও
নলের দেহ হইতে কলি ত্যাগ
তবে বহু দিনেতে পর্ণাদ নামধর।
দময়ন্তী নিকটে কহিল দ্বিজবর।।
ভ্রমিলাম বহু রাজ্য, কত লব নাম।
ঋতুপর্ণ নামে রাজা অযোধ্যায় ধাম।।
যেমন বলিলে তুমি, শানাইনু তায়।
না করিল প্রত্যুত্তর ঋতুপর্ণ রায়।।
সভায় বসিয়া যারা করিল শ্রবণ।
উত্তর না প্রদানিল মোরে কোন জন।।
বাহুক নামেতে এক রাজার সারথি।
বিনা অগ্নি পাক করে বিকৃত আকৃতি।।
শুনিয়া কহিল মোরে সকরুণ ভাষে।
কেমন আছে ভৈমী পুনঃ পুনঃ জিজ্ঞাসে।।
পশ্চাৎ আমারে সেই করিল উত্তর।
কুলস্ত্রীর ধর্ম্ম এই, শুন দ্বিজবর।।
সতী সাধ্বী পতিব্রতা নারী বলি তারে।
কদাচ পতির দোষ প্রকাশ না করে।।
মূর্খ কিম্বা ধনহীন যদি হয় পতি।
অধর্ম্ম অসৎ কর্ম্ম করে নিতি নিতি।।
সতী নারী পতি দোষ কখন না ধরে।
সে দোষ ঢাকিয়া পুনঃ গুণ ব্যক্ত করে।।
সার ধর্ম্ম হয় তার, এই সে বিধান।
স্বামী হৈতে অতি কষ্ট নারী যদি পান।।
তথাপি স্বামীর নিন্দা কদাচ না করে।
নিজকর্ম্ম নিন্দে কিম্বা নিন্দে আপনারে।।
শুনি তার ‍বাক্যে আইলাম শীঘ্রগতি।
করহ উপায় যেই মনে লয় সতী।।
এত শুনি দময়ন্তী অশ্রুপূর্ণমুখী।
কহিল সকল কথা জননীরে ডাকি।।
শুন গো জননী মোর যদি হিত চাও।
সুদেব ব্রাহ্মণে শীঘ্র অযোধ্যা পাঠাও।।
পর্ণাদেরে কহে দিয়া বহু রত্ন গ্রাম।
নিজগৃহে গিয়া দ্বিজ করহ বিশ্রাম।।
যে করিলে তুমি, তাহা কেহ নাহি করে।
নল এলে বাঞ্ছা যাহা, দিব তো তোমারে।।
প্রণাম করিয়া দ্বিজে বিদায় করিল।
সুদেব ব্রাহ্মণে ডাকি বৈদর্ভী বলিল।।
অযোধ্যা নগরে বিপ্র যাহ একবার।
অসময়ে তুমি মম কর উপকার।।
এই পত্র দেহ গিয়া ঋতুপর্ণ প্রতি।
বিশেষিয়া রাজারে করাহ অবগতি।।
দময়ন্তী ইচ্ছিল দ্বিতীয় স্বয়ম্বর।
যতেক নৃপতি গেল বিদর্ভ নগর।।
বহুদিন হৈল স্বয়ন্বয়ের আরম্ভ।
যদি চাহ যাহ শীঘ্র না কর বিলম্ব।।
যদি রাজা বলে, তার স্বামী নল ছিল।
ইহা তবে কহিবে, না জানি কোথা গেল।।
জীয়ে বা না জীয়ে নল, না পাইল বার্ত্তা।
সে কারণে বৈদর্ভী ইচ্ছিল অন্য ভর্ত্তা।।
আজি রাত্রি প্রভাতে হইবে স্বয়ম্বর।
পারিলে তথায় শীঘ্র যাহ নৃপবর।।
নল সম নাহি লোক চালাইতে রথ।
নিমিষেতে যায় শত যোজনের পথ।।
নিশ্চয় জানিব তথা যদি নল স্থিত।
তবে শীঘ্র বার্ত্তা পেলে আসিবে ত্বরিত।।
এত শুনি চলিল সুদেব দ্বিজবর।
কত দিনে উপনীত অযোধ্যা-নগর।।
কহিয়া ভৈমীর কথা পত্রখানি দিল।
পত্র পেয়ে ঋতুপর্ণ বাহুকে ডাকিল।।
অশ্বতত্ত্ব জান তুমি সর্ব্বলোকে জানে।
বিদর্ভ যাইতে কি পারিবে রাত্রি দিনে।।
আজি নিশি প্রভাতে উদয়ে তিমিরান্তে।
ভীমপুত্রী ভৈমী বরিবেক অন্য কান্তে।।
এত শুনি নল রাজা হইল বিস্মিত।
দময়ন্তী করে হেন কর্ম্ম কদাচিত।।
মুর্হূর্ত্তেক নিজ চিত্তে করিয়া ভাবনা।
নিশ্চয় জানিল এই মিথ্যা প্রবঞ্চনা।।
কোন স্ত্রী এমন নাহি করে কোন দেশে।
তনয় তনয়া দুই আছয়ে বিশেষে।।
সতী সাধ্বী দময়ন্তী, ভক্তি যে আমায়।
আমার কারণে হেন করেছে উপায়।।
অসৎকর্ম্ম দ্যূতে আমি পশিলাম বনে।
তেঁই আমি মন্দ ভাষা শুনিনু শ্রবণে।।
মিথ্যা কথা ঋতুপর্ণ সত্য করি জানে।
সত্য কিম্বা মিথ্যা গিয়া জানিব সেখানে।।
এত চিন্তি নরপতি করিল উত্তর।
নিশাকালে লব রথ বিদর্ভ নগর।।
এত শুনি কহে রাজা হইয়া উল্লাস।
প্রসাদ যে চাহ তুমি, লহ মম পাশ।।
নল বলে, কার্য্য সিদ্ধ করিয়া তোমার।
তবে রাজা মাগিব প্রসাদ আপনার।।
এত বলি অশ্বশালে প্রবেশ করিল।
একে একে সকল তুরঙ্গ নিরখিল।।
দেখিতে শরীর কৃশ, সিন্ধুদেশী ঘোড়া।
বাছিয়া বাহির কৈল নল দুই যোড়া।।
ঘোড়া দেখি ঋতুপর্ণ আরক্ত লোচন।
বাহুকের প্রতি বলে কঠিন বচন।।
সহস্র সহস্র মম আছে অশ্বগণ।
পার্ব্বতীয় ঘোড়া সব পবন গমন।।
তাহা ছাড়ি হীনশক্তি দুর্ব্বলে আনিলে।
কেমনে বহিবে রথ, কিমত বুঝিলে।।
পরিহাস কর মোরে বুঝি অনুমানে।
পুনঃ পুনঃ কহে রাজা কঠিন বচনে।।
বাহুক বলিল, যদি যাইবে রাজন।
আমার বচনে কর রথে আরোহণ।।
ইহা ভিন্ন অন্য ঘোড়া না পারে যাইতে।
এত বলি চারি ঘোড়া যুড়িলেক রথে।।
চতুরঙ্গে সাজে তবে যত সৈন্যগণ।
ঋতুপর্ণ রাজা কৈল রথে আরোহণ।।
চালাইয়া দিল রথ বাহুক সারথি।
শূন্যেতে উঠিল ঘোড়া বায়ুবেগগতি।।
কোথায় রহিল রথ, কোথা সৈন্যগণ।
বিস্ময় মানিয়া রাজা ভাবে মনে মন।।
এই কি মাতলি যে সারথি পুরুহূত।
অশ্বিনীকুমার কিম্বা আপনি মরুৎ।।
হেন শক্তি নাহি কারো পৃথিবীমণ্ডলে।
মানুষের মধ্যে শক্তি ধরে রাজা নলে।।
নলরাজা বিনা আর নহিবেক আন।
বীর্য্য ধৈর্য্য ভাষা গুণ নলের সমান।।
কেবল দেখিতে পাই কুৎসিত আকার।
ছদ্মবেশে হইয়াছে সারথি আমার।।
এই মতে ঋতুপর্ণ করিয়া বিচার।
বন নদী গিরি আদি হইলেন পার।।
হেনকালে নৃপতির পড়িল উত্তরী।
বাহুকে বলিল রথ রাখ অশ্ব ধরি।।
উত্তরী লইতে রাজা পাছু পানে চায়।
বাহুক বলিল হেথা উত্তরী কোথায়।।
পঞ্চ যোজনের পথ উত্তরী রহিল।
শুনি ঋতুপর্ণ রাজা বিস্ময় মানিল।।
রাজা বলে, বাহুক শুনহ মোর বাণী।
আমি এক দ্রব্যসংখ্যা বিদ্যা ভাল জানি।।
গণিতে সর্ব্বজ্ঞ, নাহি আমার সমান।
এই বৃক্ষে পত্র ফল বুঝ পরিমাণ।।
পঞ্চ কোটি পত্র আছে দুই কোটি ফল।
এত শুনি বলে তবে মহারাজ নল।।
হেন বিদ্যা নাহি, যাহা আমি নাহি জানি।।
পরীক্ষিব তব বিদ্যা ফল পত্র গণি।।
রাজা বলে, চল শীঘ্র বিলম্ব না সয়।
নিকট হইল স্বয়ম্বরের সময়।।
স্বয়ম্বর হইতে আসিব নিবর্ত্তিয়া।
তবে মম বিদ্যা তুমি বুঝিবে গণিয়া।।
বাহুক বলিল যে কুণ্ডিন অল্প পথ।
না পোহাবে রজনী, লইব আমি রথ।।
মুহূর্ত্তেক রথ অশ্ব ধর নৃপবর।
ফল পত্র গণি আমি আসিব সত্বর।।
এতেক বলিয়া গেল অশ্বথের তল।
গণিয়া বুঝিল যে হইল পত্র ফল।।
বিস্ময় মানিয়া বলে নল নরপতি।
এই বিদ্যা আমারে বিতর মহামতি।।
এমত শুনিয়া রাজা বাহুক বচন।
ক্ষণেক চিন্তিয়া তবে বলিল রাজন।।
অশ্ববিদ্যা মন্ত্র যদি শিখাও আমারে।
আমি এ গণনা বিদ্যা শিখাব তোমারে।।
স্বীকার করিল নল, করাইব শিক্ষা।
তবে ঋতুপর্ণ কাছে লৈল মন্ত্রদীক্ষা।।
মহামন্ত্র দীক্ষা যদি লইলেন নল।
শরীরে আছিল কলি, হইল বিকল।।
একে কর্কোটর বিষ জর জর দহে।
অধিক রাজার মন্ত্রে কলি স্থির নহে।।
সেইক্ষণে অঙ্গ হৈতে হইল বাহির।
মুখেতে গরল বহে, কম্পিত শরীর।।
কলি দেখি নরপতি ক্রোধে কম্পকায়।
হাতে খড়্গ করি রাজা কাটিবারে যায়।।
কৃতাঞ্জলি করি কলি বলে সবিনয়।
মোরে ‍না করিহ নাশ, শুন মহাশয়।।
দময়ন্তী-শাপে মোর সদা দহে অঙ্গ।
বিশেষে দহিল দংশি কর্কট ভুজঙ্গ।।
তোমা হৈতে দুঃখ রাজা বিশেষ আমার।
বুঝি ক্রোধ কর ক্ষমা, না কর সংহার।।
আমারে না মার তব হইবেক কাজ।
এই কীর্ত্তি রবে তব পৃথিবীর মাঝ।।
যেই জন তব কীর্ত্তি করিবে ঘোষণ।
তাহারে আমার বাধা নাহি কদাচন।।
আর এক কথা বলি শুন নরবর।
কহিতে তোমার কীর্ত্তি নাহি অবসর।।
কর্কোটক ঋতুপর্ণ দময়ন্তী নল।
নাম নিলে আমি নাহি যাব সেই স্থল।।
এত শুনি কলিরে ছাড়িল নরবর।
রথে চড়ি গেল দোঁহে বিদর্ভ নগর।।
মহাভারতের কথা অমৃত লহরী।
শ্রবণে খণ্ডয়ে তাপ, ভবসিন্ধু তরি।।
কাশীরাম কহে প্রভু নীলশৈলারূঢ়।
দক্ষিণে অনুজাগ্র, সম্মুখে গরুড়।।
৫২. ঋতুপর্ণ রাজার সহিত
নলের বিদর্ভ নগরে প্রবেশ
রথ চালাইয়া দিল নিষধ ঈশ্বর।
নিমিষে পাইল গিয়া বিদর্ভ নগর।।
আকাশে আইসে রথ মেঘের গর্জ্জনে।
মেঘ অনুমানে নৃত্য করে শিখিগণে।।
তৃষ্ণার্থ চাতক সব করে কলবর।
ঊর্দ্ধৃমুখ করি চাহে, জলাকাঙক্ষী সব।।
বিদর্ভের লোক সব একদৃষ্টে চায়।
রথশব্দ শুনি ভৈমী উল্লাস হৃদয়।।
রথ চালাইয়া হেন জন্মায় বিস্ময়।
নল বিনা হেন শক্তি অন্যের কি হয়।।
আজি যদি আমি নল প্রভু না পাইব।
জ্বলন্ত অনলে তবে প্রবেশ করিব।।
পরনিন্দা পরদ্বেষ কটুবাক্য লোকে।
কখনই যদি মোর নাহি ভাষে মুখে।।
কভু নাহি কহি কটু প্রভুরে উত্তর।
তবে আজি ভেটিব আপন প্রাণেশ্বর।।
এত বলি দময়ন্তী প্রাসাদে থাকিয়া।
গবাক্ষ দ্বারেতে রথ চাহে নিরখিয়া।।
রথ হৈতে নামে তবে ইক্ষবাকু নন্দন।
যথা ভীম নরপতি করিল গমন।।
না দেখিয়া স্বয়ম্বর বিস্ময় হইয়া।
কহে হায় কি করিনু হেথায় আসিয়া।।
ঋতুপর্ণ রাজা দেখি ভীম নরপতি।
বসিতে আসন তাঁরে দিল শীঘ্রগতি।।
ভীম রাজা বলে, শুন অযোধ্যার নাথ।
হেথা আগমন কেন হৈল অকস্মাৎ।।
শুনিয়া নৃপতি মনে মানিল বিস্ময়।
মিথ্যা স্বয়ম্বর হেন জানিল নিশ্চয়।।
স্বয়ম্বর হইলে আসিত রাজগণ।
ভাবিয়া নৃপতি তবে বলিল বচন।।
আসিয়াছিলাম, অন্য আছিল কারণ।
আসিলাম করিবারে তোমা সম্ভাষণ।।
ভীম রাজা বলিলেন, কিভাগ্য আমার।
সে কারণে আগমন হেথায় তোমার।।
শ্রমযুক্ত আছ আজি থাক মম বাস।
এত বলি দিল এক অপূর্ব্ব আবাস।।
আবাস ভিতরে উত্তরিল নরপতি।
অশ্বশালে উত্তরিল বাহুক সারথি।।
অশ্বগণে পরিচর্য্যা করিয়া বান্ধিল।
প্রাসাদ উপরে থাকি বৈদর্ভী দেখিল।।
ঋতুপর্ণ রাজা আর সারথি তাহার।
নল রাজা না দেখি যে, কেমন বিচার।।
এত ভাবি পাঠাইল কেশিনী দূতীরে।
যাহ শীঘ্র কেশিনী, জিজ্ঞাস সারথিরে।।
দেখিয়া উহার মুখ ভ্রম হয় মন।
শীঘ্র আসি কহ ইহা বুঝিয়া কারণ।।
এত শুনি কেশিনী চলিল শীঘ্রগতি।
মধুর বচনে কহে সারথির প্রতি।।
রাজকন্যা দময়ন্তী পাঠাইল হেথা।
কে তুমি, কি হেতু এলে, জিজ্ঞাসিতে কথা।।
বাহুক বলিল মোর অযোধ্যায় স্থিতি।
ঋতুপর্ণ নৃপতির হই যে সারথি।।
হেথা হৈতে গিয়াছিল এক দ্বিজবর।
শুনিলেন ভৈমীর দ্বিতীয় স্বয়ম্বর।।
রজনী প্রভাতে বরিবেক অন্য স্বামী।
এই হেতু ঋতুপর্ণ আসে শীঘ্রগামী।।
শতেক যোজন হতে আসিল নৃপতি।
বাহুক আমার নাম, তাহার সারথি।।
পুণ্যশ্লোক নল বীরসেনের কুমার।
পূর্ব্বেতে ছিলাম আমি সারথি তাঁহার।।
তাঁর ভার্য্যা যে ভৈমীর স্বয়ম্বর কথা।
দ্বিজ মুখে শুনিয়া পাইনু বড় ব্যথা।।
দ্বিতীয় বয়সে এই, তৃতীয়ে কি হবে।
দৈবে যাহা করে, তাহা কে আর খণ্ডিবে।।
এত শুনি কেশিনী বাহুক প্রতি কয়।
তুমি যদি সারথি, নৃপতি কোথা রয়।।
অর্দ্ধবাসা একাকিনী রাখি ঘোর বনে।
অনুরক্তা নারী ছাড়ি গেলেন কেমনে।।
সেই বস্ত্র পরিধিয়া আছয়ে অদ্যাপি।
নাহি রুচে অন্ন জল পুণ্যশ্লোকে জপি।।
এত শুনি ব্যথিত হইল রাজা নল।
বারিধারা নয়নেতে বহে অশ্রুজল।।
রাজা বলে, যেই হয় কুলবতী নারী।
স্বামীর বিশ্বাস কথা রাখে গুপ্ত করি।।
আপন মরণ বাঞ্ছে স্বামীর কারণ।
তথাপি স্বামীর নিন্দা না করে কখন।।
বিবস্ত্র হইয়া যেই পশিল কানন।
অল্প ভাগ্য নহে তার, পাইল জীবন।।
হেনজনে ক্রোধ করিবার যোগ্য নয়।
রাজ্যনষ্ট জ্ঞানভ্রষ্ট প্রাণমাত্র রয়।।
এত বলি শোকাকুল কান্দে পরপতি।
কেশিনী সকল জানাইল ভৈমী প্রতি।।
ভৈমী বলে, নল এই, নহে অন্যজন।
পুনরপি যাহ তুমি, বুঝহ লক্ষণ।।
কি আচার, কি বিচার, কোন কর্ম্ম করে।
বুঝিয়া আমারে আসি কহিবে সত্বরে।।
আজ্ঞা পেয়ে দাসী তবে করিল গমন।
দেখিয়া সকল কর্ম্ম আইল তখন।।
কেশিনী বলিল, শুন রাজার নন্দিনী।
বাহুকের যত কর্ম্ম দেবমধ্যে গণি।।
রন্ধন সামগ্রী যত ঋতুপর্ণ নৃপে।
মাংস আদি পাঠাইয়া দিল তব বাপে।।
সে সব সামগ্রী দিল বাহুকের স্থান।
দেখিয়া তাহার কর্ম্ম হয়েছি অজ্ঞান।।
শূন্যকুম্ভে কিঞ্চিৎ করিল দৃষ্টিপাত।
পূর্ণকুম্ভ তখনি হইল অকস্মৎ।।
সেই জলে সব দ্রব্যজাত প্রক্ষালিল।
তৃণকাষ্ঠ ছিল, কিন্তু অনল না ছিল।।
তৃণমুষ্টি হস্তে করি কাষ্ঠমধ্যে দিল।
দৃষ্টিমাত্রে তৃণ কাষ্ঠ আপনি জ্বলিল।।
ক্ষণমাত্রে সব দ্রব্য করিল রন্ধন।
ভৈমী বলে, আর কেন বুঝেছি কারণ।।
কেশিনী এখনি তুমি যাহ আরবার।
ব্যঞ্জন আনহ তুমি রন্ধন তাহার।।
কেশিনী মাগিল গিয়া বাহুকে ব্যঞ্জন।
দময়ন্তী স্থানে গিয়া দিল সেইক্ষণ।।
খাইয়া ব্যঞ্জন ভৈমী হরষিত মন।
নিশ্চয় জানিনু এই নলের রন্ধন।।
তবে কন্যা পুত্রে দিল কেশিনী সংহতি।
কি বলে, বুঝিয়া তুমি এস শীঘ্রগতি।।
কেশিনীর সঙ্গে দেখি নন্দন নন্দিনী।
শীঘ্রগতি উঠি কোলে করে নৃপমণি।।
দোঁহা মুখ দেখি রাজা কান্দে উচ্চৈঃস্বরে।
পুনঃ পুনঃ চুম্ব দিয়া আলিঙ্গন করে।।
কতক্ষণে কেশিনীরে বলিল রাজন।
দুই শিশু দেখি মোর স্থির নহে মন।।
এই মত কন্যা পুত্র আছে যে আমার।
বহুদিন দেখা নাহি সঙ্গে দোঁহাকার।।
সেই কথা স্মরিয়া করিনু যে রোদন।
অপত্য বিচ্ছেদ তাপ নহে সম্বরণ।।
পাছে কেহ দেখিয়া কহিবে কোন কথা।
লয়ে যাহ দুই শিশু, কার্য্য নাহি হেথা।।
এতেক শুনিয়া তবে কেশিনী চলিল।
বাহুকের যত কথা ভৈমীরে কহিল।।
শুনিয়া বৈদর্ভী ব্যগ্র হইল দর্শনে।
শীঘ্র গিয়া জানাইল জননীর স্থানে।।
আজ্ঞা যদি কর যাই নলে দেখিবারে।
শুনিয়া বৃত্তান্ত রাণী আজ্ঞা দিল তারে।।
তনয় তনয়া সঙ্গে করিয়া কামিনী।
পতি দরশনে যায় মরালগামিনী।।
আরন্যেতে উত্তম নলের উপাখ্যান।
কাশীরাম দাস কহে শুনে পুণ্যবান।।
৫৩. নলের সহিত দময়ন্তীর মিলন
অশ্বশালে গিয়া ভৈমী. নিকটে দেখিল স্বামী,
পরিধান জীর্ণ ছিন্ন বাস।
দুঃখানলে অঙ্গ দহে, চক্ষে অশ্রুজল বহে,
সকরুণে কহে মৃদু ভাষ।।
শুন হে বাহুক নাম, দেখিয়াছ কোন ঠাম,
ধর্ম্মিষ্ঠ পুরুষ একজনে।
ক্ষুধা তৃষ্ণা পরিশ্রমে, স্ত্রীলোক আছিল ঘুমে,
একা ছাড়ি পলাইল বনে।।
বিনা নল পুণ্যশ্লোক, পৃথিবীর অন্য লোক,
কে করিল কহ নাম ধরি।
সদাকাল অনুব্রতা, বিশেষ পুত্রের মাতা,
কোন দোষে নহে দোষকারী।।
যমাগ্নি বরুণ ইন্দ্র, ত্যজিয়া অমরবৃন্দ,
করিল বরণ যেই জনে।
সদা বাঞ্ছা অনুবর্ত্তী, কি হেতু এমন বৃত্তি,
ত্যাগ করে নির্জ্জন কাননে।।
সভায় করিল সত্য, রাখিব তোমারে নিত্য,
না ছাড়িব জীবনে মরণে।
নল হেন সত্যবাদী, এমন করিল যদি,
তবে আর কি করিবে অন্যে।।
দময়ন্তী বাক্য শুনি, লাজে কহে নৃপমণি,
পাইলে কে ছাড়ে হেন রামা।
রাজ্যভ্রষ্ট লক্ষ্মীভ্রষ্ট, করিলেক যেই দুষ্ট,
বিচ্ছেদ করায় তোমা আমা।।
প্রিয়াকে ছাড়িয়া বনে, এবে দেখ বরাননে,
অস্থিচর্ম্ম প্রাণমাত্র ভোগ।
ইহা না ভাবিয়া চিতে, দেখিয়া আমারে জীতে,
না বুঝিয়া কর অনুযোগ।।
কলি ছাড়ি গেল আমা, তেঁই দেখিলাম তোমা,
ক্রোধ সম্বরহ শশিমুখি।
যেই নারী পতিব্রতা, না ধরে স্বামীর কথা,
স্বামী দোষ নয়নে না দেখি।।
আর শুনিলাম বার্ত্তা, করিবা কি অন্য ভর্ত্তা,
কহিল তোমার দ্বিজবর।
রাজ্যে রাজ্যে দূত গেল, সর্ব্বলোকে বার্ত্তা দিল,
ভৈমীর দ্বিতীয় স্বয়ন্বর।।
কোশলে শুনিয়া কথা, তেঁই আইলাম হেথা,
কারে বর দেখিব নয়নে।
এমত কুৎসিত কর্ম্ম, রাজকুলে লয়ে জন্ম,
কহ করিয়াছে কোন্ জনে।।
শুনিয়া স্বামীর বাণী, করিয়া যুগলপাণি,
নিতম্বিনী কহে সবিনয়।
তব হেতু মহারাজ, ত্যজিলাম কুললাজ,
ত্যজিলাম গুরুজন ভয়।।
পূর্ব্বে তব অন্বেষণে, পাঠাইনু দ্বিজগণে,
পর্ণাদ কহিল সমাচার।
তেঁই এ উপায় করি, পাঠাই অযোধ্যাপুরী,
কোন স্থানে নাহি যায় আর।।
সদা কায় মন প্রাণে, তোমা বিনা অন্যজনে,
নাহি চাহি নয়নের কোণে।
যদি কর পাপজ্ঞান, তোমার সাক্ষাতে প্রাণ,
বাহির হউক এইক্ষণে।।
চন্দ্র সূর্য্য বায়ু সাক্ষী, এখনি বলিবে ডাকি,
যদি আমি হই পতিব্রতা।
ভৈমী বলে উচ্চৈঃস্বরে, পুষ্পবৃষ্টি দেবে করে,
ডাকি বলে পবন দেবতা।।
ত্যজ রাজা মনস্তাপ, বৈদর্ভীর নাহি পাপ,
স্বধর্ম্মেতে হয়েছে রক্ষিতা।
যাবৎ গিয়াছ তুমি, রক্ষা করিয়াছি আমি,
তোমা হেতু কেবল চিন্তিতা।।
অকস্মাৎ এই বাণী, শুনিল দুন্দুভি ধ্বনি,
গগনে হইল আচম্বিত।
দেখি মনে হৈল শান্তি, খণ্ডিল নলের ভ্রান্তি,
ভৈমীর বুঝিয়া ধর্ম্মচিত।।
ধরিয়া যুগল করে, বসাইল ঊরু পরে,
আশ্বাস করিল মৃদুভাষে।
কর্কোটক নাগে স্মরি, কুৎসিত রূপ ছাড়ি,
পূর্ব্বরূপ তখনি প্রকাশে।।
অপূর্ব্ব ভারত-কথা, বিচিত্র নলের গাথা,
শ্রবণে সর্ব্বপাপ বিনাশে।
কমলাকান্তের সুত, হেতু সুজনের প্রীত,
বিরচিল কাশীরাম দাসে।।
৫৪. ঋতুপর্ণ রাজার স্বদেশ প্রত্যাগমন
ও নলের পুনর্ব্বার রাজ্যপ্রাপ্তি
পরে কর্কোটক দত্ত বসন পরিয়া।
লভে নিজ পূর্ব্বরূপ নাগেরে স্মরিয়া।।
স্বরূপেতে নলরাজে দেখিয়া তখন।
পতিব্রতা হইলেন আনন্দে মগন।।
চারি বৎসরান্তে দোঁহে মিলন হইল।
উভয়ে পুনঃ পুনঃ আলিঙ্গন করিল।।
দোঁহে দোঁহাকার দুঃখের কথা কহিল।
প্রভাতে উভয়ে ভীম নৃপেরে ভেটিল।।
জামাতা দেখিয়া ‍নৃপে আনন্দ অপার।
আলিঙ্গন দিয়া বলে সকলি তোমার।।
ঋতুপর্ণ শুনিল এ সব সমাচার।
জানিল যে নল রাজা বাহুক আমার।।
দময়ন্তী প্রত্যাশা ছাড়িল নৃপবর।
শীঘ্রগতি গেল যথা নিষধ ঈশ্বর।।
ঋতুপর্ণ বলে, ভাগ্য আছিল আমার।
তেঁই সে মিলন হইল দোঁহাকার।।
অজ্ঞাতের দোষ যত ক্ষমিবে আমারে।
শুনিয়া নিষধ রাজ বলিল তাহারে।।
কখনই দোষী তুমি নহ মম স্থানে।
কখন আমার ক্রোধ নাহি হয় মনে।।
কলির পীড়নেতে বড় দুঃখ পাইয়া।
ছিলাম তোমার পাশে আনন্দিত হৈয়া।।
তোমার আশ্রয়ে থাকি বিপদ সময়।
সুখেতে ছিলাম যেন ‍আপন আলয়।।
বিপদ সময়ে রাজা যারে যেই রাখে।
ধর্ম্মেতে বাড়য়ে সেই, ধর্ম্ম রাখে তাকে।।
এতএব শুন রায় করি নিবেদন।
এমন বিপদে স্থান দেয় কোন জন।।
হইলে পরম সখা, আর কি বলিব।
গাইব তোমার গুণ যতকাল জীব।।
যাহ সখা, নিজ রাজ্যে করহ গজন।
এত বলি উভয়ে করিল আলিঙ্গন।।
সারথি করিয়া অন্যে কোশলের রায়।
আপনার রাজ্যে গেল হইয়া বিদায়।।
তবে নল নরপতি শ্বশুরে কহিয়া।
নিষধরাজ্যেতে গেল কত সৈন্য লৈয়া।।
এক রথ, ষোল হাতী, পঞ্চাশ তুরঙ্গ।
দুই শত পদাতিক নৃপতির সঙ্গ।।
নিজ রাজ্যে আইলেন নল নরপতি।
পুষ্কর সমীপে যান অতি শীঘ্রগতি।।
পুষ্করে বলিল, তোরে নিজরাজ্যে দিয়া।
অরণ্যে গেলাম আমি দেবনে হারিয়া।।
পুনঃ তব সহিত খেলিব একবার।
আপনার আত্মা পণ করিব এবার।।
জিনিলে তোমার আত্মা হইবে তোমার।
দ্যূতক্রীড়া করিব, আনহ পাশাসারি।
নহিলে উঠহ শীঘ্র ধনুঃশর ধরি।।
নলের বচন শুনি পুষ্কর হাসিয়া।
বলে, বড় ভাগ্য মানি তোমারে দেখিয়া।।
দময়ন্তী সহ তুমি প্রবেশিলে বনে।
এই তাপ অনুক্ষণ জাগে মোর মনে।।
দময়ন্তী দেবনে না কৈলে রাজা পণ।
আমার বাঞ্ছিত বিধি করিল ঘটন।।
এত ভাবি পুষ্কর আনিল পাশাসারি।
দুই জনে বসে তবে আত্মা পণ করি।।
দেখহ ধর্ম্মের গতি বিচিত্র কেমন।
দুষ্ট কলি দ্বাপর ত নাহিক এখন।।
এত বলি দেবন ফেলিল নররায়।
অবশ্য হয়েন পার ধর্ম্মের নৌকায়।।
জিনিল নৃপতি নল, হারিল পুষ্কর।
পুষ্কর ভাবিল মনে জীবন দুষ্কর।।
হারিয়া নলের হাতে উড়িল জীবন।
পুষ্কর কম্পিত তনু সজল নয়ন।।
ধার্মিক অধর্ম্মভীরু দয়ার সাগর।
অনুজে চাহিয়া তবে বলে নৃপবর।।
না ডরিহ পুষ্কর, নাহিক তব দোষ।
যতেক করিলে, তাতে নাহি করি রোষ।।
কলিতে করিল সব দৈব নিবন্ধন।
পূর্ব্বমত নির্ভয়ে থাকহ হৃষ্টমন।।
তব প্রতি প্রীতি মোর যেইরূপ ছিল।
সন্দেহ নাহিক তায়, সেরূপ রহিল।।
এত শুনি করপুটে বলিছে পুষ্কর।
তব কীর্ত্তি ঘুষিবেক দেব দৈত্য নর।।
বহুদোষে দোষী আমি, ক্ষমিলে আমারে।
তোমার সদৃশ ক্ষমী নাহি চরাচরে।।
এত বলি প্রণমিয়া পড়িল ধরণী।
আশ্বাস করিল তারে নল নৃপমণি।।
পাত্রমিত্রগণ আর নগরের প্রজা।
সর্ব্বলোকে আনন্দিত, নল হৈল ‍রাজা।।
দ্বিজগণে পাঠাইয়া বৈদর্ভী আনিল।
দীর্ঘকাল মহাসুখে রাজত্ব করিল।।
কতদিনে নরপতি চিন্তি মনে মন।
ইন্দ্রসেনে রাজ্যভার করিল অর্পণ।।
নিজ পুত্রে করি রাজা নল নরপতি।
স্বর্গলোক গেল দময়ন্তীর সংহতি।।
বৃহদশ্ব বলে, রাজা শুনিলে সকল।
তোমার অধিক দুঃখ পেয়েছিল নল।।
সম্পদ কাহার কভু নাহি রহে স্থির।
ক্ষনমাত্র রহে যেন জোয়ারের নীর।।
আসিতে না হয় সুখ, যাইতে না দুখ।
সদাকাল সমান ভুঞ্জিবা দুঃখ সুখ।।
পরমার্থ চিন্তা রাজা কর অনুক্ষণ।
সুখ দুঃখ হয় সব কর্ম্ম নিবন্ধন।।
নলের চরিত্র, আর কলির শাসন।
একমন হয়ে যদি শুনে কোন জন।।
খণ্ডয়ে বিপদ ভয়, স্ববাঞ্ছিত পায়।
বংশবৃদ্ধি হয় তার, সুখে কাল যায়।।
কদাচ কলির বাধা নাহি হয় তারে।
যতেক সঙ্কট ভয়, তাহা হৈতে তরে।।
তব দুঃখ নরপতি যাবে অল্পদিনে।
এত বলি অক্ষবিদ্যা দিলেন রাজনে।।
সবা সম্ভাষিয়া মুনি করিল গমন।
প্রণাম করেন তাঁরে ধর্ম্মের নন্দন।।
কাম্যবনে ধর্ম্মপুত্র চারি সহোদর।
অর্জ্জুন বিচ্ছেদে সদা কাতর অন্তর।।
পুণ্যকথা ভারতের শুনে পুণ্যবান।
পৃথিবীতে সুখ নাহি ইহার সমান।।
হরির ভাবনা বিনা অন্যে নাহি মন।
সদাকাল হয় তার গোলোকে গমন।।
৫৫. জন্মেজয়ের বৈশম্পায়নকে
কাম্যকবনস্থ পাণ্ডবগণের বৃত্তান্ত জিজ্ঞাসা
বলেন জনমেজয় কহ মুনিরাজ।
পার্থ বিনা কাম্যবনে পাণ্ডব সমাজ।।
কি করিল কি মতে বঞ্চিল দুঃখ শোকে।
বিস্তারিয়া মুনিবর কহিবে আমাকে।।
মুনি বলে, পাণ্ডুপুত্র অর্জ্জুন বিহনে।
অনুশোচে, পক্ষী যেন পক্ষের কারণে।।
বিষ্ণু বিনা যথা নাহি শোভে সুরগণ।
কুবের বিহনে যথা চৈত্ররথ বন।।
কান্দিয়া দ্রৌপদী বলে রাজার গোচর।
পার্থে না দেখিয়া স্থির না হয় অন্তর।।
যে অর্জ্জুন বহুবাহু কার্ত্তবীর্য্য সম।
বলবান রণে মত্ত গজেন্দ্র বিক্রম।।
তাহা বিনা সকলি যে দেখি শূন্যময়।
ক্ষণমাত্র নাহি হয় স্বচ্ছন্দ হৃদয়।।
অগ্রসর হয়ে তবে বলে বৃকোদর।
শোকানলে নিরন্তর দহিছে অন্তর।।
যত দিন নাহি দেখি অর্জ্জুনের মুখ।
মুহূর্ত্তেক নরপতি, নাহি মম সুখ।।
সর্ব্ব শূন্য দেখি আমি অর্জ্জুন বিহনে।
দশদিক অন্ধকার দেখি রাত্রি দিনে।।
যার ভূজাশ্রিত কুরু পাঞ্চাল পাণ্ডব।
দৈত্য মারি দেবে যেন পালয়ে বাসব।।
রাজ্যভ্রষ্ট হয়ে ঘুরি করিয়া সন্ন্যাস।
পুনঃ রাজ্য পাব বলি, যার করি আশ।।
যার ভূজে গন্ধ হবে যত কুরুবর।
সে অর্জ্জুন বিনা মম দহিছে অন্তর।।
অনন্তর নকুল বলেন সকরুণ।
দেবাসুরে নাহি তুল্য অর্জ্জুনের গুণ।।
জিনিল উত্তর দিকে রাজসূয় কালে।
ভৃত্যবৎ খাটাইল নৃপতি সকলে।।
কোন স্থানে নাহি সুখ না দেখি তাঁহায়।
আহার শয়ন আদি লাগে কটুপ্রায়।।
সহদেব কান্দিয়া বলিছে নৃপ আগে।
যতদিন নাহি দেখি পার্থ মহাভাগে।।
নিমিষে না হয় সুস্থ আমার শরীর।
গরলে ব্যাপিত যেন, অঙ্গ নহে স্থির।।
যাদব নিকরে বীর পরাজয় করি।
হরিয়া আনিল বলে সুভদ্রা সুন্দরী।।
আজি গৃহ শূন্য দেখি তাঁহার বিহনে।
কোনমতে শান্তি নাহি হয় মম মনে।।

বেদ সম্পর্কে সামান্য ধারণা

শ্রীমদ্ভগবতগীতার সম্পূর্ণ শ্লোকের অর্থ

বিবিধ


মহাভারতের প্রধান প্রধান চরিত্র