শঙ্খচূড় বধ

শিবরাত্রি উপলক্ষে গোপগণ বৃষবাহ্য শকটে চড়ে অম্বিকার বনে প্রবেশ করে সরস্বতী নদীর জলে অবগাহন করে ভক্তি ভরে মহাদেব ও দেবী অম্বিকার অর্চানা করছিলেন। দেবদেব মহাদেব যাতে তাদের উপর প্রীতি বর্ষণ করে জন্যে সংকল্প করে আদর করে ব্রাহ্মণদের গো, সুবর্ণ, বস্ত্র ও মধুর সাথে অন্ন প্রদান করছিলেন। নন্দ ও সুনন্দ গোপগণ জলমাত্র পান করে সরস্বতী নদীর তীরে রাত্রিবাস করার জন্য শয়ান করলেন। ক্লান্ত থাকায় শ্রীঘ্রই ঘুমিয়ে পড়লেন। সে অম্বিকা বনে এক মহাসর্প বাস করত। রাত্রি নির্জন থাকায় নন্দকে শয়ান অবস্থায় দেখে ভোজনেচ্ছুক সে সর্প তাকে গ্রাস করতে লাগল। তখন নন্দ “কৃষ্ণ কৃষ্ণ” বলে চিৎকার কলে বলতে লাগল,“হে তাত! আমি শরাণাগত, আমাকে এ সর্পের মুখ থেকে উদ্ধার কর।” নন্দের চিৎকারে অন্যান্য গোপগণ জাগরিত হ? য়ে দেখতে পেল একটি মহাপর্স নন্দকে গ্রাস করছে। তখন তারা জ্বলন্ত কাঠ দ্ধারা সর্পকে আঘাত করতে লাগল। জ্বলন্ত কাঠ দ্ধারা অন্যান্য গোপগণ সর্পকে বার বার আঘাত করতে লাগল কিন্তু তবুর সর্পটি নন্দকে ছাড়ল না। ভক্তের আহ্বানে ভগবান স্বয়ং এসে সর্পকে পা দ্ধারা স্পর্শ করা মাত্রই সর্প অবয়ব পরিত্যাগ করে জন্ম-জন্মন্তরের মহাপাপ হতে মুক্তি লাভ করল এবং বিদ্যাধর রূপে আর্বিভূত হলো। তখন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাকে জিজ্ঞাসা করলে,“ আপনি কে? কিভাবে আপনি এ নিন্দিত গতি প্রাপ্ত হয়েছেন? সর্প বলল,“ হে ভগবান! আমি সুদর্শন নামে বিখ্যাত একজন বিদ্যাধর। একদিন বিমানযোগের চতুর্দিকে ভ্রমণ করছিলাম। রূপের আধার আমি বিরূপ আঙ্গিরসকে দেখে উপহাস করেছিলাম। সে উপহাসের কারণের মুনি আমাকে সর্পযোনিতে জন্ম হওয়ার শাপ দেন। তাই আমি সর্প হয়ে জন্মগ্রহণ করেছি।” পূর্বে মুনি-ঋষিরা কাউকে শাপ প্রদান করলে তার উদ্ধারের উপায়ও বলে দিতেন। তাই হয়তো ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পাদস্পর্শে তার সমস্ত পাপ দূরীভূত হয়েছে। তখন বিদ্যাধর শরীর প্রাপ্ত হয়ে বললেন,“ হে দু:খনাশন! জগৎপতে! হে সর্বলোকমহেশ্বর! হে কৃষ্ণ! আমি আপনা চরণকমল স্পর্শে ব্রহ্মদন্ড হতে মুক্ত হয়েছি। আমাকে আপনি স্বর্গে গমনের আজ্ঞা দিন।” এ কথা বলে সুদর্শন নামক বিদ্যাধর ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে প্রদক্ষিণ করে স্বর্গে গমন করলেন। নন্দও সে বিপদ হতে মুক্ত হলো।
Latest
Previous
Next Post »

বেদ সম্পর্কে সামান্য ধারণা

শ্রীমদ্ভগবতগীতার সম্পূর্ণ শ্লোকের অর্থ

বিবিধ


মহাভারতের প্রধান প্রধান চরিত্র