দু:শাসন

দু:শাসন : ধৃতরাষ্ট্রের ও গান্ধারীর দ্বিতীয় পুত্র। দুর্যোধনের প্রিয়পাত্র। দুর্যোধন দু:শানকে দিয়েই সব অধর্মের কাজ করিয়েছেন। দ্যুতক্রীড়ায় শকুনির ছলনায় যুধিষ্ঠির সর্বশান্ত হন। সবশেষে শকুনির তিরস্কারে দ্রৌপদীকে দ্যূতক্রীড়ায় পণ রেখে তাকেও হারান। অক্ষক্রীড়ার পণ অনুযায়ী নিজেরাও শকুনি কর্তৃক বিজিত হন। দুর্যোধনের আদেশে ভ্রাতা দু:শাসন দ্রৌপদীকে চুলের মুঠি ধরে টেনে হিঁচড়ে দ্যুত সভায় নিয়ে আসেন। মহাবীর কর্ণের ইঙ্গিতেই দু:শাসন দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ করতে উদ্যত হন। দ্রৌপদীর কাতর প্রার্থনায় বাসুদেব শ্রীকৃষ্ণ তার অন্তরঙ্গা শক্তির প্রভাবে শত শত কাপড় দিয়ে দ্রৌপদীকে আবৃত করে রাখেন। দু:শাসন হাজার চেষ্টা করেও দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ করতে পারেনি। দুর্যোধন দ্রৌপদীকে বাম উরু দেখিয়ে অপমান করেন। তখন ভীম তার উরু ভাঙ্গার এবং দু:শাসনের রক্ত পান করার প্রতিজ্ঞা করেন। এদিকে দ্রৌপদীও প্রতিজ্ঞা করেন যে পর্যন্ত না ভীম দু:শাসনের রক্তে তার কেশ বন্ধনে সাহায্য না করে ততদিন তিনিও কেশ বন্ধন করবেন না। ঘটনার পরম্পরা আঁচ করতে পেরে রাজা ধৃতরাষ্ট্র বিচলিত হয়ে পড়েন এবং দ্রৌপদী ও পঞ্জপান্ডবদের মুক্তির আদেশ দেন।

কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ দু:শাসন পান্ডবসেনা নিহত করলেও অভিমন্যু ও সহদেবের কাছে পরাজিত হন। যুদ্ধের ষোঢ়শ দিনে ভীম ও দু:শাসনের মধ্যে যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে ভীম দু:শাসন তীব্র গদাঘাতে ভূপাতি করেন এবং তার বুক বির্দীর্ণ করে প্রতিজ্ঞামতে রক্ত পান করেন। দ্রৌপদীও তার প্রতিজ্ঞা রাখেন।

মহাভারতে যুদ্ধে দু:শাসন একটি খল চরিত্র। ভ্রাতা দুর্যোধনের আদেশে দু:শাসন সকল অন্যায় কর্ম করেছেন। দু:শাসন ক্রুর, দূর্মতি ও দূরাত্মা। ধর্ম বিষয়ে প্রবৃত্তি ও অধর্ম বিষয়ে নিবৃত্তি হতে জানে না। ভাল মন্দ বিচার করার মনোবৃত্তি তার ছিল না। মন্দটাকেই ধর্ম মনে আঁকড়ের ধরেছেন। আর ন্যায়টাকে অন্যায় মনে করতেন। এরা তখনকার সময়ে যেমন দূরাত্মা আজকের সময়েও এরা দূরাত্মা। এরা যুগে যুগে থাকে, ভবিষ্যতেও থাকবে। এ সসাগড়া থেকে দু:শাসনের মত দূরাত্মাদের পতন ঘটলেই পৃথিবীতে শান্তি আসবে।
সূত্র : মহাভারত ও বিভিন্ন পৌরানিক গ্রন্থ

বেদ সম্পর্কে সামান্য ধারণা

শ্রীমদ্ভগবতগীতার সম্পূর্ণ শ্লোকের অর্থ

বিবিধ


মহাভারতের প্রধান প্রধান চরিত্র