যযাতি ও অন্যান্য

যযাতি : পিতার মৃত্যুর পর যযাতি চন্দ্রবংশের রাজা হন।তার পিতার নাম নহুষ ও মাতার তার দুই স্ত্রী দেবযানী ও শর্মিষ্ঠা। দেবযানী দৈত্যগুরু শুক্রাচার্যের কন্যা আর শর্মিষ্ঠা দৈত্যরাজ বিষপর্বার কন্যা। দেবযানীর গর্ভে যদু ও তুর্বসু নামে দুই পুত্রের জন্ম হয় এবং শর্মিষ্ঠার গর্ভে দ্রুহ্য, অনু ও পুরু নামে তিন পুত্রের জন্ম হয়। শুক্রাচার্যের অগোচরে শর্মিষ্ঠাকে গ্রহণ করায় শুক্রাচার্যের অভিশাপে যযাতি জরাগ্রস্ত প্রাপ্ত হন। তখন যযাতির অনুরোধে শুক্রাচার্য বলেন যে, যদি অন্য কে ইচ্ছায় যযাতির জরা গ্রহণ করে তবেই সে নিজের জরা সংক্রামিত করে নিজে শাপ মুক্ত হতে পারবে এবং তাকে রাজ্যভার অর্পণ করবে। তখন যযাতি একে একে সকল পুত্রকে তার জরা গ্রহণ করতে বললে সর্বকনিষ্ঠ পুত্র পুরু তার পিতার জরা গ্রহণ করতে সম্মত হন। যযাতি তখন তার জরা পুরুর দেহে সংক্রামিত করেন। এভাবে যযাতি প্রায় ১০০০ বছর ইন্দ্রিয়সুখ ভোগ করেন। তারপর তিনি দেখলেন যে, ইন্দ্রিয়সুখের কোন অন্ত নেই। তার কোন পরিতৃপ্তি নেই। তাই তিনি ভোগ-বাসনা পরিত্যাগ করে পুরুকে তার যৌবন ফিরিয়ে দিয়ে তাকে রাজা অভিষিক্ত করে বানপ্রস্থ হয়ে কঠোর তপ্যাসায় রত হন। মৃত্যুর পর তিনি স্বর্গবাসী হন। কিন্তু স্বর্গে নিজেকে শ্রেষ্ঠ ধার্মিক মনে করায় তার অহঙ্কারের কারণে ইন্দ্রের অভিশাপে স্বর্গভ্রষ্ট হয়ে অন্তরীক্ষে পতিতকালে পথিমধ্যে আকাশে যে স্থানে তার দৌহিত্র অষ্টক, প্রতর্দন, বসুমনা ও শিবি বসবাস করছিলেন সেখানে দৌহিত্ররা তার পরিচয় পেয়ে মাতাসহ যযাতিকে তাদের পূণ্যবলে পুনরায় স্বর্গে প্রত্যার্পণ করেন। এভাবে যযাতি মুক্তি লাভ করে।

পুরু : তিনি একজন চন্দ্রবংশীয় রাজা। তার পিতার নাম যযাতি ও মাতার নাম শর্মিষ্ঠা। রাজা যযাতির দুই স্ত্রী। দেবযানী ও শর্মিষ্ঠা। দেবযানী দৈত্যগুরু শুক্রাচার্যের কন্যা আর শর্মিষ্ঠা দৈত্যরাজ বৃষপর্বার কন্যা। শর্মিষ্ঠার গর্ভে দ্রুহ্য, অনু ও পুরু নামে তিন পুত্র জন্ম গ্রহণ করে এবং  দেবযানীর গর্ভে যদু ও  তুর্বসু নামে দুই পুত্রের জন্ম হয়। শুক্রাচার্যের অগোচরে শর্মিষ্ঠাকে গ্রহণ করায় শুক্রচার্যের অভিশাপে যযাতি জরাগ্রস্ত প্রাপ্ত হন। তখন যযাতির অনুরোধে শুক্রাচার্য বলেন যে, যদি অন্য কে  ইচ্ছায় যযাতির জরাগ্রস্ত গ্রহণ করে তবেই সে নিজের জরাগ্রস্ত সংক্রামিত করে নিজে শাপ মুক্ত হতে পারবে এবং তাকে রাজ্যভার অর্পণ করবে। তখন যযাতি একে একে সকল পুত্রকে তার জরা গ্রহণ করতে বললে সর্বকনিষ্ঠ পুত্র পুরু তার পিতার জরাগ্রস্ত গ্রহণ করতে সম্মত হন। যযাতি তখন তার জরাগ্রস্ত পুরুরে দেহে সংক্রামিত করেন। এভাবে যযাতি অনেক বৎসর যৌবন-তৃষ্ণা উপভোগ করে পুনরায় যযাতি নিজে তার পুত্রের জরাগ্রস্থ গ্রহণ করেন। পিতৃআজ্ঞা পালন করায় যযাতি পুরুকে রাজা করেন। পুরুর তিন পুত্র-প্রবীর, ঈশ্বর ও রৌদ্রাশ্ব। পুরু ও তার ভ্রাতা যদু ও চন্দ্রবংশের দুই শাখার প্রতিষ্ঠাতা। পুরু বংশধরদের পৌরব বলা হয়। এ  পৌরব বংশ হতে কৌরব ও পান্ডব বংশের সৃষ্টি।

সংবরন : চন্দ্রবংশীয় রাজা। তিনি সূর্যভক্ত ছিলেন। একদিন রাজা সংবরণ হরিণ শিকারে গেলেন। তার ঘোড়া পিপাসার্ত হয়ে প্রাণ ত্যাগ করলে তিনি পদব্রজে বিচরণ করতে করতে এক অসামান্য সুন্দরী কন্যার সাক্ষাৎ পেলেন। সে সূর্যদেবের কন্যা তপতী। উভয়েই উভয়ের প্রতি আকৃষ্ট হলেন। তখন তপতী সংবরণকে বললেন,” আপনি সূর্যদেবকে তপ্যায় সন্তুষ্ট করে ঊর্ধ্বমুখে কৃতাঞ্জলি হয়ে পুরোহিত বশিষ্ঠ মুনিকে যোগবলে স্মরণ করুন।” বশিষ্ঠ মুনি যোগবলে রাজা সংবরনের আকাঙ্খা জানতে পেরে সূর্যদেবের কাছে গিয়ে বললেন,” আপনার কন্যা তপতীকে রাজা সংবরনের জন্য প্রর্থানা করছি। সূর্যদেব সম্মত হয়ে তপতীকে দান করলেন। সূর্যদেব পূর্বেই রাজা সংবরনের ধর্মপরায়নতার জন্য কন্যাকে দান করতে মনস্থ করেছিলেন। তারপর সংবরন মন্ত্রীর নিকট রাজ্যভার অর্পণ করে বার বছর বিভিন্ন বনে উপবনে কাটালেন। রাজার ভোগ বাসনার কারণে ইন্দ্র অসন্তুষ্ট হলে তার রাজ্যে বার বছর কোন বৃষ্টি হলো না। ফলে রাজ্যে অভাব দেখা দিল। দলে দলে প্রজারা স্ত্রীপুত্র-কন্যা ত্যাগ করে বাঁচার জন্য ছুটাছুটি করতে লাগল। অবশেষে বশিষ্ঠ মুনি রাজা সংবরন ও তার স্ত্রীকে রাজ্যে ফিরিয়ে আনেন। তখন ইন্দ্র আবার বারি বর্ষণ করতে লাগলেন। জমিতে ফসল উৎপন্ন হলো। তপতীর গর্ভে কুরুর জন্ম হয়।  সে থেকেই কুরুবংশে সূচনা হয়।

কুরু : চন্দ্রবংশীয় রাজা। তিনি মহারাজ সংবরন ও সূর্যকন্যা তপতীর পুত্র। কুরু অত্যন্ত ধর্মপরায়ণ রাজা ছিলেন। তিনি বহু বৎসর কুরুজাঙ্গল নামক স্থানে তপস্যা করেন। সেজন্যে উক্ত স্থানটি কুরুক্ষেত্র নামে বিখ্যাত। কুরুর নামানুসারে এ বংশের নাম হয় কুরুবংশ বা কৌরব বংশ। কুরুর পাঁচ পুত্র-অবিক্ষিত, অবিষ্যৎ, চৈত্ররথ, মুনি ও জন্মেজয়। ধৃতরাষ্ট ও পান্ডু এরা দুজনেই কুরুবংশজাত এবং কৌরব নামে খ্যাত। সাধারণত: দুর্যোধনাদিকে কৌরব ও তাদের পক্ষকে কুরুপক্ষ বলা হয়।

ConversionConversion EmoticonEmoticon

:)
:(
=(
^_^
:D
=D
=)D
|o|
@@,
;)
:-bd
:-d
:p
:ng

বেদ সম্পর্কে সামান্য ধারণা

শ্রীমদ্ভগবতগীতার সম্পূর্ণ শ্লোকের অর্থ

বিবিধ


মহাভারতের প্রধান প্রধান চরিত্র