অশ্বত্থামা

অশ্বত্থামা : দ্রোণাচার্যের পুত্র। তার মাতার নাম কৃপী। জন্মের পরই তিনি উচ্চৈ:শ্রবা অশ্বের ন্যায় হ্রেষা রব করেছিলেন বলে তিনি অশ্বত্থামা নামে অভিহিত হন। পিতা দ্রোণের কাছে অশ্বত্থামা অস্ত্রবিদ্যা শিক্ষা করেন। তিনি অনেক গুপ্ত অস্ত্রের প্রয়োগও তার পিতার নিকট হতে আয়ত্ত করেন। পিতার কাছ থেকে তিনি নারায়ণাস্ত্র ও ব্রহ্মশির অস্ত্রলাভ করেন। মহাভারতের যুদ্ধে পিতা দ্রোণাচার্যের পদাঙ্ক অনুসরণ করে কৌরবদের পক্ষাবলম্বন করেন। অশ্বত্থামা কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে নিজের শক্তি প্রদর্শন করে বহু পান্ডব সেনা বধ করেন এবং অনেক মহাবীরকে পরাজিত করে বধ করেন। ধৃষ্টদ্যুম্ন, সাত্যকি এবং অর্জুনের, নকুল এদের সহিত যুদ্ধ করেন। এদের সম্মুখেই অসংখ্য হস্তী, অশ্ব, সারথি ও অনেক সেনা সংহার করেন। দ্রোণাচার্য নিহতের পর ক্রুদ্ধ অশ্বত্থামা পান্ডবদের বিনাশ করার জন্য নারায়ণাস্ত্র প্রয়োগ করেন। কিন্তু কৃষ্ণের পরামর্শে পান্ডবপক্ষীয়রা রথ, অস্ত্রাদি ত্যাগ করে অস্ত্রের দিকে পিছন করে দাঁড়ালে অস্ত্র বিফল হয়। অষ্টাদশ দিনে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের অবসান হয়। দুর্যোধনের উরুভঙ্গের সংবাদ পেয়ে অশ্বত্থামা, কৃতবর্মা ও কৃপাচার্য তার সাথে দেখা করে পান্ডবসেনাদের সংহার করার অনুমতি দিলে তারা পান্ডব শিবিরের দিকে রওনা হন। গভীর রাতে তারা পান্ডব শিবিরে প্রবেশ করে ধৃষ্টদ্যুম্ন, উত্তমৌজা, যুধামন্যু, খিশন্ডী ও দ্রৌপদীর পঞ্চপুত্রকে বধ করেন।

পরদিবস প্রভাতে পান্ডব শিবিরে শোকের ছায়া নেমে এলো। দ্রৌপদী পুত্র শোকে বিলাপ করতে করতে ভীমকে বলতে লাগল অশ্বত্থামার মাথার মণি আনা পর্যন্ত সে প্রয়োগবেশন ত্যাগ করবে না। তখন ভীম অশ্বত্থমাকে হত্যা করার জন্য দ্রুত বেগে বের হয়ে যান। কৃষ্ণ ও অর্জুন তাকে অনুসরণ করলেন। গঙ্গা নদীর তীর এসে তারা অশ্বত্থামাকে ব্যাসদেব ও অন্যান্য ঋষির নিকট বসে থাকতে দেখে ভীম তাকে হত্যা করার জন্য ধনর্বান নিয়ে অগ্রসর হন। তাতে অশ্বত্থামা ভীত হন। পান্ডব তথা ভীমের হাত থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য ভয়ংকর ব্রহ্মশির অস্ত্র নিক্ষেপ করেন। অস্ত্র থেকে প্রচন্ডভাবে অগ্নি উদ্গিরন হতে লাগল। তখন কৃষ্ণ অর্জুনকে ব্রহ্মশির অস্ত্র ধ্বংসের জন্য দ্রোণাচার্য কর্তৃক প্রদত্ত ব্রহ্মাস্ত্র প্রয়োগ করার জন্য পরামর্শ দিলে অর্জুন ব্রহ্মাস্ত্র ছুড়লেন। উভয় অস্ত্রের তেজে পৃথিবী দাহ হবার উপক্রম হয়েছেন। তখন ব্যাসদেব ও নারদ দুই অস্ত্রের মাঝখানে দাঁড়িয়ে অশ্বত্থামা ও অর্জুনকে তাদের অস্ত্র সংবরণ করার জন্য নির্দেশ দিলেন অর্জুন তার ব্রহ্মাস্ত্র সংবরণ করেন কিন্তু অশ্বত্থমা তার অস্ত্র সংবরণ করতে জানতেন না। ফলে এ অস্ত্র উত্তরার গর্ভে আরোপিত হলে তার সন্তান পরীক্ষিতকে কৃষ্ণ রক্ষা করেন।

সূত্র : মহাভারত ও বিভিন্ন পৌরানিক গ্রন্থ।

বেদ সম্পর্কে সামান্য ধারণা

শ্রীমদ্ভগবতগীতার সম্পূর্ণ শ্লোকের অর্থ

বিবিধ


মহাভারতের প্রধান প্রধান চরিত্র