ব্রহ্মাদি দেববৃন্দের দ্বারকায় গমন ও শ্রীকৃষ্ণের স্তব

কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ শেষ। ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে দর্শনের জন্য সনকাদি  পুত্রগণ, দেববৃন্দ ও প্রজাপতিগণ, ব্রহ্মা, মরুদগণ, ইন্দ্র, আদিত্য, বসু নামক দেবতাগণ, অশ্বিনীকুমারদ্বয়, ঋভূগণ, অঙ্গিরা, রুদ্রগণ, বিশ্বনামক দেবতাগণ, সাধ্য নামক দেবতাগণ, গন্ধর্ব, অপ্সরা, নাগ, সিদ্ধগণ, চারণ, গুহ্যক, ঋষিগণ, পিতৃগণ বিদ্যাধর ও কিন্নরগণ দ্বারকায় গমন করেছিলেন। ব্রহ্মাদিগণ শ্রীকৃষ্ণের স্তবস্তুতি করতে লাগলেন।  হে ভগবন! আপনি এ জগতের সৃষ্টি, স্থিতি ও প্রলয়ের কারণ। বেদ আপনাকে প্রকৃতি, জীব ও মহত্তত্বের নিয়ন্তা বলেছেন। আপনিই পরমপুরুত্তোম ভাগবান শ্রীকৃষ্ণ। ব্রহ্মাদিগণ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের স্তব করতে করতে বলতে লাগলেন,“ হে প্রভো! আমরা ভূমির ভার হরণের জন্য আপনার  নিকট প্রার্থনা করেছিলাম। আপনি আমাদের ইচ্ছা পূরণ করেছেন। মহাদেব আপনাকে দক্ষ প্রজাপতির কন্যা হিসেবে পাওয়ার ইচ্ছা এবং কামিনীমন্ডলেরুপে অনেকবার আপনার সহিত বিহার করিব তাও আপনি পূর্ণ করেছেন। হে প্রভো! আপনি যদুবংশে অবতীর্ণ হয়ে আপনি দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন কার্য সম্পন্ন করেছেন। আপনার লীলাসমূহ কলিযুগের সাধু মানবগণ স্মারণ করে শ্রবণ কীর্তন করে পাপমুক্ত হবে। আপনার সমস্ত কার্য সম্পন্ন হয়েছ। এখন ইচ্ছে করলে আপনি আপনার লোক ও লোকপালসহ স্বীয়ধাম বৈকুন্ঠে গমন করতে পারেন। তখন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বললেন,“ হে ব্রহ্মন! তুমি যা বলেছ আমি পূর্বেই তা নির্ধারণ করে রেখেছি। আমি তোমাদের সকল কার্য সম্পন্ন করেছি এবং ভূমির ভার অপসারিত করেছি। বীর্য শৌর্যযুক্ত সম্পদ দ্বারা উদ্ধত ও সর্বলোক গ্রহনেচ্ছু এ যাবদকূলকে আমি বেলা দ্বারা মহাসগারের ন্যায় রুদ্ধ করে রেখেছি। যদি আমি বলশালী এ যাবদবকূল ধ্বংস না করি তবে তারা পৃথিবীতে অনর্থ ঘটিয়ে লোক নষ্ট করবে। বিপ্রশাপ দ্বারা যদুকুল বিনষ্ট হওয়ার সময় হয়েছে।” ইতোমধ্যে দ্বারকাপুরীতে যদুকূল ধ্বংসের লক্ষণসমূহ প্রকাশিত হতে লাগল। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যদুবৃদ্ধগণকে বললেন,“ হে আর্যগণ! দ্বারকাপুরীতে মহা উৎপাত শুরু হয়েছে। আমাদের আর এখানে বাস করা উচিৎ নয়। অদ্যই আমরা প্রভাসতীর্থে গমন করব। দক্ষের অভিশাপে যক্ষ্মাগ্রস্থ চন্দ্র যে তীর্থে স্নান করে পাপমুক্ত হন এবং পুনরায় কলাবৃদ্ধি প্রাপ্ত  হন। আমারও সে তীর্থে গমন করে স্নান করে পিতৃদেবগণের তর্পণ করে ব্রহ্মাণগণকে অন্ন ভোজন করিয়ে পাপ হতে উর্ত্তীণ হবো। শ্রীকৃষ্ণের আদেশ মাত্রই প্রভাসতীর্থে গমনের জন্য প্রস্তুত হতে লাগলেন।  
ভারত বর্ষের সকল তীর্থের মধ্যে প্রভাসতীর্থ সর্বশ্রেষ্ঠ তীর্থ  হিসেবে পরিচিত।
Previous
Next Post »

বেদ সম্পর্কে সামান্য ধারণা

শ্রীমদ্ভগবতগীতার সম্পূর্ণ শ্লোকের অর্থ

বিবিধ


মহাভারতের প্রধান প্রধান চরিত্র