সনাতন ধর্মে বলীপ্রথা-৯

সনাতন ধর্মে বলিপ্রথা-৯
যজ্ঞে পশুবলি প্রথার অবসান হবে কি?
শাস্ত্র ঘেটে আমরা দেখলাম প্রায় পশুকেই ( জলচর, স্থলচর ও খেচর) যজ্ঞে যেমন বলিদান চলে আবার তেমনি ঐ সকল পশুই ক্রমে ক্রমে যজ্ঞের যুপকাষ্ট হতে পরিত্রাণ লাভ করেছে। কিন্ত বেচারা “ছাগ” গ্যারাকলে আটকা পড়ল কেন? ধরে নিলাম বাকী প্রাণিরা হিংস্র এবং এদের বাগে আনা মনুষ্যকুলের জন্য বিপদজনক। ছাগ নিরীহ প্রাণি এবং আমাদের সমাজে বসবাস করে। সহজ লভ্য। এ জন্যেই কি নিরীহ শান্ত স্বভাবের প্রাণিটিকেই বেছে নেওয়া হয়েছে? না, কারণ ভিন্ন। অন্যান্য প্রাণির মাংস ভদ্র সমাজের জন্য সুখকর নয়। ছাগ মাংস সুস্বাদু ও রসনা-তৃপ্তিকর। সহজে প্রাণিটিকে যুপকাষ্টে তুলে বলি দেয়া যায়। ইহাই কি মুল কারণ? অনেকে কচি পাঠার মাংস কব্জি ভিজিয়ে ভক্ষণ করার জন্য লালায়িত কিন্ত উনারা জানেন না শাস্ত্রে কচি পাঠা বলি না দেয়ার বিধি আছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো সনাতন ধর্মে সংস্কার করা যায়। যেমন সতীদাহ প্রথা এক সময় সনাতন ধর্মে জেকে বসেছিল। বেদে সতীদাহ প্রথার উল্লেখ থাকলেও মানুষের আইন দ্বারা বর্বর এ প্রথাটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। আজ সতীদাহ প্রথার কথা মনে হলে আমাদের শরীর শিহরিয়ে উঠে। তদ্রুপ ইচ্ছে করলে আমরা বলিপ্রথা রোধ করতে পারব এ কথা আমি বলি না। কারণ বলি প্রথার বিপক্ষ শক্তির চেয়ে পক্ষ শক্তি অনেক শক্তিশালী। অর্থাৎ একপক্ষ বলছে শাস্ত্রে পশুবলির বিধান আছে- আমরা মাংস খাব, অন্যপক্ষ বলছে শাস্ত্রে পশুবলি না দেয়ারও বিধান আছে-আমরা মাংস খাব না। সনাতন ধর্মের বিভিন্ন গ্রন্ত্রে এ বিষয়টি এমনভাবে জড়িয়ে রয়েছে যে তার থেকে বিচার বিশ্লেষণ করে একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার মত শাস্ত্রীয় সংস্কারক আমাদের দেশে তথা ভারতবর্ষে নেই। সুতরাং এ যুক্তি-তর্ক ততদিন পর্যন্ত চলবে যতদিন না আমরা নিজেরা নিজেদেরকে সাত্ত্বিক আহারাদিতে নিয়োজিত করতে পারব। প্রাসঙ্গিক একটি কথা বলি, পাকিস্তানের কারাকোরাম পর্বতমালার পাদদেশে হানজা নামক সম্প্রদায় বাস করে। মুসলামান হওয়া সত্ত্বেও এখানকার অধিবাসীদের মধ্যে যে ৯৯% ভেজিটেরিয়ান অর্থাৎ নিরামিষভোজী। তাদের গড় আয়ু ১৫০ বছর। বিজ্ঞানও তো তাই বলে। শরীর গঠনের জন্য মাছ-মাংস থেকে যে প্রোটিন আমার পাই তা অনায়াসে শাকসবজি থেকে আমরা পেতে পারি। আমরা যদি আমাদের চিন্তা-চেতনায় খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে পারি হয়তো এক সময় পরিবর্তন আসতে পারে।বর্তমান বিশ্বে একটিই শ্লোগান “Eat veg and long live". পৃথিবীতে এ পর্যন্ত মাংস ও শাকসব্জির উপর যত গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে তার পুরোটাই শাকসব্জির গুণগান করা হয়েছে। 
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ।কৃষ্ণ কৃষ্ণ।হরে হরে।হরে রাম হরে রাম। রাম রাম হরে হরে।

বেদ সম্পর্কে সামান্য ধারণা

শ্রীমদ্ভগবতগীতার সম্পূর্ণ শ্লোকের অর্থ

সনাতন ধর্মে কি পশুবলী’র বিধান আছে?

মহাভারতের প্রধান প্রধান চরিত্র